ছায়াপথ ধরে হেটে যাওয়া যায়। সবাই পারে না। হাঁটা শিখতে হয়। আকাশ সবার জন্য না। রাতের আকাশ আরো না। ভেজা চোখে মাঝরাত্তিরে আকাশ দেখার সৌভাগ্য ও সবার হয় না। আলো সহ্য হয় না আজকাল। রোদের আলো আর ইলেকট্রিক আলো দুটোই অস্বাভাবিক রকমের যন্ত্রনা দেয়। কিন্তু তারার আলো কেন এত ভালো লাগে? তারার আলোতে নেশা হয়। চাদের আলোতেও নেশা হয়। হুইস্কি/ব্র্যান্ডি কিংবা ব্রাউন সুগারের চেয়ে কোন অংশে কম না সে নেশা। শুধু সেই আলোর সাথে নিজেকে সিঙ্ক্রোনাইজ করে নিতে হয়। সাথে সাথে সিঙ্ক্রোনাইজ করতে হয় রাতের অন্ধকারের সাথেও। তারপর শুরু হয় জীবনের চাওয়া পাওয়ার সব হিসাব। অনেক না পাওয়ার মাঝেও প্রাপ্তির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু পূরণ না হওয়া বিবর্ণ স্বপ্নগুলোকেই চাদের আলোতে তখন ট্রেজার মনে হয়। হারানো শৈশবের কথা ভেবে কখনো দু-এক ফোটা নোনা জল চলে আসে। স্কুল গেটের বাইরে ২ টাকার হজমির স্বাদ যে কেন্টাকির তিনশ টাকার জিঞ্জার বার্গারের চেয়ে ভালো ছিল। নিজের তেমন কোন দুঃখ ছিলো না। কখনো দুঃখ ধার করেছি ভিক্টর হুগোর জাঁ ভালজার কাছে থেকে , কখনো ডিকেন্সের অলিভার টুইস্টের কাছে থেকে। হারানো জন্য জুল্ভার্নের মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড তো ছিলোই। আজ কোন জায়গা নাই হারানোর। কোন মটরসাইকেল যখন তীব্র হর্ন বাজিয়ে পাশ দিয়ে চলে যায় তখন সত্যিই নিজেকে অন্য কোন নির্জন দ্বীপে নিজেকে টেলিপোর্ট করে ফেলতে ইচ্ছা করে। কখনো কখনো আলকেমিস্টদের গুপ্তবিদ্যার খোঁজে পুরো আরব চসে ফেলতে ইচ্ছা করে। কখনোবা হাজার বছরের পুরনো হারিয়ে যাওয়া মার্শাল আর্ট এর কোন কলা শিখতে চলে যেতে ইচ্ছে করে দুর্গম কোন অঞ্চলে। কিন্তু এই ফ্যান্টসি দিয়ে পেট চলে না। পেট চালাইতে হইলে গলায় চেইন দিয়ে বুর্জোয়াদের বানানো সিস্টেমে নাকে খত দিয়ে ঢুকতে হবে।
Category: Lame Thoughts

ধন্যবাদ, ঢাকা
ঢাকা আমার শহর। গালি কম দেয়া হয়নি এই শহর কে। ট্রাফিক জ্যামে ঘামতে ঘামতে কিংবা ছিনতাইকারীর হাতে টিউশানির টাকা জমায় কেনা মোবাইলটা খোয়ায় , সবার আগে গালিটা আমার শহর কেই দিয়েছি। সব কষ্টের কারণই যেন এই শহর টা। ভ্রমণ কাহিনী যতই পড়তাম কষ্ট ততই বেড়ে যেত। কেন যে আমার জন্মটা প্যারিস কিংবা ভিয়েনাতে হোল না ? ক্রমগত স্রষ্টা কে প্রশ্ন করতাম। পরে এক সময় বাস্তবতা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু কখনোই হিসাব করা হয়নি কি পেয়েছি এই শহরে ? অলিতে গলিতে অজস্র স্মৃতি। শ্যাওলা পড়া একটা গলিতে ভয়ে ভয়ে প্রথম সেই সিগারেটের টান। কিংবা প্রথমবার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যখন উদ্বাস্তুর মতন কোন বাসস্টপে বসে থাকতাম তখন হয়তো এই শহরই আমাকে বুকে টেনে নিয়েছিল। দুপুরের কড়া রোদে বাসের ভিরে ঘামতে ঘামতে অনেক গালাগালি করেছি আমার শহর কে। কিন্তু মাঝরাত্তিরে পান্থপথের সিগন্যালের দাড়িয়ে যখন একটা বেনসন হাতে যখন সেই অদ্ভুত নিরবতা উপভোগ করেছি তার জন্য কখনোই একটা ছোট ধন্যবাদ জানাইনি এই শহরকে। রাতের বেলা এই শহর কে চেনা যায় না। এই শহর যেন তার নেকাব খুলে শুধু প্রিয়জনকে তার আসল রুপ দেখায় তখন। তারো অনেক কষ্ট হয়তো। দীর্ঘশ্বাসের মতন সারা দিন চেপে রাখে সে। রাতের ঢাকাকে সবাই চিনে না। চিনবেই বা কিভাবে? দশঘন্টা অফিসের ডিউটির পর কবিতার জন্য কি আর সময় থাকে ? এক গ্লাস জ্যোৎস্না আর এক গ্লাস অন্ধকার হাতে আর কয়জন ই বা দাঁড়িয়ে থাকে জেমসের মতন! আমার যা কিছু পাওয়ার, সবই তো এই শহর থেকে পাওয়া। ভালবাসার স্মৃতি কিংবা দুঃখ, সব কিছুর স্বাক্ষি এই শহর । কখনও পালাতে পারিনি তাই এই শহর ছেড়ে। হয়তো কখনো পারবও না। দুঃখ থাকবেনা কোন।
কবিতার মতো রাস্তারা ছুটে রোজ
বাড়ি ঘর গুলো ছোটো গল্পের বই
এখানেই পাবে তোমার আমার খোজ
এই শহর ছেড়ে যাবার উপায় কই?

মধ্যবিত্তের প্রেম
মধ্যবিত্তের জীবনে প্রেম টা ভয়ঙ্কর রকমের একটা উভয় সংকট। কাউকে কখনো ভালো লেগে গেলে সেত আরেক যন্ত্রনা। না যাবে বলা, না যাবে সওয়া। বলতেও ভয়, ওপাশের উত্তরটা যদি না হয় বিপদ, হ্যা হলে আরো বড় বিপদ। এমনেই নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, তার মধ্যে আরেকজন যদি চলে আসে জীবনে? কিভাবে মিলিয়ে চলবে? ওভারথিংকিং যদি কোন আর্ট হয় তাইলে মধ্যবিত্তের চেয়ে আর কোন সমাজে এই আর্টের বেশি আর্টিস্ট নাই। বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি। হাজারটা শঙ্কায় সারাক্ষণ তটস্থ , তার উপরে যদি প্রেম নামের গজবটা পড়ে তাইলেই ষোলকলা পুর্ন। বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত ছেলের প্রেম তাই হয় কল্পনায়। সেইখানেই ঘুরে বেড়ায় সে তার ভালোবাসার সাথে। সেই মানুষটার হাসিটাই হয়তো তার মানিব্যাগের শেষ সম্বল। কে চায় প্রিয়োজনের সাথে নরকে থাকতে ? মধ্যবিত্তের বাসই যে বাস্তবতার নরকে। কল্পনাই একমাত্র এসকেপ রুট! আরো একটা এসকেপ রুট আছে, ঠিক ধরেছেন গলায় দড়ি কিংবা সায়ানাইড। কিন্তু ওটা বেশি এক্সট্রিম। সবাইতো আর এক্সট্রিমিস্ট না। এক্সট্রিমিস্ট হতে চাইলেও পারা যায় না। যন্ত্রনার পাহাড়ের চূড়ায় কিন্তু চোখের জলের ফোঁটা গুলোই তারাদের রিপ্লেসমেন্ট।
বরফগলা বাস্তবতায় , বৃষ্টি কেন চোখের পাতায় ?

