জোনাকি

জোনাকি

পুনর্জন্ম হয়েছিলো জোনাকিটার
জাতিশ্মর ছিলো সে
ধীরে ধীরে মনে পরছিলো আগের জন্মের কথা
জ্বলতে নিভতে জ্বলতে নিভতে
সে তার চারপাশে আবিষ্কার করলো ইলেকট্রিক আলো
সেই আলোর দূষণে জোনাকিটার আলো মূল্যহীন Read More

বিষণ্ণতা

চারপাশে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা। এই বিষণ্ণতা সবাইকে ছোঁয় না। কিন্তু যাকে ছোঁয় তাকে আর সুখ কখনো ছুঁতে পারেনা। গাছের পরে যাওয়া পাতারা ঠিক কতটা বিষণ্ণ ? কে জানে। সূর্যাস্তের সময় যেই কমলা আলো ছড়িয়ে পরে তখন ভাবি এর চেয়ে বেশি বিষণ্ণ হতে পারে না। কিন্তু রাতের আকাশ দেখে আরও বিষণ্ণ হয়ে যাই আকাশ গঙ্গা দেখতে না পারার দুখে। ইলেকট্রিক আলো কেড়ে নিলো আমার আকাশগঙ্গা। ভাবি পাহাড়ে যাবো। একা একা দেখবো রাতের আকাশ। কিছুটা জমানো টাকা আর কিছুটা ধার করা টাকা নিয়ে চলে যাই পাহাড়ে। নাগরিক বিষণ্ণতা বিদায় নেয়। ভর করে পাহাড়ি বিষণ্ণতা। ভাবি কেন আমার জন্মটা পাহাড়ে হলো না? কেন আমাকে আবার সেই কংক্রিটের জঙ্গলে ফিরে যেতে হবে? বিষণ্ণ মনে আবার ফিরে যাই। বিষণ্ণতা আর দুঃখ কিন্তু এক না। বিষণ্ণতার জন্য কোণ কারনের দরকার হয়। দুখের জন্য কারণ লাগে। বলিউডের সর্বকালের সেরা সুন্দরী অভিনেত্রী মীনা কুমারী নাকি সারাক্ষণ ই বিষণ্ণ থাকতেন।

বৈশাখের শুভেচ্ছা

যে সব ভাই বোনেরা এই ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় হাজার বছরের সংস্কৃতি রক্ষায় মাঠে ড্রাগন আর ভাল্লুক নিয়ে নেমেছেন তাদের পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা। আমার মনে হয় আপনাদের অ্যাপ্রোচে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। যেমন হাজার বছরের বাঙ্গালি গল্পে শাকচুন্নির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে আপনারা বাঘ, ভাল্লুক ফিগারের সাথে একটা শাকচুন্নির ফিগার অ্যাড করে নিলে বিষয়টা জমে ক্ষীর হবে। ড্রাগন কিংবা ভাল্লুক টাইপ জিনিস পাতি আমদের বাঙ্গালি কালচারে কখনো নজরে পরে নাই। সেক্ষেত্রে আপনরা আমাদের আরও কিছু লোকাল ভূত অ্যাড করতে পারেন যেমন স্কন্ধকাটা/কন্ধকাটা, মামদো-ভূত, কানাভূলো, ডাইনি, ব্রহ্মদৈত্য / ব্রহ্মপিশাচ,  আলেয়া, মেছোভূত, গেছোভূত, পেত্নী ইত্যাদি। অবশ্য হিসাবে ভুল না হলে এই রোদে পুইড়া অনেকেই পেত্নী আর ডাইনী হইয়া গেছেন। যাই হোক শুভ নববর্ষ।

IMG_8756

দুঃখ

টাকা দিয়ে সুখ কেনা যায়। যারা বলেন “Money can’t buy happiness” তারা অবশ্যই ভুল বলেন। কিন্তু টাকা দিয়ে সব কেনা যায় না। টাকা দিয়ে দুঃখ কেনা যায় না। দুঃখ এতটা সস্তা না যে সামান্য টাকা দিয়ে কেনা যাবে।

যে দুঃখ মাইকেল মধুসূদন কে দিয়ে মেঘনাদ বধ কাব্য লিখায়, যে দুঃখ নজরুল কে দেয় খ্রিষ্টের সম্মান সেই দুঃখ কোথা থেকে তুমি কিনবে? যে দুঃখে মান্নাদে দুঃখী না হয়ে হন রাজার রাজা সেই দুঃখ কিছু কাগজ দিয়ে কেনা সম্ভব না ।

একা একা

ক্রমাগত প্রত্যাখ্যাত হয়ে যাওয়ার যে যন্ত্রনা সেটা  শুধু যে হয় সেই বুঝে। যন্ত্রনায় দাতে দাত চেপে চেষ্টা করে যেতে হয়। আমি তো চাইনি এমন জীবন। আমি চাইনি প্রত্যাখ্যাত হতে। একা বেঁচে থাকতে  শিখে গিয়েছিলাম। শিখে গিয়েছিলাম নিজেকে ভালবাসতে। তোমার স্মৃতি গুলোও আর কাদাতো না আমাকে। একা শপিং করতে যাই, একা একা রাস্তায় ঘুরে বেড়াই। প্রিয় সিনেমাটি একা একাই হলে গিয়ে দেখি। একাই চলে গিয়েছিলাম ভারতবর্ষে। একা একা ঘুরে এসেছি কোলকাতা থেকে চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ থেকে গোয়া, কার্নাটক থেকে দিল্লী। কখনোই একাকী মনে হয়নি নিজেকে। আমার সব সময়েই একটা অনুভূতি কাজ করতো আমাকে সারা জীবন একাই থাকতে হবে।  অবচেতন মনে মেনেও নিয়েছিলাম। তেমন কোন কষ্ট কাজ করত না আমার এটা নিয়ে। কিন্তু জীবনে বিয়ে করা নাকি অবশ্যক। পরিবারের চাপে পাত্রী দেখা শুরুর পর থেকেই রিজেকশন এর কষ্টটা পেতে থাকলাম। আমি না হ্যান্ডসাম না আমার অগাধ টাকা-পয়সা আছে। কোন দুঃখও ছিলো না এসব নিয়ে। ছন্নছাড়া ভবঘুরে একটা জীবন সবসময়েই আমাকে ডেকে ফিরে। কিন্তু আমি সাড়া দিতে পারিনা। খুব ইচ্ছা করে পরিযায়ী পাখীদের মতন হয়ে যেতে। এক একটা ঋতু একেক জায়গায় কাটাতে। সিগারেটটাই শুধু সঙ্গী হবে আমার আমি জানি। নিজেকে এখন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত কোন আসামির মতন মনে হয়। Read More

ছেঁড়া চিঠি

প্রিয় **** , এই প্রথম কোথাও তোমার আসল নাম লিখলাম। কেউ জানবে না কোনদিন এর কথা, চিন্তা করিও না। তুমিও নিজেও জানবা না। খুব ইচ্ছা আমার এই লিখাটা তুমি পড়ো। তোমাকে আমার এই লিখার লিংক পাঠাতে পারি। কিন্তু কখনো পাঠাবো না। তুমি আজ বিবাহিত। স্বামীর আদরে আমাকে তোমার মনে নেই খুব ভালো করেই জানি। আমার এই ছোট্ট লিখাটা যা হয়তো অজস্র অপরিচিত অনুভুতি ভরা লিখার মাঝে ঢাকা পরে যাবে। তা আজকে তোমায় কি বলা যায় ভাবছি। অভিমান দেখাবো নাকি অভিযোগ? কোনটাই না হয়তো। তোমার উপর কোন অভিমান ও নেই আর কোন অভিযোগ ও নেই আমার। কেন থাকবে? তোমার সাময়িক টিনেজ আকর্ষণের ভার আমাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে কখনো ভাবিনি। আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই বাক্য কখনোই পরিবর্তন হবে না। বাকি সব কিছু আজ পরিবর্তিত। স্মৃতিটুকুই আসলে সম্বল তাই যত্নে তুলে রাখা। তুমি চলে যাওয়ার পর জিন্দা লাশ হিসাবে বেচেছিলাম অনেক দিন। এতটা কষ্ট পাবো ভাবিনি। অনেক পরে বুঝেছিলাম চুম্বন গুলো না, কষ্টটাই ছিলো তোমার দেয়া সব চেয়ে পারফেক্ট উপহার।

