শৈশব কিংবা কৈশোর

শৈশব কিংবা কৈশোর

আমার শৈশব কিংবা কৈশোর কোনটাই ফেয়ারি টেলস এর মতন সুন্দর ছিলো না। ঢাকার একটা বাজে এরিয়াতে থাকতাম। স্কুল শিক্ষক নিম্ন-মধ্যবিত্ত বাবা আমাকে নিয়ে খুবই ভয়ে থাকতেন। কখন না যেন বাজে ছেলে পেলেদের সাথে মিশে নষ্ট হয়ে যাই। ক্লাস টেন পর্যন্ত বাসা থেকে স্কুল আর কোচিং ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়া এক প্রকার মানাই ছিলো। বিকাল বেলা জানলা দিয়ে পাশের বাসার মাঠে অন্য ছেলেদের খেলতে দেখতাম বিষণ্ণ চোখে। মাঝে মাঝে যেতাম অনেক কান্নাকাটি করে কিন্তু দেখা যেত যাদের সাথে খেলতাম তাদের বকা শুনতে হতো আমার জন্য। সারা দিন বাসায় কিচ্ছু করার নাই। একটা সতেরো ইঞ্চি সাদাকালো টিভি তাও কোন ডিশের লাইন ছিল না। কয়েকটা বিদেশী সিরিজ আসতো। সেটাই সম্বল। কিন্তু আরেকটা জিনিস ছিলো পাশে সব সময়, বই। বই পড়তে যে খুব ভালো লাগতো বিষয়টা তেমন না কিন্তু ভালো সময় কাটতো। ক্লাস নাইনে ওঠার আগেই জুলভার্ন, শার্লক হোমস, রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ, শরৎ বাবুর গৃহদাহ, পথের দাবী , গৃহদাহ আর সাথে তো সেবার অনুবাদ/ তিন গোয়েন্দা/ ওয়েস্টার্ন থাকতোই। Read More

পেলিক্যান

খ্রিস্টধর্মের অন্যতম পবিত্র প্রতীক হচ্ছে পেলিক্যানের ছবি। এর কারণ : খাওয়ার জন্য কোনো খাবার যখন একেবারেই থাকে না, তখন পেলিকান তার ঠোঁট দিয়ে কেটে নিজের গোশত তার শাবকদের খাওয়ায়। আমরা যেসব রহমত লাভ করি, সেগুলো প্রায়ই বুঝতে অক্ষম থাকি। আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে পরিপুষ্ট রাখার জন্য তিনি যা করেন, আমরা অনেক সময়ই তা বুঝতে পারি না।

পেলিক্যান সম্পর্কে একটি গল্প বলা যাক।

কঠিন শীতের সময় একটি পেলিক্যান তার নিজের গোশত তার সন্তানদের খাওয়াচ্ছিল। পাখিটি যখন শেষ পর্যন্ত দুর্বলতায় মারা গেল, তখন বাসার একটি
শাবক অন্যটিকে বলল: ‘যাক অবশেষ!! আমি প্রতিদিন একই জিনিস খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম।’ (Maktub – Paulo Coelho)

359নিঝুমদ্বীপ

তোমাকে মনে পড়েছিলো

একদিন মধ্যরাতে তোমাকে মনে পড়েছিলো
ভরা গ্রীষ্মের দূপুর পেরানো সে রাত
খুব ঝড় আসি আসি করছিলো
জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বসে ছিলাম
কয়েকটা বৃষ্টির ফোটা ধরবো বলে
বৃষ্টি আসেনি বৃথা ছিলো আমার অপেক্ষা
ওই তখনই একটু মনে পড়েছিলো তোমায়
তারপর ঠিকই ভুলে গিয়েছিলাম…

তারপর হয়তো কয়েক যুগ পেরিয়ে গিয়েছিলো
কিংবা কয়েক শতাব্দী পর
আবার এক কাক ডাকা ভোরে মনে পড়লো তোমায়
ভোরে ওঠা হয় না অনেক দিন
সেদিন কেন যেন উঠে গিয়েছিলাম
চায়ের মগের বদলে দু আঙ্গুলে একটা সিগারেট গুঁজে
চোখটা বন্ধ করতেই তোমাকে মনে পড়লো
সিগারেটটা শেষ হাওয়ার আগেই ভুলে গিয়েছিলাম
সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম …

(অসমাপ্ত)

