সবাই ব্যাস্ত পানি, বাতাস আর শব্দ দূষণ নিয়ে। এইদিকে আমার রাতের আকাশ কেড়ে নিয়ে গেছে আলো দূষণ। এখন রাতের আকাশ উপভোগ করা হয়না আগের মতন। শহরে তো নয়ই। শহরে থেকে মিল্কিওয়ে দেখবার আশা করাটা বোকামি। সম্ভব না জানি। কিন্তু একটু তারা ভরা আকাশ দেখতাম ছোট বেলায়। বিশেষত লোডশেডিং এর সময়। পাক্কা এক ঘণ্টার লোডশেডিং হত। এখন ও হয় কিন্তু জেনারেটরের শব্দ কেড়ে নেয় রাতের আকাশ। তারা দেখা হয় না। যেখানেই তাকানো যায় সেখানেই অতি মাত্রায় ঝিলিমিলি আলো। সবখানেই বিয়ে বাড়ির উৎসব। কিন্তু হায় আনন্দ নাই। সবই শো অফ। চোখ বন্ধ করে রাস্তায় হাটতে ইচ্ছা করে। চোখে লাগে আলো। ভালো লাগে না। মানুষ ভারসাম্যহীন হওয়ার আগে নাকি আলো সহ্য করতে পারে না। মনে হয় সত্যি না। অনেক দিন ধরেই আলো সহ্য হয়না। তাহলে এত দিনে উন্মাদ হওয়ার কথা। না হই নাই এখনও। হইলেও ভালো ছিল। এস্পার নয়তো ওস্পার। দুই দিনের জন্য যদি পুরো ঢাকাকে আধারে ডুবায় দেয়া যেত। হোক কিছু লস। সম্ভব না। কোনভাবেই সম্ভব না। সময় শেষ হয়ে আসতেছে। বাকি নাই বেশি আর। হিলসে যদি কোন জব করতে পারতাম। কিংবা ফরেস্টে। আজকাল ট্রেন্ড সবাইলে বড় স্বপ্ন দেখতে শিখায়। দুবাইয়ে পাচতারা হোটেলে পার্টি কিংবা লাস ভেগাসে ট্রিপ। কর্পোরেট জায়ান্ট কিংবা বিজনেস ম্যাগনেট। মোটিভেশনাল স্পিকাররা সারাক্ষণ ই তাদের ভাঙ্গা ক্যাসেটে বলে বেড়াচ্ছে স্বপ্নও বড় দেখতে। গরিব হয়ে জন্ম নেয়া আমার দোষ না হলেও গরিব অবস্থায় মারা যাওয়া নাকি আমার দোষ। আবার ছোট বেলায় পড়েছিলাম অর্থই নাকি সব অনর্থের মুল। কোনটা মানবেন ? আসলে ছোট ছোট মানুষের ছোট ছোট আশার খবর কেঁউ রাখেনা। সবাই ওই চুড়ায় উঠতে ব্যাস্ত। আর যারা এই কম্পিটিশনে যেতে অস্বীকার করে তারা সমাজের দৃষ্টিতে অলস, ভাদাইম্মা আর নির্বোধ হিসাবে পরিচিতি পায়। এসব দেখে নচিকেতা একদা বলেছিলেন ” এ সবই থাক তোমাদের, আমি বড় চাই না হতে, ধুলো মাখা পথই আমার, তুমি চড় জয়রথে। শত লাঞ্ছণা দিও, করো আমায় অসম্মান। তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান ! “