কালো মেয়ে বনাম ধলা মেয়ে

ফেবুতে আজকাল খুব লিখা লিখি হচ্ছে কালো মেয়েদের নাকি বিয়ে হয় না। পাত্র পাওয়া যায় না। অনেকে কালো মেয়ে দেখতে এসে ছোট ধলা মেয়ে কে বিয়ে করে নিয়ে যায়। কালো মেয়েটি বেচারি একাই থাকে। ঘটনা সত্য। আপনি স্টাব্লিস কিংবা আপনার বাপের যথেষ্ট টাকাকড়ি আছে, বাড়ি গাড়ি আছে?  ভুলেও কালো মেয়ে বিয়ে করবেন না। টাকা দিয়ে যখন কিনবেন ভাল দেখে কিনেন। পাত্রি পক্ষের চাহিদা অনেক। মেয়ে যেমনি  হোক ছেলে চাই তাদের আ্যমেরিকা প্রবাসি গ্রিন কার্ড ধারী অথবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো জব হোল্ডার অথবা ঢাকায় ৬ তলা বাড়ির মালিক। ৫/৬ বছর প্রেম করার পর অনায়সে পরিবারের দোহাই দিয়ে একটা মেয়ে চলে আসে। পরিবারের পছন্দে বিয়ে করে কোন রাজপুত্র কে। ছেলেটা পারেনা থানায় গিয়ে বিয়ের প্রলোভনের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ এর মামলা করতে। কিছুই যে হবেনা। ওই দিকে ব্লাডি মিডল ক্লাস সে। দাতে দাত চেপে কষ্ট হজম করে যেতে হয় তার। মেনে নিতে হয় তাকে। যে মেয়েটি সারা জীবন একসাথে থাকার ওয়াদা করে তাকে একদিন দেহ মন সব সপে দিয়েছিল, ভালবাসা আর মায়ায় তার পৃথিবীর প্রায় সবটাই দখল করে নেয়,  যার চলে যাওয়ায় ছেলেটির পুরো পৃথিবী একটা শুন্য স্থানে পরিনত হয়, মেয়েটি কিন্তু তার হবু স্বামীর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে শপিং করতে করতে সব ভুলে যায়। ছেলেটি ও একদিন হয়তো গাজা বিড়ি ফুকতে ফুকতে মেনে নেয় সব। অনেক দেরি হয়ে গেছে তত দিনে। হয়তো তার ক্যারিয়ার টাই শেষ। ছেলেরাও রেপ হয়। সমাজ দেখেনা। যারা জেন্ডার ইকুয়ালিটির কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন কখনো ভেবে দেখেছেন কি যে এই দেশে কোন ভাল বেতনের চাকুরিজিবী মেয়ে কোন বেকার ছেলেকে বিয়ে করবে কিনা? করতে চাইলেও তার পরিবার থেকে দিবে কিনা? দিলেও এই বালের সমাজ কি রেস্পন্স করবে? সবাই বলে মন টাই আসল। মন দেখ। দেহ আর রুপ নাকি ফুড়িয়ে যায়। মন দেখে কোন পরিবার মেয়ে বিয়ে দেয়?  টাকা দেখে দেয়, সামাজিক অবস্থান  দেখে দেয়, জব দেখে দেয়। তাই আপনাকে আবার বলছি যদি আপনার সামর্থ্য  থাকে তাহলে সুন্দর চকচকা মেয়ে দেখে বিয়ে করুন। জিতার অউকাত থাকলে রানার্স  আপ কেন হবেন!!!