Srimangal-chittagong-patenga-69

চিলেকোঠার ড্রিম

ড্রিম গুলো কে কেন বিগ হতে হয় সব সময়? ছোট ছোট স্বপ্ন গুলো কেন এমন মূল্যহীন ? ছাদের চিলেকোঠায় তোমায় নিয়ে সংসার পাততে কোন আপত্তি ছিল না আমার। গরমে না হয় একটু কষ্ট হতই। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তো ভিজতে পারতাম। অভ্যেস নেই তোমার জানি আমি। বেশি ভিজতে দিতাম না। আমি হয়তো আরেকটু বেশি ভিজতাম। তোমাকে আমি আমার শহর টা চিনাতাম। বিশ্বাস করো প্রিমিও গাড়িতে করে শহর চেনা যায় না। হাতের মুঠোয় তোমার আঙ্গুল টা ধরে এ-গলি সে-গলি করে চষে ফেলতাম শহরটাকে। ছেঁড়া জিন্স আর ফ্লাট চপ্পলের মাঝে কমফর্ট জোন খুঁজে পাওয়া আমার যে কখনও কোট-স্যুটের জেলে যাওয়া হবে না এটা বুঝে গিয়েছিলে তুমি। হলিডে ট্রিপে মালদ্বীপ কিংবা সিঙ্গাপুরে আমার সাথে থাকলে যে যাওয়া হবে না। বুঝে গিয়েছিলাম আমার আর চিলেকোঠায় সংসার পাতা হবেনা তোমার সাথে। কখন যে একাকীত্ব ও আমার পাসে এসে দাঁড়িয়েছিলো টেরই পাইনি। নতুন করে আর শুরু করার ইচ্ছা হয়নি। স্বপ্ন গুলো মরে যায়নি আজো। হয়তো বুড়িয়ে গেছে। যখন কেউ বলে আবার নতুন করে সব শুরু করতে খুব অবাক লাগে। খুব।

ডিসেম্বারের বৃষ্টি

ডিসেম্বারের তীব্র শীতে
কেউ কি বৃষ্টি চায়
কান্না বুকে চেপে রেখে
শান্তি ক’জন পায় ?

ঝাপসা চোখ, ঝাপসা শহর
ঝাপসা যখন মন
ভাবি তোমার কাছেই থেকে গেছে
সব ভালো লাগার ক্ষণ

আবার ফিরি বাস্তবেতে
ভাঙলো বুঝি কাঁচ
আগুনের মতই গরম
বাস্তবতার আচ

ইচ্ছার মৃত্যু এবং দুঃখ বিলাস

ইচ্ছার মৃত্যু এবং দুঃখ বিলাস

মানুষের বাচতে কি লাগে ? বেসিক নিডস গুলাই কি সব ? কিংবা আরও কিছু লাক্সারি । যদি আপনার বেচে থাকার ইচ্ছাই মরে যায় ? কোটি টাকার ইনজেকশন দিয়েও ওই ইচ্ছাকে জাগানো যায় না। ঠেলা গাড়ির মতন দেহকে ঠেলে বেড়ানো সারাদিন। কখনো কখনো মরে যাওয়া আশা গুলোর সমাধিতে ঘুরে আসা। নিস্তব্ধতায় বসে সিগারেটের সাথে  কথোপকথন। নিকোটিন টাই যখন একটু শান্তি দেয়। আনমনে ফিরে যাওয়া শৈশবের দিন গুলোতে ফিরে যাওয়া। সেখানে ফিরে যেতে পারলে কি আবার জীবনটাকে আবার একটু নতুন করে গুছিয়ে নেয়া যেত ? চিন্তা করলেও কষ্টে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। মাঝে মাঝেই স্বপ্নে দেখি সব ঠিক ঠাক। স্বপ্নের মাঝেও ঠিকই টের পাই এটা স্বপ্ন। কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য কিছুটা আনন্দ অনুভূতি হয়। ঘুম থেকে উঠলেও একটা রেশ থাকে। আস্তে আস্তে আবার কঠিন বাস্তবে ফিরে আসা। মানুষ কেন দুঃখ বিলাসী  হয়? দুঃখ কি লাক্সারি প্রোডাক্ট ? দুঃখ নিয়ে বিলাস করার কি আছে ? হয়তো কিছু আছে। যার অন্য কিছু নাই সে দুঃখ নিয়েই বিলাস করবে। হয়তো এটাই স্বাভাবিক, হয়তোবানা। কিন্তু কি যায় আসে।