রঙিন ছায়া
ছায়ারা কখনও রঙিন হয় না, রঙিন হলে সেটা ছায়া হয়না। হয়তো অন্য কোথাও ছায়ারা রঙিন। রহস্যে ঘেরা সোনার শহর এল-ডোরেডো কিংবা মরুভূমির ইরাম নগরীতে হয়তো ছায়ারা কালারফুল। তাই এই জায়গাগুলো কখনও খুজে পাওয়া যায় না। যারা এল-ডোরাডো খুজতে গিয়ে কখনো ফিরে আসেনি তারা কি আসলেই খুজে পেয়েছিলো সেই শহর? অ্যামাজনদের বিখ্যাত ফাউন্টেন অফ ইউথ এর লোভে পড়ে আর হয়তো ফিরে আসেনি তারা। স্যাটেলাইটের যুগে সহজেই বলে দেয়া যায়, পৃথিবীর কোথায় কি আছে , কি নেই। তাই এহন এখানে আর এক্সপ্লোরিং সম্ভব না। এক্সপ্লোরিং হবে স্পেসে, নক্ষত্রে নক্ষত্রে । ভর হিসাব হবে, নিউট্রন স্টারের আর ব্লাক হোলের। এল-ডোরাডো আর ইরাম নগরীর বর্ণনা খুজতে হবে উপকথায়। হয়তো আমাদের চোখের কোনায় লুকিয়ে আছে জায়গা গুলো। প্রাচীন কালে যারা এই সমস্ত জায়গার কথা বলে গেছে তাদের কি শুধুই গাজার হ্যলুসিনেশন ছিলো ? বাকি সত্যি দর্শন করেছিলো ? কে জানে। জানতে ইচ্ছা করে। স্পেসে হারাইতে চাই না। উচ্চতাকে যে বড় ভয় আমার। সেটা স্পেসশীপ থেকে হোক, কিংবা এরোপ্লেনে। হাসান রাজা বলছিলে ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপরে’ । দেখতে হলে চোখ বন্ধ করতে হবে। কত আজীব ব্যাপার। Read More

বাল ও কিছু কথা
প্রত্যেক ভাষাতেই কিছু এক্সট্রিম স্ট্রেস রিলিফ ওয়ার্ড থাকে। সেই শব্দগুলো তীব্র হতাশার কিনবা বিরক্তির মুখ দিয়ে স্বত:স্ফূর্ত ভাবে বের হয়ে আসে। খুব আশ্চর্যজনক ভাবে সেই শব্দ উচ্চারণ করা মাত্রই স্ট্রেস কিংবা বিরক্তির লেভেল আপনা-আপনি অনেকাংশে কমে যায়। ইংরেজিতে এমন একটি শব্দ আছে শিট (Shit)। আমরা অনেক সময়েই শিট বলে ফেলি । আমাদের বাংলা ভাষাতেও এই রকম কিছু শব্দ আছে। কিন্তু একটা এমন শব্দ আছে যেটাকে কিনা আমি বলবো একটা মিরাকল ওয়ার্ড। এই শব্দতার ক্ষমতা অবিশ্বাস্যজনক ভাবেই অনেক বেশি। প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম, স্লো ইন্টারনেট, হ্যাং হওয়া মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের উপর বিরক্ত হয়ে , একটা ওয়ার্ড ই আমাদের মুখ থেকে বের হয়ে আসে, হা ঠিক ধরেছেন – ‘বাল’। ঘটনা যতই দুর্ভাগ্যজনক কিংবা হতাশাজনক হোকনা কেন, সিমপ্লি এই ‘বাল’ উচ্চারণ করার সাথে সাথে দেখবেন ভালো অনুভব করছেন। অদ্ভুত এক অলৌকিক শক্তি যেন আছে এই শব্দের ভিতরে। আমার মনে হয় না পৃথিবীর আর কোন ভাষায় এমন কোন শব্দ রয়েছে। ইংরেজিতে যতই ‘Holy cow’, ‘Shit’ কিংবা ‘Fuck’ বলুন না কেন বাংলা ‘বাল’ এর সমকক্ষ কিছুই নাই। আমার মাঝে মাঝে অনেক অহংকার হয় যে আমাদের ভাষায় এমন একটি