মহাপ্রলয়

তাহার সাথে যখন আমার প্রথম কথা হয় তখনি যেন মনের ভেতরে কেমন একটা খোচা লেগেছিল। মনে হল কোন একটা কিছু একটা শুরু হতে যাচ্ছে।  পাত্তা দেইনি। বুঝতে পারি নি কোথায় হারিয়ে যাচ্ছি। আগে জানতাম না প্রেম কি। যখন শুনতাম একজন আরেকজনকে বলছে তাকে ছাড়া বাচবে না তখন হাসি পেত। কিছুতেই মাথায় ঢুকত না একজন কেন আরেকজন কে ছাড়া বাঁচবে না!!! কি আজিব! সেই আমি একদিন তাকে বলেছিলাম আমি তোমাকে  ছাড়া বাচতে চাই না। আমি পারবো না। তখন খুব অবাক লাগল।  আমি এই কথা বলছি!! সিরিয়াসলি!! আবার এক সময় চিন্তা করতাম সত্যি কি আমি তাকে ছাড়া বাচতে পারবো না?  সে যদি কখনও চলে যায়? তখন কি আমি আত্মহত্যা করব? ধুর হালা, অয় তরে জিন্দিগিতে ছাইড়া  যাবে না। নিজেকে সান্তনা দিতাম। হয়ত তখোনি মুঠোফোনে তার পাঠানো ক্ষুদ্র কিন্তু ভিষন ভাবে রোমান্টিক কোন বারতা চলে আসতো। অদ্ভুত একটা আনন্দে চোখ বন্ধ করে ফেলতাম। চিন্তা করতাম এটাই কি স্বর্গসুখ! সত্যি কি আমি এটা অনুভব করছি!নাকি স্বপ্ন সব। ঘুম ভাংলেই চলে যাবে। তাকে আমার পৃথিবির প্রায় সবটা দিয়ে দিয়েছিলাম। খুব বড় ছিলোনা আমার দুনিয়াটা। সবটা জুড়েই ছিল সে। তারপর যখন মহাপ্রলয়ে আমার পৃথিবিটা ধ্বংস হচ্ছিল তখন আমি তাকে আর খুজে পাইনি। সে তখন আমায় ছেড়ে অনেক দূরে। চেষ্টা  করলাম তাকে ফিরিয়ে আনার। ফিরে আসেনি সে। আস্তে আস্তে মহাপ্রলয় থেমে গেল। আমার পৃথিবিটা তখন একটা শুন্য কবরস্থান। আমার আশা আর সব স্বপ্ন গুলোর কবর সেখানে। ভেতর টা অস্বাভাবিক রকমের তেতো এখন। ভয়ংকর রকমের নিস্তব্ধ।  অনেকেই চেষ্টা  করেছে টেনে তুলতে। পারেনি কেউ। পারবেও না। আমিও আর উঠতে চাই না। নিশব্দতার মাঝে ডুবে যাওয়ার মাঝে অদ্ভুত এক প্রশান্তি আছে। সিগারেটের ফিল্টারে ঠোট রেখে চোখ বন্ধ করে সহজেই অন্য কোন জগতে চলে যাওয়া যায়। একটা বাজি জিততে গিয়ে অনেক বেশি হারিয়ে ফেলেছি। 

লাভ ফুড

ছোট বেলায় অনেক অদ্ভুদ অদ্ভুদ স্বপ্ন ছিল। অতিরিক্ত ফ্যান্টাসিতে থাকা আমার সব সময়ের সমস্যা। একটা সময় পালায়ে বিয়ে করতে খুব ইচ্ছা করতো। বিয়ের পর কোন একটা চিলেকোঠায় ভাড়া উঠবো। অল্প আয়ে খুব টেনেটুনে সংসার চলবে। মাসে কোন একদিন ভালো কোন রেস্টুরেন্টে খেতে যাব। আর বাকি দিন গুলো টেনেটুনে চলে যাবে। কখনো পার্কে বসে বিকেল দেখব আর বাদাম খাব। ছোট বেলায় শুনতাম বাদাম কে বলা হয় লাভ ফুড। কারন তখন এত লাউঞ্জ, Read More

হার

মনে পড়ে যখন জীবনে প্রথম সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর কিনলাম। অদ্ভুত এক আনন্দ। ক্যালকুলেটরে sin, cos, tan , log এসব লিখা দেখেই অস্থির আনন্দ হইত। যদিও তখন জানতাম না এগুলা আসলে কি । এখন মনে পরলেও হাসি আসে। কত সহজ ছিল সব কিছু। স্ট্রেস , টেনশন, ডিপ্রেশন এখন আমার নিত্য সঙ্গী। সব কিছু যেন কেমন ঘোলাটে। কতো স্বপ্ন ছিল , ছিল আনকোরা হাতে করা কতো হিসেব। এখন সব এলোমেলো। একটা সময় ছিল যখন অনেক মাঞ্জা মেরে বাসা থেকে বের Read More

ঢাকা

মানুষ গ্রাম থেকে ঢাকা আসে অনেক স্বপ্ন নিয়ে। আমার জন্ম যেহেতু ঢাকাতেই তাই তেমন কোন ড্রিম ছিলোনা। স্কুল লাইফে সব কিছু অনেক সহজ মনে হচ্ছিল। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি তারপর জব আর বিয়া। লাইফ সেটেল। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। ইন্টারের পর জিনিস গুলা আস্তে আস্তে কঠিন হতে শুরু করে। তারপর ও কনফিডেন্স ছিলো কিছু একটা ভাল হবে। কিন্তু একটার পর একটা ভুল। কোনোভাবেই বুঝতে পারতেছিলাম না কি ঘটতে যাচ্ছে। যখন বুঝলাম তখন আসলেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। খুব বেশি এক্সপেকটেশন ছিল না আমার বাবা মায়ের। কিন্তু যতটুকু ছিল তার সিকি ভাগ ও পূরণ করতে পারি নাই। ডিপ্রেশনে ভুগতে ভুগতে ক্লান্ত পরাজিত হয়ে ডাক্তারের Read More

লুপ

বর্ন আইডেন্টিটি মুভির একটি দৃশ্য। জ্যাসন বর্ন অজ্ঞান অবস্থায় শুয়ে আছে জাহাজের কেবিনে। কোন স্মৃতি নেই। জ্ঞান ফিরতেই জ্যাসনের প্রশ্ন আমি কোথায় ? আমি এখানে কেন ? খুব সাধারন একটা ব্যাপার। যে কেউ ই একই প্রশ্ন করবে এমন অবস্থায়। কিন্তু আমরা নিজেরা কি কখনও এই প্রশ্ন করেছি ? দুনিয়াতে এসেই ব্যস্ত হয়ে পড়ি। স্কুল, কলেজ তারপর উচ্চশিক্ষা। তারপর কোন মতে একটা চাকুরি যোগার করে বউ বাচ্চা পালা। কার পক্ষেই মনে হয় না এই লুপ ব্রেক করা সম্ভব। সমুদ্রে গেলে Read More

ঘুম

সবাই ক্লান্ত হয়ে ঘুমাতে যায় আর আমি ক্লান্ত হয়ে উঠে আসি বিছানা থেকে। এমন হলো কেন? সেই ছোট বেলায় রাতে ঘুমাতে যাবার সময় লাইটের সুইচ টা বন্ধ করে এক দৌড়ে চলে আসতাম বেডে। ভয় লাগত। কিন্তু একবার সাক্সেস্ফুলি বেডে পৌছাতে পারলে ঘুমিয়ে পরতে আর সময় লাগত না। চিন্তা করতাম বড় হলে আর ভয় থাকবেনা। তখন অনেক শান্তিতে ঘুমাব। চলে গেছে ভয়। কিন্তু সাথে করে নিয়ে গেছে শান্তিও। Insomnia, Depression, Anxiety এখন আমার নিত্যদিনের সঙ্গী। আগে ঘুমের বড়ি কাজ করতো। এখন তাও করেনা। নিজেকে অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছি। এখন টিকে আছে শুধু শরীর নামের খোলসটা। শুধুমাত্র খাওয়া ছাড়া Read More

বিরক্তিকর

চোখ বুজে বেশিক্ষণ থাকতে পারিনা। মা বকা দেয়। বলে আমি নাকি সারা দিন ঘুমাই। চোখ খুলতেই সামানে অস্বাভাবিক বিরক্তিকর পৃথিবীটা। যেখানে আমার জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বাইরে যেতে ইচ্ছা করেনা। গাড়ির হর্ন শুনলে সব কিছু ভেঙে ফেলতে ইচ্ছা করে। নিস্তব্ধতা ভাল লাগে। অন্ধকার ভাল লাগে। আর ভাল লাগে সিগারেট। ভাল দিনগুলো চলে গেছে জীবন থেকে। শেষ কবে একটু ভাল বোধ করেছিলাম মনে করতেও কষ্ট হয়। পুরা মাথাটা ফরম্যাট দিয়ে Read More

জ্বিন

শেষ ১ বছরে ৫৫ শিশু খুন। একজন মা কিভাবে পারলেন নির্লিপ্তভাবে গলায় ওড়না জড়িয়ে নিজের পেটের দুই শিশু কে হত্যা করতে? শিশু রাজনের হত্যার ভিডিও টি কি দেখেছেন ? কতো পৈচাসিক ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীর চোখে মুখে ছিল আদিম আনন্দ। সাধারন মানুষজন কেন এভাবে শিশু হত্যা করে চলছে? মনোবিজ্ঞানীরা বলে চলছেন তাদের গদবাধা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কথা। কিন্তু আসলেই কি তাই? যদি ঘটনাগুলার পিছনে কোন অতিপ্রাকৃতিক ব্যাখ্যা থেকে থাকে? আমার মনে হয় জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মানুষজন এই সব শিশু হত্যার সাথে জড়িয়ে পড়ছে। শিশু রাজন হত্যাকারী এক সাক্ষাতকারে বলেছিল আমার উপর শয়তান ভর করছিল। আমি কোন হত্যাকারীর পক্ষ অবলম্বন করছি না কিন্তু সত্যি সত্যি যদি কিছু ভর করে থাকে তার উপর সেই সময়? জ্বিনেরা অনেক সময়েই এরকম অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অনেক পুস্তকে উল্লেখ আছে। কিন্তু আমরা অনেক স্মার্ট জাতি। নিজেদের মুসলমান বলি ঠিক কিন্তু কেউ জ্বিন নিয়ে কোন কথা বললে হেসে উরিয়ে দেই। আমার মনে হয় হত্যাকাণ্ড গুলো একই সুত্রে বাধা। জানি এটা নিয়ে কখনো কোন তদন্ত হবে না। কেউ বেইল দিবে না আমার এই কথার। কে জানে সামনে আর কি দেখতে হবে। শেষ জামানা চলে আসছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন ।

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত ৩:
মধ্যবিত্তের স্বপ্ন দেখতে নেই। খুব কম স্বপ্নই পূরণ হয় মধ্যবিত্তের। কিন্তু এই সহজ সত্যটা এরা মানতে পারে না। চিরকাল স্বপ্ন দেখে যায়। যখন নিজেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শেষ হয়ে যায় তখন শুরু হয় সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখা। ছোটবেলাতেই মধ্যবিত্তের ঘরের সন্তানদের কাধে চাপিয়ে দেয়া হয় পাহাড়সম স্বপ্নের বোঝা। কিন্তু যখন একটার পর একটা স্বপ্নগুলোর অপমৃত্যু ঘটতে থাকে তখন এরাও এক সময় অভ্যস্ত হয়ে যায়। নিজেকেই নিজে সান্ত্বনা দেয় হয় এমনটা , ব্যাপার না বলে। হয়তো নতুন কোন স্বপ্ন দেখা শুরু করে যদিও জানে সেইটাও ভেঙে যাবে একদিন। কিন্তু কিছুই করার থাকে না। এই সমাজে মধ্যবিত্তের মধ্যে প্রবল হতাশা বিরাজ করে। কিন্তু খুব কম সময়েই তারা তাদের হতাশা প্রকাশ করে থাকে। ব্যাপারনা, এমনটা হয়, কাল সব ঠিক হয়ে যাবে ইত্যাদি শব্দমালা তাদের নিত্য ভরসা। কখনোবা বালিশের আড়ালে মুখ চেপে একটু কেদে নেয়া। জীবনটা সব সময়েই অনেক বেশি ক্রুর আচরন করে মধ্যবিত্তের সাথে। কখনো স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট, কখনো না পাওয়ার কষ্ট, কখনো বা পেয়ে হারানোর কষ্ট। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় কষ্টগুলো থেকেই মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেঁচে থাকার প্রেরনা পায়, আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখে।