অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেকিং

Spread the love

অন্নপূর্ণা চূড়ার নাম শুনেছিলাম অনেক ছোট বেলাতেই। সেভাবে কখনো পাহাড়ে ট্রেকিং করা হয়নি। বলতে গেলে আমার পাহাড় নিয়ে অভিজ্ঞতা প্রায় শুন্য ছিলো। ইদে যখন নয়দিন বন্ধ পেলাম আর ফেসবুকে লো কস্ট ট্রাভেল বিডি গ্রুপে ১৩ দিনের অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকিং এর ইভেন্ট দেখলাম তখন আর নিজেকে বেধে রাখতে পারলাম না। তাৎক্ষনিক এয়ার টিকেট করে ফেললাম হিমালায়া এয়ারলাইন্সে। আমার মতন ভুল কেউ করবেন না। যতই এক্সসাইটেড থাকেন না কেনো একটু সময় নিয়ে এয়ার টিকেট করবেন। প্রফেশনাল ট্রেকিং যারা করে থাকেন তারা অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকিং কে ইন্টারমিডিয়েট লেভেল এর বলে থাকেন। মানে এটা খুব বেশি কঠিন ও না আবার খুব বেশি সহজ ও না। যদি আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে বলবো Back off!!! অনেক বেশি মনের জোর দরকার হবে আপনার এই যাত্রায়।

অন্নপূর্ণা সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ প্রায় ২৬,৫০০ ফুট উচ্চতার অন্নপূর্ণা ১ পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর পর্বত। আর উচ্চতার দিক থেকে পৃথিবীর দশম। এখানে সামিট করতে গিয়ে মৃত্যুর হার প্রায় ৩৪%। ২য় অবস্থানে আছে k2, মৃত্যুর হার ২৯%। আর এভারেস্টে তা ৬.৫%। ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো অন্নপূর্ণা ১ জয়ের পর ২০১২ সাল পর্যন্ত ১৯১ জন অভিযাত্রী এই পর্বতের শিখরে উঠার চেষ্টা করেন। তার মধ্যে ৬১ জনই মারা যান। আর এই ভয়াবহ পর্বতকে ঘিরেই মানুষের তুমুল আগ্রহে গড়ে উঠেছে বিখ্যাত অন্নপুর্ণা সার্কিট ট্রেকিং, অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেকিং।

অন্নপূর্ণা তে যাওয়ার আগে চেকলিস্ট টা বানিয়ে ফেলা খুবি গুরুত্ত্বপূর্ণ।

ট্রেকিং এ ক্যারি করার উপযুক্ত একটি ব্যাগ। এই ধরনের ব্যাগ গুলো একটু দামি হয়ে থাকে। পিছনে Torso অ্যাডজাস্ট্যাবেল অ্যালুমিনিয়াম সাপোর্ট থাকলে খুবিই ভালো। Nature Hike, Kailas – The King ইত্যাদি বেশ ভালো ব্র্যান্ড। বাজেট কম থাকলে ফেইসবুকের বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার এর জিনিস ক্রয় বিক্রয় হয় এমন গ্রুপে নজর রাখতে পারেন। কম দামে ভালো জিনিস পেয়ে যাবেন কপাল ভালো থাকলে।

একটা গরম পানির ফ্লাস্ক (স্লিম), রেইন কোট (অনেক মোটা, উইন্ড ব্রেকারের কাজ করেছিলো), একটা ভালো শীতের কাপড়/জ্যাকেট, রাতে নিচে পরার জন্য থার্মাল, শুকনা খাবার যেমন ক্যান্ডি স্টিক, খেজুর , ট্রেকিং করার মতন ভালো জুতা যা কাদায়/বরফে স্লিপ কাটবে না, ট্রেকিং স্টিক , মোজা আর আন্ডারওয়্যার অনেক গুলো নিয়েছিলাম। প্রতিদিন ফেলে দিতাম। সাথে অনেক প্যাকেট সিগারেট ও ছিলো।

