প্রিয় ঢাকা

প্রিয় ঢাকা

মানুষ সাধারণত প্রকৃতির প্রেমে পড়ে। পাহাড়ের নিরবতা, সমুদ্রের গর্জন, নির্জন বনে একটা কেবিন, রাতের আকাশের নর্দান লাইটস, আরো কত কি! অনেকেই আবার বড় বড় শহরের প্রেমে পড়ে। পৃথিবীর সব চেয়ে রোম্যান্টিক শহর প্যারিস, নিউ ইয়র্কের রাত কিংবা দুবাইতে নাইট ক্লাবে আলো ঝলমলে একেকটা রাত আসলেই শহরগুলোকে ভালবাসতে শেখায়। কিন্তু একটা ঘিঞ্জি , ময়লা , দূষিত শহরকেও যে ভালোবাসা যায় সেটা আমাকে শিখিয়ে ছিলো অঞ্জন দত্ত আর কবির সুমন। স্যাঁতস্যাঁতে লোনা ধরা বাড়ির দেয়াল, কানাগলি , মাঝে মাঝেই ডাস্টবিন থেকে আসা উৎকট দূর্গন্ধ সব কিছু মেনে নিয়েও কি সুন্দর ভালোবেসে ফেলেছি ঢাকাকে। Read More

কথা দিচ্ছি

কথা দিচ্ছি

কথা দিচ্ছি তোমার প্রেমে পরবো না
প্রেমে পরার বয়েস কবেই তো পার করে এসেছি
অঞ্জনের ম্যারি অ্যান আর নচির নীলাঞ্জনা শুনতে শুনতে
বড় জোর তোমার ঘরের চৌকাঠে উষ্টে খেয়ে পরতে পারি

কথা দিচ্ছি তোমার হাত ধরতে চাইবো না
মৃত আমি আর বরফের মত ঠান্ডা আমার স্পর্শ
তোমাকে শিহরিত করবে না সেটা আমি ভালো করেই জানি
বড় জোর তোমার আচল আলতো করে ছুয়ে দিবো Read More

দেখো দেখি কান্ড

দেখো দেখি কান্ড!

নব্বই এর দশক। গোলকপাল লেন। একটা কানাগলি। সূর্যের আলো অনেক কষ্টে ঢুকলেও সবজিওয়ালার ভ্যান ঢুকে যায় অনায়সে। গলির শেষ মাথায় একটা চারতলা বাড়ি। স্যাতস্যাতে জীর্ণ বাড়িটার ছাদে একটা চিলেকোঠা। সেখানে কোন সেপাই থাকেনা। থাকে সদ্য বাসা থেকে পালিয়ে বিয়ে করা এক দম্পতি। বাড়িওয়ালা ভাড়া দিবোনা দিবোনা বলেও দিয়ে দেয় ভাড়া। মায়া লাগে ছেলে মেয়ে দুটোকে দেখে। ভাড়া দেয়ার আগে কয়েক বার যাচাই করে নেয় কাবিননামা। তারপর সেই স্যাতস্যাতে ছাদে দুই টোনাটুনির সংসার। মাত্র ইন্টার পাশ ছেলেটার কাছে অল্প কিছু জমানো টাকা। পুরোটাই টিউশানি করে জমানো। আর মেয়েটা? জানেই না দাম্পত্যের মানে! জানেনা কিভাবে টাকা বাচিয়ে সংসার চালাতে হয়। শিল্পপতি বাবার সব চেয়ে আদরের ছোট মেয়েটা কিভাবে এই ভীষন মধ্যবিত্ত ছেলে টার প্রেমে পরলো সেটা বুঝার জন্য ফ্রয়েড সাহেবের কাছেই যেতে হবে। Read More

পাশের পাহাড়ে, যেখানে সকালে ফুটতো রডোডেনড্রন আজ সেখানে ফুটছে ক্যারিয়ন ফ্লাওয়ার ফুল থেকেও যে পচা লাশের গন্ধ আসতে পারে সেটাও আজ জানলাম

ক্যারিয়ন ফ্লাওয়ার

মৃত বুনো শুয়োরের গলা পচা দেহ থেকে
তীব্র ঝাঝালো দুর্গন্ধ আসছে
কয়েকটা বাচ্চা এখনো জীবিত
পচা গলা ওলান থেকে দুধ বের করার চেষ্টায়
বেরিয়ে এলো কিছু ক্রিমি আর কীট
এই দৃশ্য আর দূর্গন্ধে আমার পেট গুলিয়ে ওঠার কথা ছিলো
কথা ছিলো দৌড়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার
কিন্তু আমি একটা অথর্ব জীবের মতন দাঁড়িয়ে দেখছি
আরো দেখছি মৃত প্রানীদের সাথে
জীবিত নেক্রোফিলিয়াক দের বীভৎস যৌনতা Read More

শুভ জন্মদিন মালা

শুভ জন্মদিন মালা

অঞ্জন দত্তের গান শুনে অনেক গুলা ক্রাশ খাইছিলাম। রঞ্জনা, রমা, জঈতা, দেবলীনা, সঙ্গীতা, সুজানা সহ আর কত জনের । কিন্তু এর মধ্যে সব চেয়ে সব চেয়ে আলাদা ছিল মালা। Peter Sarstedt এর Where Do You Go to My Lovely বাংলা অ্যাডাপশন ছিলো অঞ্জনের মালা গানটা। Peter Sarstedt এর গানটা বিখ্যাত ইটালিয়ান মুভিস্টার সোফিয়া লরেন কে নিয়ে লেখা বলে ধারনা করা হয়। সেই সোফিয়ার বাংলা ভার্সন ছিল মালা। বারোই মে মালার জন্মদিন। মালার জন্মদিন সেলিব্রেট করতে ঢাকায় এসছে অঞ্জনদা। যে মালা তার জন্মদিন উদযাপন করে জংলাপাড়ের ঢাকেশ্বরী শাড়ী আর পিসি চন্দ্রের ঝুমকো কানের দুলে। যে মালার বৃষ্টির দিন কাটে জ্যায়সালমির আর শীতকাল কোদাই ক্যানালে। কিন্তু রাতে সবাই ঘুমালে নির্ঘুম মালা ফিরে যায় এন্টালী সিনেমার পেছনের বস্তিতে, ফেলে আসা অতীতে।

শুভ জন্মদিন মালা।

সন্ন্যাসী

আমি আকাশের কাছে জানতে চাইবো
আকাশ কি আমাকে চেনে
কত কত রাত আমি শুধু শূন্য চোখে
আকাশের দিকে চেয়ে ছিলাম
একবারের জন্যও কি আমাকে খেয়াল করেছিলো সে
আমার বুকের শূন্যতা কিংবা হাহাকার
কোনটাই কিন্তু আকাশের চেয়ে কম ছিলো না Read More

জ্যান্ত মহাসড়ক

যেদিন তোমার শ্যানেল ফাইভের পারফিউম দিয়ে পচা গলা মৃতদেহের গন্ধ আসবে
যেদিন তোমাদের বিবাহ বার্ষিকী তে তোমার ব্যাবসায়ী স্বামী
প্রিমিও গাড়ী থামাবে শাহবাগে ফুল কিনতে
কিন্তু কোন দোকানেই জঘন্য গাদা ছাড়া অন্য কোন ফুল পাবেনা
রাতের ডিনারে রান্নার জন্য আনা মাংস টা খাসির না হয়ে হবে কুকুরের
নিজেদের অজান্তেই কুকুরের মাংসে ভোজ হবে
আর কি কি অভিশাপ দিবো তোমাকে?
তোমার বোগেনভিলিয়ার বাগান শুকিয়ে শুধু কটা ডাল থাকবে
যখন শীতের ছুটিতে পাহাড়ে যাবে
সকালে কোন রডোডেনড্রন ফুটবে না শুধু তুমি যাবে বলে Read More

অধরা রাজকন্যা

অধরা রাজকন্যা

তোমার জন্য জমিয়ে রেখেছিলাম আমার সব কটা ছুটি
তোমার পছন্দ ছিলো পাহাড় আর রডোডেনড্রন
আর আমার সফেদ ঢেউ
সমুদ্র আমাকে কখনোই ফেরায়নি
তুমি ফিরিয়েছিলে প্রতিবার
যেভাবে প্রাসাদের গেট থেকে প্রহরী ফিরায় ভিক্ষুক কে
তারপরও তোমার জন্য জমানো ছিলো শেষ বিকেলের আলো
যে আলোতে তোমাকে আরব্য রজনীর অধরা রাজকন্যা মনে হতো
আর আমি একজন সাধারণ সৈনিক
তোমার পানে চোখ তুলে তাকানোর অপরাধে শূলে চড়ানো হয়েছিলো আমাকে
নদীর মাঝে যেমন মৃত চর পরে থাকে সবার অগোচরে
সেভাবেই শূলে আমার লাশ ঝুলছিলো
একটু মিথ্যে বলতে পারতে আমায়

মিথ্যে

একটু মিথ্যে বলতে পারতে আমায়
বলতে পারতে তুমি ফিরে আসবে
বলতে পারতে হয়তো একদিন ভালোবাসবে আমাকে
আমি ঠিকই বুঝে যেতাম তুমি মিথ্যে বলছো
বুঝতাম আমার চোখে রঙিন চশমা
খুলে ফেললেই আবার সেই সাদাকালো পৃথিবী
কিছুক্ষনের জন্য হলেও Read More

সৈনিক

তুমি আরেকটু বসবে আমার পাশে?
পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের আলো তোমার খোলা চুলে
যদিও আমার চোখ ঝলসে দিচ্ছে
তাও চাইনা তুমি এখনই চলে যাও
আমি জানি উঠে যাওয়া মাত্র আমাকে আর মনে থাকবে না তোমার
মনে পড়বে না তোমাকে মাঝরাতে বারান্দায় আসতে বলতাম
শুধু একবার দেখবো বলে
রঞ্জনার মতন কবজির কারিগরি করা কোন ভাই ছিলো তোমার
তাও আসতে না তুমি, বকা দিয়ে বলতে যাও ঘুমাও
আমি ঘুমানোর ভান করতাম
বিশ্বাস করো আমি ঘুমাইনি
রাতের পর রাত আমার আংগুলের ফাকে ছিলো সিগারেট
ঘুম অনেক আগেই আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলো
মাঝ রাতে যখন কামার্ত একাকি পুরুষেরা যায়
কোন সস্তা হোটেলের কামরায় শারিরীক সুখ কিনতে
তখন আমি ফার্মেসিতে ঘুমের ওষুধ কিনতে যাই
তারপর ঘরে ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে দেই
দেখো কি সব বলেই যাচ্ছি
এইদিকে সূর্য তো ডুবেই গেলো
তোমাকে আর কি বলে যে একটু বসিয়ে রাখবো
আচ্ছা তুমি চলে যাও, চলে যাও
চলে যাও যা দিয়েছিলে সবকিছু নিয়ে
আমি না হয় একাই থাকি,
যুদ্ধে সর্বদা হেরে যায় এমন এক সেনাবাহিনীর
দ্বিতীয় সারির নিতান্ত বাধ্য সৈনিক আমি
যখন তুমি তোমার ঘরে ফিরে যাবে
তখন আমাকে ফিরতে হবে খুব চেনা সেই যুদ্ধক্ষেত্রে
যেখানে আমার সেনাবাহিনী বার বার হারে।