বৃষ্টি পড়ছিলো অসময়ে মুষলধারে
ক্যাটস অ্যান্ড ডগস বলো যাকে তোমরা
আগে এক দৌড়ে চলে যেতাম ছাদে কিংবা রাস্তায়
ভিজতে ভিজতে জ্বর এসে পরতো কোন কোন দিন
এখন আর ভিজি না, ইচ্ছে করেনা।
ইচ্ছে করেনা বোগেনভিলিয়ার রঙিন পাতা ছিড়তে
ইচ্ছে করেনা সূর্যাস্তের আগে মাঠে খরগোশের মতন দৌড়াতে
ইচ্ছে করেনা বন্ধুর কাধে হাত রেখে বেঞ্চিতে বসে থাকতে
আর ইচ্ছে করেনা বেলা বোসের সাথে লালনীল সংসার পাততে
ইচ্ছে করেনা নীলাঞ্জনার জন্য দাম দিয়ে যন্ত্রনা কিনতে
ইচ্ছেই করেনা হারানো শৈশবে ফিরে যেতে
ইচ্ছে করেনা বৈশাখী মেলা থেকে বাতাসা কিনতে
ইচ্ছে করেনা নৌকায় শুয়ে রাতের বেলা জ্যোৎস্না দেখতে
ইচ্ছে করেনা চুরি করে লুডো খেলায় জিততে Read More
Category: কষ্টের কবিতা
তুমি ডাকলে না
ফিরে আসতাম পাহাড়ের পাদদেশ থেকেই
অত বড় পাহাড়টায় চড়তে ভয় লাগছিলো
বার বার ফিরে তাকাতে ইচ্ছা করছিলো
খুব করে চাইছিলাম তুমি একবার ডাকো
বারণ করো পাহাড়টায় চড়তে
তুমি ডাকলে না …… Read More
বিসর্জনের দুঃখ
শহরে সেদিন ছিলো আনন্দের জোয়ার
সারি সারি ট্রাক দাঁড়ানো ছিল সব অলিতে গলিতে
মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীরা আজকে কোন আবর্জনা সংগ্রহ করবে না
আজকে তারা সবার দুঃখ সংগ্রহ করবে
সবার দুঃখ বোঝাই ট্রাকগুলো চলে যাবে বিকালের আগেই
আজকের পর শহরে কারোও কোন পুরনো দুঃখ থাকবেনা
ঠিক এমনটাই ওয়াদা করেছিলো সরকার শেষ নির্বাচনে
আজ সরকার সে নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করতে চলেছে
ট্রাকগুলো দুঃখ নিয়ে অনেক দূরে নদীতে ফেলে দিয়ে আসবে
অবশেষে একটা গতি হবে কষ্ট গুলোর
বুকের ভিতর তীব্র যন্ত্রনায় আর পচতে হবে না।
আস্তে আস্তে সবার দুঃখগুলো দিয়ে বোঝাই করা হলো ট্রাকগুলো
সব ট্রাক চলে যাবার পরেই নিস্তব্ধ হয়ে পরলো পুরো শহর
দুঃখগুলো ছাড়া জীবন কেমন হবে কেউ কখনোই ভাবেনি
জীবনের এতো বড় অংশ জুড়ে ছিল কষ্টেরা জানতোই না কেউ।
একটু পরেই সূর্যাস্ত
বিষণ্ণ শেষ বিকালের আলোয় দুখই তো অক্সিজেন
তাই নদীতে বিসর্জনের আগেই থামতে হয় ট্রাকগুলোকে
ফিরিয়ে দিতে হয়েছিলো সবার কষ্ট
সব শেষে নদীর তীরে পরে থাকে অসংখ্য শূন্য ট্রাক
শহরবাসীরা পরম যত্নে আগলে নেয় দুঃখ গুলোকে
সূর্যটাও অস্ত যায় কি করুন বিষণ্ণতায়।
দুঃখী মানুষ
আমি একজন দুঃখী মানুষের সাথে কথা বলতে চাই
ক্রমাগত হেরে যাওয়ার কষ্টে পুড়তে থাকা
মুখে সর্বদা একটা মলিন হাসি লেপটে থাকে
কান্না অনায়সে গিলে যে বলতে পারে ভালোই আছি
তার কথাগুলো আমি শুনতে চাই
যদিও দুঃখগুলো তার একান্তই ব্যাক্তিগত Read More
নদী
ইচ্ছে ছিলো নদী হবো
সাগর থেকে সব চেয়ে দূরের নদীটা
সাগরে যেতে হাজার মাইল পাড়ি দেয়
কখনো পাহাড়ের ভিতর দিয়ে বয়ে যায়
ঝিরি ঝিরি শব্দে
কখনো বা তীব্র স্রোত নিয়ে ভাঙে
গ্রামের পর গ্রাম
ঘরহারা মানুষের কান্নার লোনা জল নিয়ে
ছুটে যায় সমুদ্রের পানে
তারপর পৌছায় মোহনায়
এতটা পথ পাড়ি দেয়ার পরেও
সমুদ্র তাকে গ্রহণ করে না , ফিরিয়ে দেয় …
স্বরচিত ধূলোবালি – ইমরুল
১৩/০৫/২০২১
তোমাকে মনে পড়েছিলো
একদিন মধ্যরাতে তোমাকে মনে পড়েছিলো
ভরা গ্রীষ্মের দূপুর পেরানো সে রাত
খুব ঝড় আসি আসি করছিলো
জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বসে ছিলাম
কয়েকটা বৃষ্টির ফোটা ধরবো বলে
বৃষ্টি আসেনি বৃথা ছিলো আমার অপেক্ষা
ওই তখনই একটু মনে পড়েছিলো তোমায়
তারপর ঠিকই ভুলে গিয়েছিলাম…
তারপর হয়তো কয়েক যুগ পেরিয়ে গিয়েছিলো
কিংবা কয়েক শতাব্দী পর
আবার এক কাক ডাকা ভোরে মনে পড়লো তোমায়
ভোরে ওঠা হয় না অনেক দিন
সেদিন কেন যেন উঠে গিয়েছিলাম
চায়ের মগের বদলে দু আঙ্গুলে একটা সিগারেট গুঁজে
চোখটা বন্ধ করতেই তোমাকে মনে পড়লো
সিগারেটটা শেষ হাওয়ার আগেই ভুলে গিয়েছিলাম
সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম …
(অসমাপ্ত)
আমার শহরে
আমার শহরে শুধু হেরে যাবার গল্প শুনি
বেকার ছেলেটার মন খারাপ করে পার্কে বসে থাকা
কিংবা প্রেমে ব্যার্থ কোন মধ্যবিত্ত যুবক
যার ভালোবাসার মানুষটির বিয়ে হয়ে যায়
বিলেত প্রবাসী কোন পাত্রের সাথে
বুকে পাথর চেপে সস্তা সিগারেটে টান
সেই কেরানি টাও আমার শহরে থাকে
মেয়ে বিয়ে দিতে গিয়ে লোনের ভারে পিষ্ট
তেতো কান্না চেপে নিয়ে বাসে চড়ে বসে
কিন্তু তোমার শহরে তো রোজই পার্টি চলে
কখনো কখনো সখ করে মাটিতে নেমে আসো তুমি
স্ট্রিট ফুড খাবার বাহানায়
অথবা বই মেলায় একটা কবিতার বই হাতে
তোমার বন্ধু ক্রমাগত তোমার ছবি তুলতে থাকে
সস্তা স্ট্রিট ফুড খাওয়া কিংবা কবিতার বই পড়ার চেয়ে
ছবি তোলাতেই তোমার আগ্রহ বেশি Read More
বসন্ত
সব শীতের শেষেই কি বসন্ত আসে?
কিছু গাছ হয়েতো ভরা বসন্তেও
পাতা আর ফুল ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকবে
বসন্তের সব দিনেই কি কোকিল ডাকে?
ধূলোর শহরে নাকে রুমাল চেপে
অফিস করবে কোন ছাপোষা নিম্নমধ্যবিত্ত
বসন্ত তার অভিধানে নেই
তার অভিধান জুড়ে কেবল আপোষ আর আপোষ …
সব কয়েদিই কি মুক্তির আশায় দিন গোনে?
যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত কোন আসামি
মুক্তির দিনে জেলগেটের বাইরে
যার জন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকবেনা
মুক্তির আনন্দ তার জন্য না
একা থেকে আরও বেশি একা হয়ে
জেল থেকে কোথায় যাবে সে ? Read More
হ্যামলেট
হ্যামলেট কতবার মরেছিলো ?
বিশ্বব্যাপী থিয়েটার গুলো কত বার মেরেছে হ্যামলেটকে ?
মঞ্চে বার বার মরেছে হ্যামলেট
আবার উঠে দাঁড়িয়েছে নতুন কোন শোতে
দেখেছে পিতার হত্যাকারী চাচার সাথে সাথে মায়ের প্রণয়
বার বার দেখেছে মৃত বাবার প্রেতাত্মাকে
হারিয়েছে ওফেলিয়াকে
শুধু হোরেশিওরা বেচে থাকে
হ্যামলেট, রোমিও আর ইডিপাসেরা কি তবে জাতিশ্বর
বার বার মঞ্চে ফিরে আসে
মুখের আদল টা বদলে যায়
ভাষাটাও বদলে যায়
চরিত্রটা একই থাকে
পরিণতি টাও একই।
স্বপ্ন
মরে যাওয়া শেষ স্বপ্নটার লাশ পড়েছিলো
কোন এক রেলস্টেশনের অন্ধকার কোনে
স্টেশনের আলো ওখানে কখনো পৌঁছায় না
অদ্ভুত লাশটার চোখে কোন পাতা নেই
ঠিক যেন মরা মাছের চোখ
মাঝরাতের নিঝুম স্টেশন
কেউ নেই সেই মৃত স্বপ্নের চোখে একবার চোখ রাখবে
তাতে অবশ্য কিছু আসে যায় না স্বপ্নটার
সেতো মৃত, যখন জীবিত ছিল তখনই কেউ দেখেনি তাকে
আচ্ছা, স্বপ্নটা যার ছিল , সে এখন কই
কি নিয়ে বেচে আছে সে এখন
শেষ স্বপ্নটাও যে মরে গেলো তার
দাফনের পয়সাটাও হয়তো ছিলোনা তার কাছে Read More