 

ইদের দুইদিন আগে এয়ার টিকেট করা ছিলো। যাদের সাথে ট্রেকিং এ যাবো তাদের কাউকেই চিনিনা। টোটাল সাত জনের মধ্যে পাঁচজনের ফ্লাইট ছিলো সকালে আর আমাদের দুইজনের ছিলো বিকালে। কাঠমুন্ডু ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে নেমে ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যাই। উল্লেখ্য ঢাকা থেকে ভিসার জন্য প্রি-অ্যাপ্রুভাল ফর্ম-ফিলাপ করে আসায় সময় অনেক কম লাগে আমাদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিতে। সেদিন রাতে পোখারা যাওয়ার বাস না পাওয়ায় একদিন থামেলে থেকে যাই। রাতের ডিনারে ইচ্ছা মতন খাই মমো যার ফলে পেট খারাপ হয় আর অনেক বমি হয়। সো নতুন কোথাও গিয়ে প্রথম দিনই কোপায় না খাওয়াই বেটার।

পরদিন সকালে পোখারা যাওয়ার কোন বাস পাইনি। ট্যুরিস্টদের অনেক প্রেসার ছিলো। পরে কালানকি নামক এক যায়গায় গিয়ে মাইক্রোবাসে করে পোখারা রওনা দেই আমরা দুইজন। প্রায় আট ঘন্টা লেগে যায়। দুপুর ৩ টায় নেপাল ট্যুরিসমের লেকসাইড অফিস থেকে অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প যাওয়ার পারমিশন নেই। টোটাল ১৬০০ রুপি খরচ হয়। সাথে ৬/৭ কপি নিজের ছবি আর পাসপোর্টের ফটোকপি সব সময় রাখা উচিত। পারমিশন নিতে, সিম কিনতে কাজে লাগে। পারমিশন নেয়ার সময় অনেক ধরনের তথ্য দেয়ার দরকার পরে। যেমন হেলথ ইনস্যুরেন্স নাম্বার, ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ডিটেইলস ইত্যাদি। আমি সব কিছুতেই ফলস তথ্য দিয়ে ফিলাপ করি। কাজটা ঠিক হয়নি তবুও আর কোন উপায় দেখছিলাম না।

 

এখন একটু রুট ম্যাপ টা দেখলাম। এর আগে সত্যি দেখা হয় নাই রুট প্ল্যান। দেখে কিছুটা অস্বস্তি অনুভূত হয়। একটু একটু মনে হতে থাকে ধ্যাত কেনো যে আসতে গেলাম!!

পোখারা থেকে হাড়িচক এ এসে গাণ্ডরুক যাওয়ার জন্য একটা জিপ ভাড়া নেই। রাস্তা টা অদ্ভুত সুন্দর।