গুড়ো গুড়ো নীল
রং পেনসিল
জোছোনার জল
ঝুরো ঝুরো কাচ আগুন ছোঁয়া
ঢেকেছে আঁচল
ফুঠপাথ ভিড়
জাহাজের ডাক
ফিরে চলে যায়
কথা ছিল হেটে যাবো ছায়াপথ
আজো আছে গোপন ফেরারি মন
বেজে গেছে কখন সে টেলিফোন

download

ব্লাডি মিডল ক্লাস সেন্টিমেন্ট – সস্তা ড্রিমস

চিলেকোঠায় ছোট্ট একটা বাসা। কিনবা কোন চিপা গলিতে একটা পুরাতন ফ্ল্যাট। কিন্তু পচা গলির ভিতরেও বারান্দায় ঠিকই টুকরা টুকরা রোদের ছিটা আসে। বিকালে গলি দখল করে ক্রিকেট খেলে কত গুলা পোলাপান। ছোট্ট একটা চাকরি। নুন আনতে পান্তা ফুরায় টাইপ জীবন। তারপরেও মাসের প্রথম বেতনের টাকা দিয়ে একটু ভালো কোন রেস্টুরেন্টে একদিন ডিনার করা। পরের সাত দিন ভর্তা-ডাল খেয়ে সেই টাকা পুরণ করার চেষ্টা। একবারে কপিবুক মধ্যবিত্তের সংসার। কষ্ট আছে, অভাব আছে, অনিশ্চয়তা আছে। বছর শেষে অফিসে খুব ছোট্ট একটা ইনক্রিমেন্ট। দামি ওয়াইন না, সস্তা ভাজা পোড়া আর একটা কোল্ড ড্রিনক্সের বোতল দিয়ে সেলিব্রেশন। পার্কে বসে বাদাম চাবাতে চাবাতে বিকেল দেখা বন্ধের দিন গুলোয়। টাকা জমানো কোন সুন্দর ভবিষ্যতের আশায়। কিন্তু তার বর্তমান টাও কিন্তু কম সুন্দর না। হয়তো তারো কষ্ট হয় যখন সে বন্ধুর দামি প্রিমিও গাড়ি দেখে। কিন্তু ওপাস থেকে সান্ত্বনা আসে। ব্যাপার না, একদিন আমাদের ও হবে। সেই স্বপ্ন চোখে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়া। সকালে অফিস আছে যে। অফিস থেকে ফেরার সময় পথে মনটা আকুপাকু করে একটা বেনসন সিগারেটের জন্য। কিন্তু মনে পড়ে যায়, ওয়াদা করেছে যে তার কাছে, কখোনো ছোবেনা আর সেটা। আর কেনা হয়না সিগারেটটা, ভাবে ভালোই হোল টাকাটা বেচে যাবে। হটাত করেই বাড়িওয়ালার নোটিশ, ভাড়া বেড়েছে যে!! কপালে আরেকটা চিন্তার রেখা। আরেকটু টানাটানির মধ্যে পড়ে যাওয়া। কিন্তু অপর পাশ ঠিকই প্রেরনা আসে। সবই সম্ভব। শুধু ধৈয্য ধরতে হবে। চিন্তার রেখাটা চলে যায়, যখন সে শক্ত করে হাতটা ধরে। কন্টিনিউয়াস স্ট্রাগল, কিন্তু কোথায় যেন একটা অদ্ভুত প্রশান্তি।

এই রকম লাইফের স্বপ্ন কি কেউ দেখে? নাকি ছোট বেলা তেই সমারেশ মজুমদার আর শীর্ষেন্দু পড়ার সাইড ইফেক্ট? সবাইকেই কি এলন মাস্ক কিংবা বিল গেটস হবার স্বপ্ন দেখতে হয়? নইলে মাল্টিন্যাশনালে জব!!!

