লাস্ট ৬ মাসে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা যা দেখলাম তাতে বুঝলাম কেউ সখ করে বিদেশে ডাক্তার দেখাইতে যায় না। আব্বার ক্যান্সার ধরা পড়ার পড় তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। কারো সাথে কারো মতামতের কোন মিল নাই। কেউ বলে কেমো লাগবে ২ টা , কেউ বলে ৩টা আবার আরেকজন বলল ৮ টার কমে হবে না। তিন জন তিনটা ডিফারেন্ট টেস্ট দিছে। আরেকজন আবার তার পছন্দের জায়গা থেকে টেস্ট করাই নাই বলে যাচ্ছেতাই ব্যাবহার ও করলো। ক্যান্সার ধরা পড়ার ঠিক পুর্বে আব্বার পেটে ব্যাথার দরুন এক জন ডাক্তার তার সার্জারি করেন। তিনই আব্বার পৌষ্টিকনালিতে টিউমার দেখেন এবং বলেন এটা ক্যান্সার। biopsy না করে টিউমার অপারেশন সম্ভব না। তার কথা মতন biopsy করে আবার আব্বাকে সার্জারিতে নেয়া হয়। অবাক করা বিষয় হলও দ্বিতীয় অপারেশনের পরেও উনি টিউমর টা ফেলতে ব্যর্থ হন। যখন জিজ্ঞেস করলাম কেন আমার ৭০ বয়সের বাবাকে দ্বিতীয় বার সার্জারি করলেন যদি টিউমার ফেলতে না পারবেন উনি তখন তেমন কোন সন্তোষ জনক উত্তর দিতে পারলেন না। টিউমার টার পজিশন যদি ক্রিটিক্যাল হয় তাহলে সেটা উনি প্রথম বার সার্জারি করার সময়েই দেখেছেন। আরও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বললাম উনারাও একটু অবাক হলেন কেমো দেয়াড় আগেই আব্বাকে দ্বিতীয় বার সার্জারিতে নেয়ায়।
আমি কিছু মানসিক সমস্যার জন্য বাংলাদেশের প্রখ্যাত একজন সাইকোথেরাপিস্ট এর কাছে যাই। উনার নাম বলবোনা বাট টিভিতে মাঝে মাঝেই উনাকে দেখা যায়। উনার দেয়া ওষুধে ভালই কাজ হচ্ছিলো। যদিও উনি কখনওই আমাকে ৩ মিনিটের বেশি সময় দিয়েছেন বলে মনে পড়ে না। একদিন মোবাইল ভাইবার গুঁতাইতে গুঁতাইতে আমাকে একটা ওষুধ বন্ধ করে দেন। বললেন অটা আমার আর খাওয়ার দরকার নেই। বন্ধ করার ১ দিন পড় থেকে আমার জান যায় অবস্থা। ধুপ ধাপ মাথা ঘুরায় যেখানে সেখানে পড়ে যাচ্ছিলাম। তাও মনে করলাম ঠিক হয়ে যাবে ভেবে অপেক্ষা করি। কিন্তু ঠিক না হউয়ায় ৫ দিন পড় উনার কাছে যাই। উনি অবাক হয়ে আমাকে ঝাড়ি মেরে বললেন এই ওষুধ বন্ধ করছ কেন। এটা তো এভাবে বন্ধ করা যায় না ! মনে মনে বললাম মাগনা দেখাইতে আসি না , ভাইবার টা বন্ধ করে একটু ২ টা মিনিট সময় দিলে কি খুব বেশি অসুবিধা হয় ?
স্যার জাফার ইকবাল বলেছেন আগে জানলে উনি উনার অগ্রজ কে এদেশেই চিকিতসা করাতে বলতেন। ইয়েস, উনাদের কোন সমস্যা নেই। উনারা কোন হসপিটালে গেলে ওইখানে মেডিক্যাল বোর্ড বসে। কেউ উনাদের সাথে পছন্দের জায়গায় থেকে টেস্ট না করানর জন্য খারাপ ব্যাবহার করেনা। উনারা আর আমরা এক জিনিশ না। এই দেশে ঢাকা মেডিকেলের বারান্দায় ও এই বাল ছাল প্রাইভেট হসপিটাল গুলার চেয়ে ভাল চিকিতসা হয়। কিন্তু মধ্যবিত্তের সব দিকেই জ্বালা। সে ঢাকা মেডিকেলের বারান্দায় ও শুইতে পারে না। আবার সিঙ্গাপুরেও যাইতে পারে না। যারা গাল ভরে ভরে বলেন বাংলাদেশে ভালো চিকিতসা হয় আমার দুটো সহজ প্রশ্নের সন্তোষজঙ্ক উত্তর দেনঃ
১। বিশ্বের কোন দেশে (ভারতের কিছু জায়গা ছাড়া) কেউ হাগা মুতা টেস্ট করলেও সেইটার কমিশন ডাক্তারের পকেটে যায় ? ডাক্তার আর দালালের মধ্যে পার্থক্য টা কই তাইলে ?
২। বাংলাদেশে সিজার ডেলিভারির রেট এত অস্বাভাবিক হারে বেশি কেন ?