সেইসব রাত্রির কথা মনে পড়ে
হিমাঙ্কের নিচে থাকতো তাপমাত্রা
প্রেমিক হতে গিয়ে খরচ করে ফেলা আমার সব উষ্ণতা
এই দরজা সেই দরজায় কড়া নেড়ে
শেষে কাচুমাচু হয়ে বরফের উপর শুয়ে
নর্দান লাইটস দেখতে দেখতে সব ভুলে থাকা
আমার সত্যি আর প্রেমিক হতে ইচ্ছা করে না … Read More
Category: অপরাধী শব্দদল
প্রেম, কবিতা ও যুদ্ধ
আমি তো চেয়েছিলাম প্রেমিক হতে
যে কিনা প্রেমিকার জন্য অনায়সে
বাজি রাখতে পারে তার পুরো দুনিয়া
নিঃস্ব হয়ে যেতে পারে পরের মুহূর্তেই
কিন্তু তোমরা বললে
বাস্তবতার সামনে নাকি প্রেম টিকে না ?
শুধু গল্প কবিতাতেই
এমন প্রেম খুঁজে পাওয়া যায়, বাস্তবে না
এমন প্রেমিকরা বাস করে বোকার স্বর্গে
তাই আর প্রেমিক হতে গিয়েও হলাম না
তারপর হতে চেয়েছিলাম কবি
কিন্তু তোমরা বললে আমার কল্পনায় জোর নেই
অন্তঃশব্দে মিল নেই , আর
কবিদের নাকি দুই বেলা ভাত জুটে না?
তাই কবিও হওয়া হলো না আমার
এর পর বেজে উঠলো যুদ্ধের দামামা
ভাবলাম তবে যোদ্ধা হই
যে হাতে কিনা প্রেমিকার জন্য ফুল থাকার কথা
নয়তো কথা ছিলো আটোগ্রাফ দেবার জন্য
নীল রঙের কলম থাকার
সেই হাতে তুলে নিয়েছিলাম কোলাসনিকভ
গুলিতে ঝাজড়া করে দিয়েছিলাম
শত শত্রুসেনার বুক
তারপর ফিরে এসেছিলাম তোমাদের মাঝে
ভেবেছিলাম আমাকে বরণ করে নিবে
ঠাই দেবে তোমাদের মাঝে
(অসমাপ্ত)
তুমি ডাকলে না
ফিরে আসতাম পাহাড়ের পাদদেশ থেকেই
অত বড় পাহাড়টায় চড়তে ভয় লাগছিলো
বার বার ফিরে তাকাতে ইচ্ছা করছিলো
খুব করে চাইছিলাম তুমি একবার ডাকো
বারণ করো পাহাড়টায় চড়তে
তুমি ডাকলে না …… Read More
দুঃখী মানুষ
আমি একজন দুঃখী মানুষের সাথে কথা বলতে চাই
ক্রমাগত হেরে যাওয়ার কষ্টে পুড়তে থাকা
মুখে সর্বদা একটা মলিন হাসি লেপটে থাকে
কান্না অনায়সে গিলে যে বলতে পারে ভালোই আছি
তার কথাগুলো আমি শুনতে চাই
যদিও দুঃখগুলো তার একান্তই ব্যাক্তিগত Read More
অপরাধী শব্দদল – প্রেমিক
ম্যাচুরিটি দিয়ে প্রেম হয় না। যা হয় তার নাম ব্যাবসা। প্রেমিক হলে হতে হয় ইম্যাচিউর। জীবনের সব চেয়ে প্রিয় জিনিস টা অনায়সে প্রেমিকার জন্য বাজি ধরতে পারতে হয়। রাতে ঘুম কে বিদায় জানাতে কোন ফেয়ারওয়েল ছাড়াই। নাবিক সিন্দাবাদ যেমন জীবনের মায়া উপেক্ষা করে বার বার ছুটে যেত সমুদ্রে ঠিক সেভাবেই ছুটে চলতে হয়। প্রবল বর্ষায় যেভাবে আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে ঠিক সেভাবে ঝড়তে জানতে হয়। জানতে হয় বার বার উপেক্ষিত হবার পরও কিভাবে নিজেকে বেধে রাখা যায়। চোখের জলে একটা সাগর না হলেও একটা নদীর জন্মই যদি না হয় তবে কিসের প্রেমিক তুমি ? পোস্ট না করা চিঠির একটা ছোট খাটো পাহাড়ই যদি না হলো তবে সেই ভালবাসা মূল্যহীন। বার বার মরে আবার বেচে ফিরতে হয়। খুব সহজ না নিজের হৃদয় কে ফিনিক্স পাখি বানানো। অন্তবিহীন কুঁড়ির মতন ফোটার আগেই ঝরে পড়া। কষ্ট গিলে নিয়ে মুখে হাসি তুলে রাখার অভিনয় টা শিখতে হয় খুব যত্ন করে। সাজানো জীবনের আহবান কে উপেক্ষা করে ভবঘুরের জীবন গ্রহণ করা সহজ নয়।
উবার
যদি আবার ফিরে আসার কোন সুযোগ থাকতো
জীবনানন্দের মতন বাংলায় ফিরে আসতে চাইতাম না
ধানসিঁড়ি নদী কিংবা কপোতাক্ষের জল তো ফুরিয়ে আসছে
আমি ফিরে আসতে আসতে হয়তো সেখানে
গজিয়ে যাবে ঘন কংক্রিটের জঙ্গল
লিভিংস্টোন পড়েছিলাম সেই ছোট বেলায়
এই জন্মে হয়তো আফ্রিকায় সুর্যাস্ত দেখা হবে না
আমাজন নদীর তীর ধরে খোজা হবে না
সেই সূর্য- কুমারীদের হারিয়ে যাওয়া দেশ
সোনার খোঁজে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে যাওয়া হবেনা জুলুরাজ্যে
কিংবা মরুভূমিতে হারিয়ে গিয়ে খোজা হবেনা
রানী বিলকিসের সেই রহস্যময় রাজ্য উবারে
শুনেছি মরুভূমির অশিরীরীরা পাহারা দেয় সেই রাজ্য
আমার কি প্রবেশের অনুমতি মিলবে সেথায় ?