ড্রাইভারের সাথে কথা বলতে বলতে সন্ধ্যা হয়ে আসে।  এক চায়ের দোকানে ঢুকি চা খেতে। আসার পরই উপলব্ধি করলাম এখানকার মানুষগুলো ব্যবহার খুব বেশি ফ্রেন্ডলি। ট্যুরিসম এদের প্রধান আয়ের রাস্তা হওয়ায় ট্যুরিস্টদের সাথে খুবই ভালো ব্যাবহার করে থাকে।  সন্ধ্যার দিক আবার গান্ডরুকের রাস্তায় কিছু ঝর্ণা দেখলাম। ছোট ছোট ঝর্ণা গুলো সহজেই পার হয়ে যাচ্ছিলো আমাদের জীপটি। অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছিলো না। আমাদের দলের বাকি সদস্যরা উঠেছিলো Meshroom Guest House এ। জীপ ড্রাইভারের কাছে থেকে জানলাম এই রাস্তায় ও নাকি মাঝে মাঝে একটা মহিলা ভৌতিক মুর্তি দেখা যায়। যাকে স্থানীয়রা kichkanya (Nepali: किच्कन्या) / Kichkandi (Nepali: किच्कन्डी) হিসেবে জানে। কোথাও গেলে সেখানকার লোকাল ভূত সম্পর্কে খোজ খবর নেয়া আমার পুরানো অভ্যাস। মেশরুম গেস্ট হাউজ থেকে একটু দূরে আমাদের নামিয়ে দেয় ড্রাইভার। গেস্ট হাউজ যেতে যেতে বুঝলাম ব্যাগপ্যাক টার ওয়েট অর্ধেক হলে ভালো হতো। অনেক কিছু সাথে আনা উচিত হয় নাই। রাতের অন্ধকারে শুধু উপরে উঠছি আর উঠছি, কাঁধ যেন ছিড়ে যাচ্ছে। গেস্ট হাইজে গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। নতুন জায়গায় ঘুম আসে দেরীতে। সকালে উঠেই  ব্রেকফাস্ট করতে চলে গেলাম। সেখানে এক পাকিস্তানি সুন্দরীর দেখা পেলাম। ম্যাডাম একাই ট্রেকিং এ যাবেন! সাথে শুধুমাত্র একজন গাইড। নিজেকে বড় একটা বলদ মনে হচ্ছিলো।

এখান থেকে আমরা চমরং (Chommrong)  এর উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করি। তখনো বুঝতে পারিনি কি ভয়ংকর একটা দিন হতে যাচ্ছে আমার জন্য। পিঠে প্রায় ১৮ কেজির ব্যাগ। উপরে উঠছি আস্তে আস্তে আর হাপাচ্ছি। কোনও ভাবেই এগুতে পারছি না। টিমের বাকি মেম্বারদের ও কষ্ট হচ্ছিলো কিন্তু সবাই আমাকে রেখে এগিয়ে যায়। হাটা শুরু করার কিছুক্ষন পরেই ট্রেকিং স্টিক ভেঙ্গে যায়। এই স্টিক গুলা ঢাকা থেকে কিনে নিয়ে যাওয়া ভালো। নেপালে দাম বেশি আর জিনিস খুব একটা ভালো না।

চমরং থেকে আমরা সিনুয়ার ( Sinuwa) দিকে ট্রেকিং শুরু করলাম। এই যাত্রায় খুব সুন্দর একটা ঝুলন্ত ব্রীজ চোখে পড়লো।

ঝুলন্ত ব্রীজ পার হয়ে ক্রমাগত উপরে উঠে যেতে হচ্ছিলো আপার সিনুয়ার দিকে। এখানে অমানুষিক কষ্ট হচ্ছিলো। এর আগে কখনো পাহাড়ে উঠা হয়নি। রাস্তা যেনো শেষই হচ্ছিলো না। তবে চারপাশে প্রকৃতির  অপূর্ব রুপ সব কষ্ট দূর করে দিচ্ছিলো।

আপার সিনুয়া তে পৌছাতে পৌছাতে লাঞ্চের সময় হয়ে যায়। হিল টপ লজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে (Hill Top Lodge and Restaurant) ভয়ে ভয়ে ফ্রাইড রাইস অর্ডার দিলাম এখানে। খুব বেশি এক্সপেকটেশন ছিলো না কিন্তু রাইস টা ভালোই ছিলো। এদের মেনুতে লিখা ছিলো “come as guests, leave as friends.

বুঝতে পারছিলাম যত সামনে যাবো খাবারের স্বাদ আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। যাই হোক, খাওয়া শেষে একটু রেস্ট নিয়েই আবার হাটা শুরু করলাম। এবারের যাত্রা ব্যাম্বু এর উদ্দেশ্যে। মেঘের মাঝখানে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার যে অনুভূতি সেটা সত্যই ভাষায় প্রকাশ করার মতন না।

হিমালয়ের রূপ ক্রমাগত বিমোহিত হয়ে ভুলেই যাচ্ছিলাম পিঠের ১৭ কেজি বস্তার কথা। ব্যাম্বুতে পৌছে পানি আর স্যুপ খেয়ে রওনা দিলাম ডোভান এর দিকে। এবারের রাস্তা টা ঘন জঙ্গল। প্রচন্ড প্ররিশ্রমে দূর্বল হয়ে আমার হাটার গতি অনেক কমে যায়। আর সেই সাথে আমি দলছুট হয়ে পরি। এইদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছিলো। এবার সত্যি সত্যি ভয় লাগা শুরু হলো। এই ঘন জঙ্গলে কোন প্রানী চোখে পরলো না। ঠিক রাস্তায় যাচ্ছি কিনা তাও বুঝতে পারছি না।

এবারো রাস্তায় চোখে পড়লো ছোট বড় বেশ কিছু ঝর্ণা। অবশেষে পৌছাই ডোভানে। এখানে ডোভান গেস্ট হাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে রাতে থাকার জন্য উঠি। এখানের স্টাফদের ব্যাবহার খুবই ভালো ছিলো। সব কিছুই এখন রূপি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ওয়াই-ফাই পাসয়ার্ডের জন্য ৩০০ রুপি দিতে হলো, গোসলের জন্য ২০০ রুপি আর মোবাইল ডিভাইস চার্জ করার জন্য দিতে হলো ২৫০ রুপি। রাতে ডিনারে নুডুলস অর্ডার করলাম। এখানে সব কিছুই ভেজ। চিকেন আর বিফ খুব মিস করছিলাম। উল্লেখ্য এখান থেকে অন্নপূর্ণার চূড়াটা খুব সুন্দর দেখা যাচ্ছিলো।

খাওয়া শেষে ঘুমানোর সময় স্বভাবসুলভ ভাবে মোবাইল হাতে নিয়ে যখন নেট পেলাম না কিছুটা মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে ঘুমালাম। সকালে উঠে ব্রেকফাস্ট করেই রওনা দিলাম হিমালয়া (Himalaya) এর উদ্দেশ্যে। এটা আসলে একটা গেস্ট হাউজ এবং রেস্টুরেন্ট। এখানে ছবি তুলার জন্য খুব সুন্দর কিছু স্পট পাওয়া যাবে।

এখানে লাঞ্চ করে দেউরিলির দিকে যাত্রা শুরু করলাম। দেউরিলি ছিলো ২.১ কিলোমিটার দূরে কিন্তু এতটুকু রাস্তাই যেন শরীরের সব টুকু শক্তি শুষে নিচ্ছিলো। কিছুতেই আগানো যাচ্ছিলো না। উপরেও উঠতে হচ্ছিলো। আস্তে আস্তে বুঝতে পারছিলাম অক্সিজেন লেভেল কমে আসছে উচ্চতার জন্য। তারপরেও চলছিলাম। পথের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যই চোখ লেগে থাকার মতন।

দেউরিলি তে সেদিনের মতন আশ্রয় নেই। প্রচন্ড ঠান্ডা আর বৃষ্টিতে একবারে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। পরদিন কিভাবে যাবো আর মেঘের জন্য কতটুকু ভিউ দেখতে পাবো সেই চিন্তাও ভাবাচ্ছিলো খুব। রাতে ডিনার খুব একটা ভালো ছিলো না। কোনমতে কিছু নুডুলস গিলে ঘুমিয়ে পরলাম সেদিনের মতন।

পরদিন সকালে যাত্রা শুরু MBC (Machhapuchchhre Base Camp)  এর উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের সব চেয়ে আদিম রূপ এখন দেখতে লাগলাম। অন্নপূর্ণা ট্রেক করে ফিরে আসছে তাদের জিগ্যেস করে জানতে পারলাম সামনে কয়েক জায়গায় বরফ পাবো। এবার খুবই উত্তেজনা অনুভব করা শুরু করলাম।

 

Machhapuchchhre যাকে আমরা মাছের পুছের মতন পাহাড়ের চূড়া বলতে পারি। এই চূড়ায় এখনো পর্যন্ত কোন মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি। এই পাহাড়ের চূড়া  হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে খুবই পবিত্র। এই জন্য নেপাল সরকার কখনো এই চূড়ায় উঠার অনুমতি দেয় না। মেঘ থাকায় Machhapuchchhre ভাল মতন দেখতে পারলাম না। এখানে অল্টিচুড সিকনেস বাড়তেছিলো সবারি। রসুনের সূপ (গার্লিক স্যূপ) খেলে নাকি সিকনেস কমে যায়। তাই সবাই পেট ভরে গার্লিক স্যুপ খেয়ে নিলাম। মন্দ লাগলো না স্বাদ।

Garlic Soup

স্যুপ খাওয়ার সময়েই টের পাচ্ছিলাম প্রচন্ড মাথা ব্যাথা। শরীর ও দূর্বল হয়ে আসছিলো। আল্টিচিউড সিকনেস এর মাত্রা টের পাচ্ছিলাম। কিন্তু অন্নপূর্নার দিকে আগাতে হবে। এখানে বুঝতে পারছিলাম মনের জোরটাই সব চেয়ে বড় জোর। শরীর তো ভেঙ্গে ভেঙ্গে আসছিলো। কিন্তু আবার যাত্রা শুরু করলাম মাছাপুছারে বেস ক্যাম্প থেকে। এখানে থেকেই বরফের রাজত্ত্ব শুরু হলো। সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির অত্যাচার। প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাপতে কাপতে এগুচ্ছিলাম। আমার সাথে ট্রেকিং স্টিক না থাকায় কয়েক বার

পিছলে পড়ে গেলাম। খুব সাবধানে এগুতে লাগলাম।  এবার মনে হচ্ছে রাস্তা শেষ হবেনা। শরীর যেন আরো খারাপ হতে থাকলো। তারপরেও গুটি গুটি পায়ে যাচ্ছিলাম। এত আস্তে আমি জীবনেও কোনদিন পথ চলি নাই। কখনো থেমে থেমে, কখনো কখনো একটু দ্রুত পা চালিয়ে অবশেষে পৌছাই অন্নপূর্না বেসক্যাম্পে।

এবার এক অন্য অনুভূতি। কোন ধরনের ট্রেকিং এর পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই এই জায়গায় এসে পৌছাবো এটা কখনো ভাবিনি। অন্নপূর্না বেস ক্যাম্পে কোনমতে চেকিন করেই রুমে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। টিমের কয়েকজন খুব বাজে ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সবাই আগে আগে ডিনার সেরে ঘুমাতে চলে যাই। অনেক মেঘ থাকায় বেস্ট ভিউ টা পাবোন সেটা বুঝে ফেলি। সকালে উঠি প্রচন্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে। কয়েক জন মিলে চলে যাই কিছু ছবি তুলতে।

 

ফেরার সময় আমরা চমরং এসে রেখে যাওয়া ব্যাগ নিয়ে আবার বেড়িয়ে পড়ি। এবার রুট একটু চেঞ্জ। ঝিনু দিয়ে সোজা নেমে গিয়ে ঝুলন্ত ব্রীজ পার হয়ে পোখারা এর গাড়ি ধরবো। এদিন আকাশ পরিষ্কার থাকায় দূর থেকে অন্নপূর্না খুব সুন্দর দেখা যাচ্ছিলো দূর থেকে আর আমাদের কষ্ট বাড়াচ্ছিলো কেননা আমরা যখন সেখানে ছিলাম এই দৃশ্য পাই নাই। যা ছিলো কপালে এটা ভেবেই চলে এলাম পোখারা তেই।

এতো কষ্ট হবে এইখানে জানলে কোন দিনই আসতাম না। আর না আসলে জীবনের সব চেয়ে বড় মিস টা করতাম।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *