ধানক্ষেত কিংবা ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ
অথবা শিশির ভেজা ঘাসের স্নিদ্ধ গন্ধটা
যতটা আমাকে টানে,
তোমার শ্যানেল ফাইভের গন্ধ ততটা কোনদিন ও টানেনি
তোমার ফ্রান্সের সব বিখ্যাত পারফিউমের কালেকশন
অনেকবার দেখিয়েছ আমাকে
অবাক হয়ে ভাবতাম এত দাম এগুলোর? সত্যি?
সারাদিন রাস্তায় গরমে হেটে বেড়ানো আমার গায়ের দূর্গন্ধ
ওসব দামি পারফিউমে কখনো যাবে না
যতবার ফিরে ফিরে এসেছি নিজের তৈরি নরকে Read More
Category: স্বরোচিত ধূলোবালি
নস্টালজিয়া
কাজলা দিদি কে কারো কি মনে পড়ে এখন আর ?
বাঁশবাগানই বা কোথায় এখন
চাঁদ তো শেষমেশ আলোদূষনের কাছে হার মেনেছে
নকশী কাঁথার মাঠ ফেলে রুপাই তো কবেই পালালো
সে মাঠে যে এখন আকাশচুম্বী ইটভাটার চিমনি
বিষাক্ত চিমনির ধোঁয়ায় যে আকাশ দেখাই ভার
সুরত আলির নাতিরা এখন আর পুথি পড়ে না
সস্তা হিন্দি গানের সুরে ভেসে আসে চাইনিজ মোবাইল থেকে
লখিন্দরের কপালটা অনেক ভালো ছিলো
এই কালে জন্ম হলে বেহুলা তার শব নিয়ে কি ভেলায় ঘুরতো ?
আর বিভূতিদার শঙ্কর কি করতো ?
ইবোলার ভয়ে হয়তো আফ্রিকায় আর পা-ই মাড়াতো না
দাদার কাছে বসে কি এই যুগের কোন নাতি
ডালিম গাছের তলে দেয়া দাদির কবরের গল্প শুনতো ?
দেবদাস তো পার্বতীকে ভুলেই যেত ইয়াবার ছোবলে
হাজার বছরের পুরনো রাত এখন বাড়ে না
এখন রাত বাড়ে অনিদ্রার ছোবলে
কাবুলিওয়ালার মিনি এখন কোথায় আছে কে জানে
গফুর ও যে সে রাতে গ্রাম ছেড়ে চলে গেলো
কেউ তো তার আর কোন খবর ও নিলো না
হৈমন্তী কিংবা বিলাসীর দুঃখ গুলোকে
এখন আর কারো ছুতে ইচ্ছা করেনা
ওই দুঃখগুলো এখন অচ্ছুৎ
হয়তো শুধু আমার নস্টালজিয়ায় বার বার ফিরে আসে।
শেষ চিঠি
তোমাকে শেষ চিঠিটা লিখবো বলে
একটা ওয়াটারম্যান কলম কিনেছিলাম
আর আজিজ মার্কেট খুজে পেয়েছিলাম সুন্দর প্যাডটা
গোটা দশেক পাতা নষ্ট হলো
তারপর লিখতে পেরেছিলাম একটা চিঠি
গোটা গোটা অক্ষরে কিন্তু ভীষন অসুন্দর আমার লিখা
কিন্তু সব শেষে আর চাইছিলাম না তুমি চিঠিটা পড়ো
তাই ইচ্ছা করে ঠিকানাটা ভুল লিখলাম
তারপরেও খামে পুরে পোস্ট করেছিলাম ঠিকই
পোস্টম্যান ফেরত নিয়ে এসেছিলো চিঠিটা
এতসবের কি মানে ছিলো জানি না
হতো তুমি চিঠিটা পড়তেই না
মুড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে জানলা দিয়ে
হয়তো বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি
নাকি চিঠিটা পড়তে তুমি ? Read More
লোডশেডিং
লোডশেডিং কি মিস করার জিনিস ? হারিকেন কিংবা মোমের আলো এক প্রকার হারিয়ে গেছে। সাথে করে নিয়ে গেছে সম্ভবত সুখগুলোকেও। মোমের আলোতে পড়ার সময় নিজের হাতে দুই-এক ফোঁটা হাতে ফেলতাম। নিজেরে অনেক বড় মর্দ মনে হইতো। হাতপাখা তো এখন আর কোথাও দেখিনা শুধু কমিশনার প্রার্থীদের মার্কা ছাড়া। শুধুমাত্র বাসার টেলিভিশনটাই সাদাকালো ছিলো। বাকি সব কিছুই রঙ্গিন। ক্লাস নাইনে ওঠার আগেই জুল্ভার্ন আর শার্লক হোমস যখন শেষ হয়ে গিয়েছিল। কখনো ওয়াটসন আবার কখনো ক্যাপ্টেন নিমো হয়ে কল্পনার ঘোড়াটা ছুটটো। শুক্রবার রাতের বেলা লুকিয়ে এক্স-ফাইলস দেখার সময় কখনো কখনো ফক্স মুল্ডার হতে চাইলেও ভূতের ভয়ে কল্পনাটা বেশি দূর আগাইতো না। বছরের প্রথম দিনে স্কুলে বাটার নতুন কেডস আর ব্যাগ কাঁধে ক্লাসে বসে নতুন বই পাওয়ার জন্য কি যে অপেক্ষা। বাংলা বইটা শেষ করতে সাত দিনের বেশি লাগতোনা কখনোই। বাকিগুলা বছর শেষেও শেষ হইতো না। Read More
কফি
কফি আমার কখনোই পছন্দ ছিলোনা
তোমাকে সঙ্গ দিতে বসতাম ওই বনেদি কফিশপ গুলোয়
ওরা তো কখনই আমাকে আপন করে নেয়নি
রাস্তার টঙে কড়া লাল চা সাথে সস্তা সিগারেট
ওখানে তো তোমার সাথে যাওয়া যায় না
তাই তোমার সাথে আমার আর থাকা হোল না।
ভীষণভাবে মধ্যবিত্ত বেড়ে ওঠা আমার
ছেঁড়া স্যান্ডেল আর তাপ্পি মারা জিন্সে
তোমার ওই ড্রয়িংরুমে যে আমি বড্ড বেমানান
তাই কোনদিন সাহস হয়নি ওখানে যাওয়ার Read More
সফলতার(!) সংজ্ঞা
সফল মানুষ কারা? সাকসেস পাওয়ার জন্য লাইফে কি করা উচিত? আর কি করা উচিত না ? সাকসেস পরিমাপের মাপকাঠি কি? কারো সাথে দেখা হলে কেমন আছির আগে বা পরে যে প্রশ্নটি শুনতে হয় সেটি হলো কি করিস আজকাল? এই ক্যাপিলাস্টিক সোসাইটি সফলতার যে বেঞ্চমার্ক সেট করে দিয়েছে আমাদের জন্য সেটাই কেন সবার মানতে হবে? আমাদের মোটিভেশনাল স্পিকারারা তথাকথিত সফল (!) মানুষদের জীবনের পোস্টমর্টেম করতে করতে নাক কান সব ঝালাপালা করে দিবে। উনারা কখন ব্রেকফার্স্ট করতেন, কখন ঘুমাইতে যাইতেন, দিনে কয়বার হাগু করতেন ব্লা ব্লা। কিন্তু যে মানুষটা সারা দিন রিকশা চালায় কিংবা ভ্যান টেনে একটা পরিবার চালায় সে কি সফল না? এই দুনিয়া তে শতকরা কতজন মানুষ সফল ? একটা প্রতিযোগিতায় ফার্স্ট এক জনই হয়। সবারই কেন কম্পিটিশনে অংশগ্রহন করতে হবে? যদি না চান তাহলে আপনাকে অলস, ভাদাইম্মা আর ইউজলেস বলে পরিবার এবং পরিচিতমহলে সম্বোধিত হবেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষা না থাকাটা একটা বিশাল বড় পাপ। যখন কেউ দুবাইএর বুর্জ খলিফায় থার্টিফার্স্টের পার্টিতে ব্যস্ত তখন হয়তো কেউ পাহাড় কিংবা জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে তীব্র শব্দ আর আলো দূষণ থেকে বাঁচতে। তাদের জন্য পৃথিবীটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। Read More
অ্যাম্বিশন
“অ্যাম্বিশন” শব্দটা আমি কোন ইংরেজি বই থেকে শিখার আগেই শিখেছিলাম নচিকেতার একটা গানে। স্কুলের “Aim In Life” রচনায় যখন ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার হবার মুখস্ত প্রক্রিয়া ফাটিয়ে লিখছি তখন নচিকেতার মুখে শুনছি আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন/ আমি কোন বাউল হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন / তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন। সম্ভবত তখনই অ্যাম্বিশনের ভুল(!) অর্থটা মাথায় গেথে গিয়েছিল। যত বড় হয়েছি শিখানো হলো কিভাবে সাকসেসফুল হওয়া যাবে জীবনে। বিল গেটস থেকে শুরু করে স্টিভস জবস এর জীবনী। কিংবা মুরগীভাজা বেচা কান্টোকি সাহেবের জীবনী। কিভাবে ৫০ এর পরেও জীবনে সফল হয়েছিলেন। জীবনের প্রকৃত মানে যেন বড় কোন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট হওয়া অথবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো কোন পোস্ট। কিন্ত অবচেতন মন যেন কোনভাবেই মেনে নিতে পারতো না। ওয়ারেন বাফেটের জীবনী আমাকে যতটা না আকৃষ্ট করে তার চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে আমি পড়েছি লিভিংস্টোন সাহেবের স্টোরি। বার বার Read More