আমাদের প্রমিস আর রাখা হলো না, আর কাটবে না একসাথে সেই যত্নে ভরা শীতকাল l কি সুন্দর ছিলো তাইনা প্রিয়? তোমার সেই আদরে মাখা কথা গুলো হারিয়ে গেলো, আর তুমি সেই এক অজানা দেশে, বহুদূরে l জানি আমি তোমার কিছু টা হলেও মায়ায় আটকা পড়েছি,, তুমি তো অনেক আগেই এই মায়া কাটিয়ে অনেক ভালো আছো , অন্য কোনো বন্ধনে l

বিশ্ব পাহাড় দিবস

বিশ্ব পাহাড় দিবস

পাহাড়ের সাথে সব চেয়ে ঘনিষ্ট সম্পর্ক  সম্ভবত আকাশের হয়। আকাশকে সব চেয়ে কাছে থেকে দেখে পাহাড়। একটু হিংসেই হয়। আকাশের কান্না বৃষ্টি হলে পাহাড়ের কান্না কি ঝর্না? জন ডেনভারের কাছে থেকে রকি মাউন্টেনের গল্প কিংবা অঞ্জন দত্তের দার্জিলিং এর গল্প শুনে পাহাড় দেখার অনেক আগে যে পাহড়ের প্রেমে পড়ে যাওয়া আমার পাহাড় নিয়ে কম ফ্যান্টাসি ছিলো না। মরুর বুকে রুক্ষ কোন পাহাড় অথবা বরফে আচ্ছাদিত এভারেস্ট, আবার চা-বাগান দিয়ে ঢাকা ছোট ছোট অসংখ্য টিলা। কল্পনায় ভাবি আর মাথায় বেজে ওঠে “কবে যাবো পাহাড়ে, আহারে “। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন কবিতায় পড়েছিলাম পাহাড়ের চেয়ে নাকি নদির দাম বেশি। তবু কবি সুনীল পাহাড়টাই কিনতে চেয়েছিলেন। উনি জিততে না, ঠকতে চান।  পাহাড় থেকে আকাশগঙ্গা দেখতে দেখে পুরো জীবনটাই পার করে দেয়া যায়। এক দিন ঠিকই পাহারে ঘুরতে ঘুরতে  চিন্তা করে বের করবো মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কটা  অবৈধ কিনা !উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত বার বার চলে যাবো পাহাড়ে। Read More

FB_IMG_1568451671522

একা একা

দুনিয়ার সব চেয়ে সুন্দর নেশা গুলোর মধ্যে একটা সম্ভবত একটা নেশা একা থাকতে চাওয়া। একা একা ঘুরা, একা একা কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া, একা শপিং করা আর নাইট শোতে একা একা একটা সিনেমা দেখা। রাতে বাড়ি ফিরে একা একা বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া। কানে হেডফোনে ডিলানের কোন একটা ট্র্যাক শুনতে শুনতে ফুটপাথে হাঁটা। হটাত করেই মনে হয় কেউ যদি একটা কল দিয়ে জিগ্যেস করতো লাঞ্চ টা করেছি কিনা। পরক্ষনেই ভুলে যাই। সিগারেট টানতে টানতে সামনে এগিয়ে যাই। একা থাকার সময়টা উপভোগ করাই শ্রেয়। আবার চিন্তা করি কখনো কি সিগারেটটা ছাড়তে পারবো? বাজে নেশা। কেউ যদি মুখ থেকে টান দিয়ে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলতো আজকে আর না। অনেক গুলো তো হলো। চিন্তাগুলো থেমে যায় তখনি। প্রশ্রয় দেই না। সব কিছুকে প্রশ্রয় দিতে হয় না। Read More