শক্তিশালী শব্দের উপস্থিতি রয়েছে। মানসিক অবস্থার উপর এই শব্দের প্রভাব অপরিসীম। তীব্র ট্রাফিক জ্যমের ঢাকা শহর অথবা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন ভয়ঙ্কর হতাশার কারন হয় তখন নিজের অজান্তেই মুখ চিরে বেড়িয়ে আসা ‘বাল’ শব্দটা আমাদের পরস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে বেশ সাহায্য করে। বালের দেশ, বালের জীবন , বালের জ্যাম, বালের ঢাকা এই সমস্ত শব্দ এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। তাই আমাদের দেশে জীবনের সংজ্ঞাটা একটু ভিন্ন। নচিকেতার ভষায় একটু পরিবর্তন করে বলতে হয় :
প্রতিদিন ঘরে ফিরে , অনেক হিসেব করে
এই বালের জীবন চাইনা তা বলাই জীবন

নিঃসঙ্গতা এবং নিস্তব্ধতার
নিঃসঙ্গতা আর নিস্তব্ধতার মাঝে যে একবার ডুব দেয় তাকে আর জনঅরণ্যে ফেরনো যায় না। তার শরীরটা হয়তো কাজের তাগিদে কিংবা সামাজিকতা রক্ষায় ঘুরে হাজারো মানুষের ভীড়ে কিন্তু মনটা পড়ে থাকে কোন একটা ছায়া ঘেরা কোণায়। কনক্রিটের জঙ্গলে সে খুজে বেড়ায় একটু নিস্তব্ধতা। শপিং মলের ঝলমলে আলো আর গাড়ির হর্ন অসহ্য যন্ত্রনার কারন হয়। কখনো কখনো নিজেকে সেই ডুবে যাওয়া জাহাজের সেই যাত্রী হিসেবে দেখতে ইচ্ছে করে যে কিনা ভাঙ্গা কাঠের টুকরো ধরে হাজির হয় জন মানব শুন্য কোন দ্বীপে। যেখানে কড়কড়ে ছাপানো টাকা মূল্যহীন। নিজের নিঃসঙ্গতা যেখানে মিলে বিশাল নীল আকাশের মাঝে। যেখানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন কম্পিটিশনে অংশ নিতে হয় না। জীবন মানে শুধু খাবারের সন্ধান আর সন্ধায় রাতের তারা গোণা। আর আশায় বসে থাকা কখন কোন উদ্ধারকারী জাহজ আসবে। জাহাজ আর আসে না। না আসুক, জীবনটা তো আর মন্দ না সেখানে। না, হবে না এমনটা আমার সাথে। বাস্তবে ফিরে আসি মুহূর্তেই। স্বপ্ন, লক্ষ্য আর ফ্যান্টাসির মধ্যে অনেক পার্থক্য। দিনশেষে কোন হিসাব আর মেলে না। মনে হয় কারো একটা টেলিফোন কলের জন্য অন্তহীন কাল ধরে অপেক্ষা করছি। কল আর আসে না। কিন্তু জানি একদিন আসবে। ভয় হয় যদি ঘুমিয়ে থাকি সেদিন ? ধরা হবে না আর সেই কলটা। কাশতে কাশতে সিগারেটে একটা টান। তখন কষ্ট গুলা আর যন্ত্রনা দেয় না। কষ্ট আর ছায়ার কোন রঙ হয় না। ছায়া যেমন কখনো ছেড়ে যায়না, কষ্টেরাও যায়না। চোখের কয়েকটি পলকে হারিয়ে ফেলা শৈশব নাকি প্রথম প্রেমের ব্যর্থতা কোনটা বেশি কষ্টের জানি না। সব কিছুই সমান যন্ত্রনা দেয়। তবে এখন মনে হয় যন্ত্রনাও কম উপভোগ্য বিষয় নয়। বেঁচে থাক যন্ত্রনারা , বেঁচে থাক কষ্টেরা । ওরাই প্রতিমুহূর্তে জানান দেয় বেচে থাকার।

আলাদিন, জিনি ও অন্ধকারের গল্প
আলাদিন কি কখনো জিনির কাছে এমন কিছু চেয়েছিলো যেটা জিনি তাকে দিতে পারেনি? জিনি কি সব দিতে পারতো? জিনি সব দিতে বাধ্য ছিলো তার মালিক কে। কোন আদেশ পালন করতে ব্যর্থ হলে জিনির কি মন খারাপ হত? উপকথায় শুধু আলাদিন আর রাজকুমারীর কথাই বার বার আসে। অথচ যে না থাকলে গল্পটাই লিখা হত না সেই জিনির কোন ব্যাকগ্রাউন্ড স্টোরিই নাই। কিভাবে জিনি ট্র্যাপড ছিলো একটা সামান্য প্রদীপে? নোবডি কেয়ারস আ্যবাউট জিনি। জিনির উপস্থিতি খুবিই গুরুত্ত্বপূর্ণ কিন্তু অংকের শেষে চিল করে আলাদিন আর রাজকুমারী। জিনির জায়গা হয় প্রদীপের অন্ধকার কুঠুরিতে। অথচ শুধুমাত্র জিনি কে নিয়েই হয়তো লিখা যেত হাজার পাতার কোন উপকথা। আসলে কোন গল্পের প্রধান চরিত্র হবার জন্য গ্ল্যামার টা খুব জরুরী। সেই গ্লামারটাই ছিলোনা তার। না, আমি জিনি না। জিনির মতন ক্ষমতা আমার নাই। কিন্তু কোন ফাকে যেন আলাদিন আর রাজকুমারীর রোমান্স ছাপিয়ে জিনির কষ্ট টাকেই চোখে পড়লো। আলাদিন কি কখনো জানতে চেয়েছিলো জিনি কেমন আছে ? কিংবা জিনির কি ইচ্ছা হয় ? এখনো হয়তো সেই প্রদীপের অন্ধকারে আটকে আছে জিনি। ওর চেয়ে বেশি আর কেইবা একাকীত্ব কে বুঝতে পেরেছিলো ? প্রদীপ টা হারিয়ে গেছে সমুদ্রের অতলে কিংবা পাহাড়ের নির্জন কোন গুহায় …………
বেঁচে আছি
মৃত স্বপ্নগুলোকে শ্মশানে দাহ করতে করতে বলি বেঁচে আছি
মরে যাওয়া আশার কফিনে পেরেক ঠুকতে ঠুকতে বলি বেঁচে আছি
এক কখনো না জেতা চির পরজিত সেনাপতির মতন জীবন যার
জিতবে না জেনেও যাকে চালিয়ে জেতে হয় যুদ্ধ
বৃষ্টির দু-ফোটা জলে আশায় উপরে তাকালেই সে দেখে আজস্র শকুন
উড়ে বেড়ায় তার মৃতপ্রায় শরীরের মাংশের আশায়
ঘন গহীন ভাঙ্গা কনক্রিটের জঙ্গলে তার শিবির
এই জীবনকে সে চায়নি, এই জীবনই তাকে বেছে নিয়েছে
নিঃসঙ্গ জঙ্গলে তার বন্দি জীবন
মুক্তির গান শুনে যায় দিন রাত কিন্তু দিন শেষে তাও মরিচিকা

পুরুষ
পুরুষ শব্দটাই অনেক মেয়ের কাছে নোংরা। কি চায় এই পুরুষেরা ? শুধু দেহ ? ভোগ করে ছেড়ে দিতে ? নাকি একসাথে অনেকগুলো নারীর সাথে সম্পর্ক করতে ? তারা মুদ্রার একটি পিঠই দেখেছেন শুধু। দোষ দিবোনা , জীবনের অনেক বাজে অভিজ্ঞতাই হয়তো তাদের এমন ধারনা দেয়। দৈহিক চাহিদার চেয়েও একজন পুরুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক চাহিদা। দিন শেষে সে একটা আশ্রয় চায়। কষ্ট গুলার কথা বলতে চায় কাউকে। যে শুনবে মন দিয়ে। তারপরে হাত ধরে বলবে Everything’s Gonna Be Alright.. You are doing your best. হাজারটা বিজনেস কলের মাঝেও একটা কল আসবে যখন মোবাইলের ওপাশ থেকে কেউ জিগ্যেস করবে দুপুরে খেয়েছে কিনা? হাতে সিগারেট দেখে কেড়ে নিয়ে বলবে আজকে কয়টা হোল? আর নয়। জীবনের সব গুলো অনিশ্চয়তা একটু সরিয়ে রেখে কারো কোলে মাথা রেখে একটু নিশ্চিন্ত হতে চায়। ইভ টিজিং এর শিকার নারীর সংখ্যার তুলনায় ইভ টিজিং এর প্রতিবাদ করে নিহত কিংবা আহত হওয়া পুরুষের সংখ্যা কিন্তু নেহাত কম নয়। স্যাক্রিফাইস কি শুধু মেয়েরাই করতে জানে? নারীরা মায়ের জাত সো স্যাক্রিফাইস বিষয়টা তাদের জেনেটিক। বাইরে নয়, নিজেদের মায়ের দিকে তাকালেই বুঝা যায় তাদের ত্যাগের সক্ষমতা সম্পর্কে। তার মানে কি পুরুষ জাতটা শুধু ভোগ বিলাসেই ব্যস্ত কিংবা খুব স্বার্থপর ? নিজেদের পিতার স্যাক্রিফাইস গুলার কম অংশই আমরা জানি। কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু প্রত্যেকটা জায়গায় নিরবে, পরিবারের অজান্তে তারা কত ধরনের আপোষ করে চলে। নিজেরাও সেটার হিসাব জানে না। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষনের শিকার অনেক নারী। কিন্তু বিয়ের প্রোলভনে ধর্ষনের শিকার পুরুষকে কে দেখে? ৫/৭ বছর প্রেম করে যখন মেয়েটা একটা আমেরিকা প্রবাসী পাত্রকে বিয়ে করে, আর ছেলেটা মাথা নুইয়ে সেটা মেনেও নেয়, বিশ্বাস করেন সেখানে ধর্ষিত হয় পুরুষ। কিন্তু তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সেটার বিচার করবে কে? না, কেউ না। এটা মেনে নিয়েই তাকে পথ চলতে হয়। একজন নারি তার ক্যারিয়ারে সফল হোক বা না হোক সেটা নিয়ে তাকে জীবনে খুব বেশি দুঃখিত না হলেও চলে, ইউরোপ আমেরিকা প্রবাসী কোন না কোন পাত্র তার জন্য অপেক্ষা করছে অথবা কোন বাড়িওলার সুপুত্র (!)। সফল ক্যারিয়ার গড়তে না পারলে কিনবা বাপ জানের অঢেল সম্পত্তি না থাকলে একজন পুরুষের জীবন যে কত খানি দুর্বিষহ হয় সেটা একমাত্র সেই জানে। ঘটনা যাই হোক গতকাল ছিল International Men’s Day !! সো জগতের

কতটা
ঠিক কত দূর গেলে আমি একজন মুসাফির হবো ? কতটা বছর জঙ্গলে একা কাটালে একজন মানুষ সন্ন্যাসী হয় ? এক মুহূর্ত ঠিক কতটা সময়? একটা মাঠ ঠিক কত বড় হলে সেটা তেপান্তরের মাঠ হবে ? মরুভূমিতে ঘোড়ায় চড়ে কতদূর গেলে আমি বেদুইন হব? কত পৃষ্ঠার কাব্য লিখলে সেটা মহাকাব্য ? ঠিক কতটা কালো হলে একজন নিগ্রো হয় কিংবা কতটা সাদা হলে বার্বি ডল ? কতটা বড় হলে একটা হৃদয় আকাশের মতন বড় হয়? কতদুর গেলে স্মৃতির কাছে থেকে পালানো যায় ? কতটা জানলে একজন সবজান্তা হয়? কত বড় যুদ্ধ হলে সেটা মহাযুদ্ধ হয় ? কত দিন কাঁদলে এক জোড়া চোখের জল শুকায় ? ঠিক কতখানি কষ্ট পেলে একটা হৃদয় পাথর হয় ? কতটা বোকা হলে একজন মানুষ গাধা হয় ?