চ্যাট

চ্যাটিং

Spread the love

চ্যাটিং এর অভ্যাস কিংবা বদভ্যাস টা হয় ২০০৬/২০০৭ এর দিকে। ‘পানু’ টাইপ জিনিস পাতি দেখতে আর দশটা টিনেজারের মতন সাইবার ক্যাফেতে যাওয়া আসা ছিলো। ক্যাফের প্রায় সব পিসিতেই BDChat ইন্সটল করা থাকতো। নিক একটা নিয়েই ঢুকে যাওয়া। চ্যাট করতে করতে এক সময় খুব চমকপ্রদ একটা জিনিস আবিষ্কার করলাম। অনলাইনে একজন স্ট্রেঞ্জার এর সাথে যতটা প্রাণ খুলে কথা বলা যায় সম্ভবত নিজের সব চেয়ে কাছের বন্ধুর সাথেও বলা যায় না। BDChat কিংবা  Yahoo Chatroom গুলোতে সারা দিন এ পড়ে থাকতাম। খুব ভালো শ্রোতা হওয়ার জন্য কত মানুষের দুখ-কষ্টের কাহিনী শোনা লাগতো তার কোন ইয়াত্তা নেই। সব সময় যে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সাথেই কথা হত ব্যাপারটা এমন না। কিন্তু শুনতাম। বেশিরভাগ সময় খেয়াল করতাম অনলাইনে সুখী মানুষের উপস্থিতি খুব কম ( ২০০৭ – ২০১০ এর কথা বলছি)। বড় চাকুরীজীবী, গায়িকা, ডিজে, ও-লেভেল ফেল করা কিশোর এমনকি পতিতারও সুখ-দুখের কথা শুনেছি। ঘন্টার পর ঘন্টা চ্যাট করেছি। আবার মুহূর্তেই যে যার মতন গায়েবও হয়ে গিয়েছি। অনেকেই পরিচয় গোপন রেখে তাদের অনেক ভীষণভাবে ব্যক্তিগত ব্যাপার গুলো বলতো। কখনো কখনো বিরক্ত লাগতো আবার কখনও বা ভালোই লাগতো। এমনও অনেক মানুষ ছিলো যাদের সাথে বছরের পর বছর কথা বলে গেছি কিন্তু তাদের আসল নামটাও জানতাম না। ফেসবুকে থাকা এই জেনারেশন কোনদিন ওই সময়ের চ্যাটের অভিজ্ঞতা পাবেনা। Yahoo Chat রুমের পাকিস্তানি রুমে গিয়া বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজায় রুম থেকে গালি খাওয়ার পর যে আদিম আনন্দ প্রাপ্তি হইতো সেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব না। এখানে একটা বিষয় সব সময় ভাবাতো এত বিশাল সময় যে চ্যাট রুম গুলাতে অযথাই সময় নষ্ট করেছি স্ট্রেঞ্জারদের সাথে কথা বলে। কিন্তু পরে বুঝলাম আসলে যে পরিমান গল্প কিংবা জীবনের কথা শুনেছি  তাদের কাছে থেকে তাতে একটা বড় সাইজের  ছোট গল্পের বই অনায়সে লিখে ফেলা সম্ভব। লেখার হাতটা ভালো হলে হইতো লিখেই ফেলতাম। এখন আর চ্যাট করার জন্য কোন স্ট্রেঞ্জার পাইনা। সবাই পরিচিত। ফেসবুকে অ্যাড হয়ে যায়। মন-প্রাণ খুলে কথা বলার জন্য একজন স্ট্রেঞ্জারের চেয়ে বেটার কিছু নাই।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *