বঙ্গবাহাদুর

লোকজন বেশ উত্তেজিত হাতি নিয়া। এক পক্ষ বলতেছে চারপাশে লুঙ্গি পড়া জঙ্গিরা গিজগিজ করতাছে, সুন্দরবন ধ্বংস কইরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানানো হইতেছে তার মধ্যে হাতি নিয়া এত ফালাফালি করার কি আছে। আমার জনৈক বন্ধু হাতি নিয়া ফালাফালি করা সাংবাদিকদের হাতির পিছন দিয়ে ভরে দেয়ার পক্ষে। কিন্তু একজন অকৃত্রিম পশুপ্রেমি হিসাবে আমি হাতিটার বেপারে বেশ উৎসাহী। যেখানে ভারত থেকে গরু আসা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে সেইখানে বানের পানিতে ভাইসা পাহাড় সমান এক হাতি আইসা হাজির। এইটা কি কম কেরামতির কথা। হাতি হইলো গিয়া Spiritual Animal অর্থাৎ আধ্যাত্মিক প্রাণী। হাতিদের নাকি কবরস্থান থাকে। সেইখানে হাতিরা বছরে একবার ভিজিট ও করে। যাই হউক হাতিটার নাম দেয়া হইছে বঙ্গবাহাদুর। নাম দিয়েছে বনবিভাগ। হাতির নামকরনের পর আকিকা দেয়া হয় নাই এখনো। আকিকা দিলে খাইতে যাওয়ার প্লান আছে। ততদিন পর্যন্ত হাতিটা বহাল তবিয়তে থাকুক। keep it up বঙ্গবাহাদুর !!!

ঘুম

সবাই ক্লান্ত হয়ে ঘুমাতে যায় আর আমি ক্লান্ত হয়ে উঠে আসি বিছানা থেকে। এমন হলো কেন? সেই ছোট বেলায় রাতে ঘুমাতে যাবার সময় লাইটের সুইচ টা বন্ধ করে এক দৌড়ে চলে আসতাম বেডে। ভয় লাগত। কিন্তু একবার সাক্সেস্ফুলি বেডে পৌছাতে পারলে ঘুমিয়ে পরতে আর সময় লাগত না। চিন্তা করতাম বড় হলে আর ভয় থাকবেনা। তখন অনেক শান্তিতে ঘুমাব। চলে গেছে ভয়। কিন্তু সাথে করে নিয়ে গেছে শান্তিও। Insomnia, Depression, Anxiety এখন আমার নিত্যদিনের সঙ্গী। আগে ঘুমের বড়ি কাজ করতো। এখন তাও করেনা। নিজেকে অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছি। এখন টিকে আছে শুধু শরীর নামের খোলসটা। শুধুমাত্র খাওয়া ছাড়া Read More

বিরক্তিকর

চোখ বুজে বেশিক্ষণ থাকতে পারিনা। মা বকা দেয়। বলে আমি নাকি সারা দিন ঘুমাই। চোখ খুলতেই সামানে অস্বাভাবিক বিরক্তিকর পৃথিবীটা। যেখানে আমার জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাইরে যেতে ইচ্ছা করেনা। গাড়ির হর্ন শুনলে সব কিছু ভেঙে ফেলতে ইচ্ছা করে। নিস্তব্ধতা ভাল লাগে। অন্ধকার ভাল লাগে। আর ভাল লাগে সিগারেট। ভাল দিনগুলো চলে গেছে জীবন থেকে। শেষ কবে একটু ভাল বোধ করেছিলাম মনে করতেও কষ্ট হয়। পুরা মাথাটা ফরম্যাট দিয়ে Read More

অস্থির

প্রচণ্ড অস্থির লাগতেছে। আলো সহ্য হচ্ছেনা। তীব্র অন্ধকারে যেতে ইচ্ছা করতেছে। এখন আর কোন স্বপ্ন নেই। আশা নেই। বেঁচে থাকার জন্য বেঁচে থাকা। আমার প্রভু নিজেকে হত্যার অনুমতি দেয় না। অনুমতি দিলেও বোধ হয় সাহস হতো না। আমি জানি না মুক্তির উপায় কি। কোন কাজ করতে ইচ্ছা করেনা। শুধু স্থবির হয়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করে। আমি ভয়ঙ্কর রকমের অসহায়। একাকীত্ব আমাকে ক্রমশ গিলছে। সৈকতে শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে খুব। সমুদ্রের গর্জন কতদিন শোনা হয় না। একদিন ঠিকই সমুদ্রের পাড়ে একটা বাড়ি থাকবে আমার। চিন্তা ভাবনা গুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আমার জীবনে কোন কিছুই আর স্বাভাবিক নেই। ঠিক মতন মনে করতে পারিনা শেষ কবে একটু স্বাভাবিক ছিলাম। প্রচণ্ড কষ্ট হয়। কেন হয় জানি না। নিজের জীবনটারে একটা বিশাল বড় শুন্য মনে হয়।

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত ৩:
মধ্যবিত্তের স্বপ্ন দেখতে নেই। খুব কম স্বপ্নই পূরণ হয় মধ্যবিত্তের। কিন্তু এই সহজ সত্যটা এরা মানতে পারে না। চিরকাল স্বপ্ন দেখে যায়। যখন নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শেষ হয়ে যায় তখন শুরু হয় সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখা। ছোটবেলাতেই মধ্যবিত্তের ঘরের সন্তানদের কাধে চাপিয়ে দেয়া হয় পাহাড়সম স্বপ্নের বোঝা। কিন্তু যখন একটার পর একটা স্বপ্নগুলোর অপমৃত্যু ঘটতে থাকে তখন এরাও এক সময় অভ্যস্ত হয়ে যায়। নিজেকেই নিজে সান্ত্বনা দেয় হয় এমনটা , ব্যাপার না বলে। হয়তো নতুন কোন স্বপ্ন দেখা শুরু করে যদিও জানে সেইটাও ভেঙে যাবে একদিন। কিন্তু কিছুই করার থাকে না। এই সমাজে মধ্যবিত্তের মধ্যে প্রবল হতাশা বিরাজ করে। কিন্তু খুব কম সময়েই তারা তাদের হতাশা প্রকাশ করে থাকে। ব্যাপারনা, এমনটা হয়, কাল সব ঠিক হয়ে যাবে ইত্যাদি শব্দমালা তাদের নিত্য ভরসা। কখনোবা বালিশের আড়ালে মুখ চেপে একটু কেদে নেয়া। জীবনটা সব সময়েই অনেক বেশি ক্রুর আচরন করে মধ্যবিত্তের সাথে। কখনো স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট, কখনো না পাওয়ার কষ্ট, কখনো বা পেয়ে হারানোর কষ্ট। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় কষ্টগুলো থেকেই মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেঁচে থাকার প্রেরনা পায়, আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখে।

ধূমপান

ইচ্ছা করে আবার প্রেমে পরতে। ভার্সিটির ক্লাস বান দিয়ে একজনের হাত ধরে কোথাও বসে থাকতে। জীবনের সবচেয়ে ভাল সময়টা পার করে এসেছি। সামনে শুধুই কষ্ট আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। পিছনে যতবার তাকাই শুধু কষ্টে চোখটা ভিজে যায়। একটার পর একটা সিগারেট টেনে যাই। সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে লিখা দেখি “ধূমপান মৃত্যু ঘটায় ” আর হাসি। ধূমপান মৃত্যু ঘটায় নারে মনা। কষ্ট গুলা মৃত্যু ঘটায়, ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নেরা মৃত্যু ঘটায়, একাকীত্ব মৃত্যু ঘটায়, হতাশা মৃত্যু ঘটায় । সিগারেট উসিলা মাত্র। বছরখানেক আগেও আমি অনেক মোটা গ্লাসের চশমা পরতাম। চশমাটা এখন আর নেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায়। তখন চশমাটা খুলে ফেললে কিছুই দেখতাম না। সব কিছু ছিল ঝাপসা। কিন্তু আমার মনটা দেখত। অনেক রঙ বেরঙের স্বপ্ন দেখত। এখন আমার মনটা পালাতে চায় এই যানজট আর ধূলায় ভরা শহর থেকে। ইচ্ছে করে সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে পালিয়ে যাই। কোথায় যাব? জানি না। কিচ্ছু জানি না।
বি.দ্র. I don’t love you anymore

দূরে যাওয়ার গল্প

দূরে যাওয়ার গল্পঃ
 
ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প তো অনেক হয় কিন্তু কখনো দূরে যাওয়ার গল্প নিয়ে কোন ইভেন্ট কেন হয় না? কাছের মানুষটা যখন হটাত করেই দূরে চলে যায় তখন এক জনের পৃথিবীটায় রাত নেমে আসে। রাতের পর রাত কান্নায় ভেজা বালিশটা সাক্ষী থাকে, সাক্ষী থাকে সিগারেটের গোরা ভর্তি ছাইদানি। তার হেরে যাওয়া মনটা তখন আর বেঁচে থাকার সাহস পায় না। ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে সে ভাল থাকার অভিনয় করে যায় প্রতিনিয়ত। হাজারো মানুষের ভিড়ে যে সে অনেক বেশি একা। আশায় থাকে সে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু ঠিক হয় না। মরে যাওয়া স্বপ্নগুলো ঠিক যেন পাতাহীন শুখনো গাছের মতন। বুকের ভিতর তীব্র কষ্ট নিয়ে নিঃশ্বাস নেয়াটাও কঠিন মনে হয়। পুরনো একটা দিন ফিরে পাওয়ার জন্য সে নিজের জীবনের বাকি সবগুলো দিন দিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায়। দাতে দাত চেপে নিজের মৃত্যু কামনা করে সে। তার একটু ছোঁয়া পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায় সে। না এই সব ইমোশন গুলা টিভির পর্দায় দেখানো সম্ভব না। অনুভব করাও সম্ভব না ভুক্তভোগী ছাড়া……

বিশ্ব মধ্যবিত্ত দিবস

মধ্যবিত্তের সন্তানেরা সাধারনত পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে না। ছেঁকা খায়া দুই চার দিন হয়তো মদ গাজা খেয়ে পড়ে থাকে কিন্তু বিবেকহীন হওয়া এদের পক্ষে সম্ভব হয় না। পরিবারের অনেক চাওয়ার নিচে চাপা পড়ে থাকে বলেই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এরা ফিরে আসে। শত কষ্ট হলেও ফিরে আসতে হয়। জীবনে অনেক না পাওয়া থাকে আমাদের। তাই কখনো পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলাতে যাই না আমরা। মধ্যবিত্তের উন্নতির জন্য নেয়া হয় না কোন সরকারি পদক্ষেপ। এক দিক থেকে বলতে গেলে এরা রাস্তার মানুষ গুলার চেয়েও বেশি অসহায়। বস্তি কিংবা ফুটপাথের মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন NGO আর সংস্থা কাজ করে। কিন্তু মধ্যবিত্তদের জন্য কেউ নেই। আমার মনে হয় বছরে একটা দিন থাকা উচিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য। বিশ্ব মধ্যবিত্ত দিবস। এই দিনে একটা টিভি চ্যানেল একজন মধ্যবিত্তের দুঃখ গুলো শুনাক সবাইকে। গাধার মতন ঘানি টানার জন্য আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করে না। বাচার জন্য এখন দরকার নতুন কোন নিয়ামক। 
বাবা বলে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেই এক দিন টা কবে সেটা আর বলতে পারে না। একদিন হয়তো আমিও আমার সন্তান কে বলব একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে … সত্যি ঠিক হয়ে যাবে …

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হাওয়ার সুবাদে আমি এখন অনেক ভাল অভিনেতা। শুধু আমি না , সত্যিকারের মধ্যবিত্ত সমাজের সবাই খুব পাকা অভিনেতা। হাজারটা কষ্টের মাঝে এরা জানে কিভাবে হাসিমুখে বলতে হয় ভাল আছি। এদের থাকে অল্প টাকায় সব কিছু সামলানোর অসাধারণ প্রতিভা। ছোটবেলা থেকে শুরু হয় আমাদের না পাওয়ার গল্প। বন্ধুদের দেখেছি দামি খেলনা নিয়ে খেলতে আর আমি শুধু খেলনার স্বপ্নই দেখে যেতাম। আমার ভীষণ মধ্যবিত্ত বাবার সামর্থ্য ছিলোনা আমাকে একটা খেলনা রোবট কিংবা একটা ভাল রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি কিনে দেয়। বুকে কষ্ট থাকলেও মুখে কিন্তু হাসি ঠিকই ছিল। একটা কম্পিউটারের সখ ছিল কিন্তু বাবার সামর্থ্য ছিলোনা। শুধু বই পড়েই দিন কাটতো। মনে হত বড় হয়ে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাই চাইতাম তাড়াতাড়ি বড় হতে। বড় হাওয়ার পর বুঝলাম মধ্যবিত্তের অভিশাপ থেকে বের হওয়া সম্ভব না। কারাগারে থাকার মতন একটা বন্দি জীবন পার করতে হয় আমাদের। সব কিছুতেই চিন্তা করতে হয় লোকে কি বলবে। বছরের পর বছর বেকার থাকলেও একটা চা সিগারেটের দোকান খুলে দুই পয়সা আয় করতে পারে না এরা। প্রেম ভালবাসায় ও থাকে অনেক হিসাব নিকাশ। খুব কম মধ্যবিত্ত ছেলেই ভালবাসায় সফল হতে পারে। আমার সাবেক প্রেমিকার মা তো মুখের উপরেই বলে দিয়ে ছিল তোমার বাবার ঢাকায় একটা বাড়ি থাকলে আমার মেয়েকে আজকেই তোমার সাথে বিয়ে দিতাম! অসংখ্য স্বপ্ন ভেঙ্গেছে কিন্তু আমার মুখের সেই হাসি টা কিন্তু এখনো টিকে আছে Read More

প্রেম

আমি একটা মিক্সড জেনারেশনের মানুষ। ৯০ এর দিকে জীবনটা পুরাই অন্যরকম ছিলো। ক্যাসেট প্লেয়ার আর বিটিভি ছিল প্রধান মনোরঞ্জনের উৎস। বড় ভাইবোন দের প্রেমের কাহিনী গুলাও অনেক জোস ছিল। মোবাইল, ফেসবুক ইত্যাদি না থাকার জন্য তাদের প্রেম অনেক গভীর আর শক্ত ছিল । কথায় কথায় ব্রেকআপ আর হুকআপ হইত না। বাসায় মুরুব্বীদের নজর এড়িয়ে ল্যান্ডফোনে বেশিক্ষণ কথাও বলা যেত না।ল্যান্ডফোনে ফোন করাও ছিল আরেকটা Read More