Being not ambitious is a serious crime.

unnamed

আত্মহত্যা – আমাদের করনীয়

আত্মহত্যা – আমাদের করনীয়

একটা পাব্লিক কখন আত্মহত্যা করতে চায়? যখন তার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় নাকি যখন সে মনে করে তার জন্য আর কোন দরজা খোলা নেই। প্রেমে ছেঁকা খেয়ে আত্মহত্যা করা কততুকু যুক্তিসংগত? আসলে আমাদের প্রপারলি জাজ করা উচিত। যদি কারও জন্য আত্মহত্যাই একটা ভালো সমাধান হয়ে থাকে তাহলে তাকে ছেড়ে দেয়াই কি মংগল নয়? এটা হারাম। মানি। আরও হাজারটা হারাম কাজ মানুষ করতেছে। হারামের দোহাই দেয়ার আগে মনে রাইখেন সুদ ও হারাম। পৃথিবীর নেতা দের এটা মনে রাখা উচিত এটাও একটা বেসিক হুম্যান রাইট। একজন মানুষ যদি সত্যি নিজেকে মেরে ফেলতে চায় তাহলে আমাদের উচিত তাকে বুঝানো। যদি তাতে কাজ না হয় তাহলে তাকে চলে যেতে দেয়াই উত্তম। কত কষ্ট করে মানুষ নিজেকে হত্যা করে!! গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পরে, বিষ খেয়ে কষ্ট পায়, ছাড থেকে লাফ দেয়… খুবই কষ্টদায়ক এবং বেদনার। অথচ আত্মহত্যাকে লিগালাইজ করা গেলে এই সুইসাইডাল মানুষ গুলাকে অনেক কম কষ্টে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়া যায়। সামান্য একটা ভালো ইঞ্জেকশন দিয়ে হাসপাতালের বেডেই কাজ সেরে দেয়া সম্ভভ। সারা জীবন পোড় খাওয়া এই মানুষ গুলা একটু ভালো ভাবে চলে যাওয়া কি ডিসারভ করেনা? সব সময় মুদ্রার একই পিঠ দেখা কি ঠিক? এখনি কি সময় আসেনি মানবাধিকার কর্মীদের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার? ভেবে দেখা উচিত। আত্মহত্যাকে লিগালাইজ করা এখন সময়ের দাবি। আমাকে পাগল মনে হতে পারে কিন্তু বছরখানেক আগের Hrittik Roshan এর গুজারিশ সিনেমা এই কন্সেপ্টে করা। পৃথিবিতে অনেক জায়গাতেই এখন এমন দাবি উঠেছে। ছাদ থেকে লাফ দিয়ে কিংবা গলায় দড়ি দিয়ে মৃত কারো লাশ দেখলে বুঝবেন যন্ত্রনাটা। অথচ তাদের ভালোভাবে বিদায় দেয়া যেত যদি আত্মহত্যা কে লিগালাইজ করা যেত!! আবেগ না দিয়ে র‍্যাশনালি আর লজিক্যালি চিন্তা করলে উত্তর পেয়ে যাবেন।

https://en.wikipedia.org/wiki/Right_to_die

https://en.wikipedia.org/wiki/Suicide_legislation

বাংলাদেশের বালের চিকিতসা ব্যাবস্থা

লাস্ট ৬ মাসে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা যা দেখলাম তাতে বুঝলাম কেউ সখ করে বিদেশে ডাক্তার দেখাইতে যায় না। আব্বার ক্যান্সার ধরা পড়ার পড় তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। কারো সাথে কারো মতামতের কোন মিল নাই। কেউ বলে কেমো লাগবে ২ টা , কেউ বলে ৩টা আবার আরেকজন বলল ৮ টার কমে হবে না। তিন জন তিনটা ডিফারেন্ট টেস্ট দিছে। আরেকজন আবার তার পছন্দের জায়গা থেকে টেস্ট করাই নাই বলে যাচ্ছেতাই ব্যাবহার ও করলো। ক্যান্সার ধরা পড়ার ঠিক পুর্বে আব্বার পেটে ব্যাথার দরুন এক জন ডাক্তার তার সার্জারি করেন। তিনই আব্বার পৌষ্টিকনালিতে টিউমার দেখেন এবং বলেন এটা ক্যান্সার। biopsy না করে টিউমার অপারেশন সম্ভব না। তার কথা মতন biopsy করে আবার আব্বাকে সার্জারিতে নেয়া হয়। অবাক করা বিষয় হলও দ্বিতীয় অপারেশনের পরেও উনি টিউমর টা ফেলতে ব্যর্থ হন। যখন জিজ্ঞেস করলাম কেন আমার ৭০ বয়সের বাবাকে দ্বিতীয় বার সার্জারি করলেন যদি টিউমার ফেলতে না পারবেন উনি তখন তেমন কোন সন্তোষ জনক উত্তর দিতে Read More