820নিঝুমদ্বীপ

নীরবতা

একটা বিশাল শান্ত সমুদ্র সৈকতের তীরে আমি বসে কোন কাউচে। একটাই মাত্র কাউচ। আর সৈকতটাকেও কোন সাধারণ মনে হচ্ছেনা। তেপান্তরের মাঠর সাথে কোথায় যেন মিল আছে সৈকতটার। ও, হা পেয়েছি কোন অন্ত নেই এই সৈকতের। ঢেউ গুনে যাচ্ছি বসে বসে। কিন্তু এই ঢেউয়ের কোন শেষ নেই, কোন শুরু নেই। হটাত নিজেকে অনুভব করলাম। না, আর তরুণ নেই আমি। পরিণত হয়েছি এক বৃদ্ধে। খুব বেশি বৃদ্ধ না কিন্তু বুড়ো বলার জন্য যথেষ্ট। চিরাচরিত অভ্যাসে পকেটে হাত চলে গেলো স্মার্টফোন টার জন্য। না ওটাও নেই। থাকলেও খুব বেশি লাভ হত বলে মনে হয়না। এতক্ষণে আমি বুঝে গেলাম আমি আর পৃথিবীতে নেই। এতটা শান্তই পৃথিবীর কোথাও থাকতে পারেনা। নিজেকে এখন সময়ের চেয়েও অনেক বেশি বয়স্ক মনে হচ্ছে। বুক ভরে নিশ্বাস নেয়ার পর এখন আর সিগারেট ও টানতে ইচ্ছা করলোনা। জানতেও ইচ্ছা করছে না, আমি কই আছি। একটা নীরবতা আমাকে গ্রাস করতে চাইলেও ঢেউয়ের গর্জন বার বার তাকে বাধা দিচ্ছে। কৃতজ্ঞতাবোধ করলাম সমুদ্রের কাছে। এখন আমার কাছে টাকার কোন দাম নেই, ভালোবাসার কোন মূল্য নেই। খুঁড়িয়ে চলা স্বপ্ন আর মরে যাওয়া আশাদের ও কোথাও আর দেখিনা।

রডোডেনড্রন আর স্যালমনের গল্প

রডোডেনড্রন আর স্যালমনের গল্প

কোন এক পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে ছোট একটা দোকান। চা, সিগারেট আর পানের সাথে ট্যুরিস্টদের জন্য ইন্সট্যান্ট নুডুলস। সারা দিন বেচা বিক্রি শেষে দোকান বন্ধ করে একটা সিগারেট ধরায় বাসায় ফেরা। হয়তো সেখানে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করছেনা। তবুও আমি স্বপ্ন দেখি সেই নিস্তব্ধতার। ছোট একটা কাঠের ঘর ধোঁয়ায় ভর্তি। বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। সকালে ঘুম ভাঙতেই পাহাড়ের রডোডেনড্রন ফুলের উপড়ে শিশির বিন্দুর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে অনেকটা সময় চলে যাবে। তারপর আবার গিয়ে দোকান খোলা। দোকানটা বেশ নিরিবিলি জায়গায় হবে। খুব বেশি ট্যুরিস্ট আসবেনা। যারাই আসবে অনেক কথা বলবো তাদের সাথে। তারপর আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। আমার আবার বাড়ি ফেরা। লোকাল বিড়ি টানতে টানতে। তোমাদের বিল গেটস কিংবা ওয়ারেন বাফেট হওয়ার স্বপ্ন তোমাদের কাছেই থাক। তোমাদের মোটিভেশনাল স্পিকাররা বেচুক সেসব স্বপ্ন। আমি কারো বেচা স্বপ্ন কিনতে চাই না। তোমাদের মতন বড় ও হইতে চাইনা। Read More