চাদের পাহাড়ে যাওয়ার জন্য শঙ্কর আমাকে আজও ডাকে
সাড়া দিতে পারিনা সেই ডাকে
সাড়া দিয়তে হয় না সেসব ডাকে …
বিশ্বায়ন
বিশ্বায়নের যুগে স্বপ্নগুলোও ফ্রাঞ্চাইজি বেসড হতে হয়। চাওয়া গুলোও হতে হয় কর্পোরেট। যেমন ফ্লাইওভার গুলো আকাশ ভেদ করে ছুটে চলে, ঠিক তেমন। টাইয়ের শক্ত বাধন যখন গলায় চেপে মুখে ক্যালকুলেটেড হাসি নিয়ে দামী কাঁচের দেয়াল ঘেরা অফিসে সাক্সেসফুল মিটিং এ ব্যস্ততার মাঝে কতশত সুন্দর বিকেল হারায় তার কোন ইয়াত্তা নেই। স্টক মার্কেটে সুন্দর একটা সূর্যাস্তের কোন ইমপ্যাক্ট নাই। কর্পোরেট কালচারের সাথে কবিতা যায় না। তারপরেও গ্লোরিয়া জিন্সে দামী ক্যাপাচিনো হাতে হটাতই মনে পড়ে স্কুল গেটের মামার হাতের হজমি কিংবা দুই টাকার তেঁতুলের আচার। এক দৌড়ে পার হওয়া যেত তেপান্তরের মাঠ। ছাদের টাঙ্কির উপর শুয়ে তারা গুনার দিনগুলো কোথায় যে চলে গেছে খুব জানতে ইচ্ছে করে।
এই ঢাকা আজ একটা মেগা সিটি হবে
পণ করেছে সরকার
বড় বড় হয়ে যাবে রাস্তাঘাট
বড় সব হওয়া দরকার
শুধু ছোটখাটোদের জায়গা কমে যাবে
এটা বিশ্বায়নের বাজার
ছোট ছোট মানুষের ছোট ছোট আশা
কে রাখে খবর বলো তার ?
ডি- মোটিভেশনাল স্পিচ
যত সফল মানুষদের গল্প শুনি, তত অবাক হই। তাদের গল্প গুলো আমার কাছে কোন ফাইভ স্টার হোটেলে সাজায় রাখা বুফে ডিনারের মতন মনে হয়। সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পাঁচশো টাকা পকেটে নিয়ে ঢাকা এসে কে অনেক বড় ব্যাবসায়ী হোল আথবা কোথায় কোন ভ্যান গাড়িওয়ালার মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হইছে শুধু তাদের গল্পই বিক্রি হয়। যে রিকশাওয়ালার মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হয় না তাকে নিয়ে কোন স্টোরি হয় না। যে বাবা সারা দিন রিকশা কিংবা ভ্যান ঠেলে পাঁচ জনের সংসার চালায় সে কি সফল না? যে নারী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসিমুখে ঘরের কাজে জীবন পার করে কিংবা যে মা বাচ্চাটাকে স্কুল থেকে বাসায় এনে আবার তাকে নিয়ে কোচিং এ দৌড়ায় তারা কি সফল না? তাদের গল্প কোথাও নাই। ছাপোষা মধ্যবিত্ত যে বাবা পাই পাই করে টাকা জমায় তার মেয়েটার ভালো একটা বিয়ে দেয়ার জন্য তার গল্পটা শুধু তার কাছেই থাকে। যে প্রবাসী শ্রমিক পুরো যৌবন টাই পার করে দেয় মধ্যপ্রাচ্যে, এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন থেকে শুরু গার্ড যাকে তুই ছাড়া সম্বধোন করেনা তার গল্পটাও কোথাও পাওয়া যায় না। এই গল্পে কোন সাসপেন্স নাই, হ্যাপি এন্ডিং নাই কিন্তু অনেক হতাশা আছে। হতাশার গল্প বিকোয় না। বিকোয় শুধু মোটিভেশনাল স্পিচ।