শুধু মাত্র শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের অতিমানবিক অভিনয়ের জন্যও সিনেমাটা কয়েকবার দেখা যায়। অন্ধ হয়ে যাওয়া একজন সামান্য স্কুল টিচার কিন্তু তার অন্তর্দৃষ্টি আসে পাশে মানুষগুলোর চেয়ে অনেক গুনেই বেশি। থ্রিলার ধাচের সিনেমাটায় নেই কোন বড় ক্লাইম্যাক্স, মারামারি কিংবা খুব বড় কোন প্লট। একজন অন্ধ স্কুল টিচারকে নিয়ে কতোটুকই বা আগানো যায়? কিন্তু কৌশিক গাঙ্গুলির মুভি বলে কথা। দুর্দান্ত কিছু ক্যামেরা শটস সাথে একজন অন্ধ মানুষের ক্রমান্বয়ে সব কিছু হারিয়ে ফেলা। শেষ সম্বল স্কুলটা। যেটাও তার নিজের নয়। এতো কিছু সত্ত্বেও যেন হার মানতে নারাজ জয়ব্রত (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়)। কিছুতেই তিনি স্কুলটাকে শহর থেকে আসা ক্যাপিটলিস্টদের হাতে তুলে দিবেন না। মডার্ন বড় স্কুল বলে কিছু হয়না। তাই এক সময় জয়ব্রতের কন্ঠে ফুটে উঠে “বড় স্কুল বলে কিছু হয় না। All you need is a blackboard and a teacher.” । ফলে গোটা স্কুল কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন ব্যবসায়ীরা এবং স্থানীয় স্বার্থচক্র এক দিকে, অন্য দিকে একা, অন্ধ ও অনড় জয়ব্রত। কতক্ষন ধরে লড়বেন একা?
শুরুর দৃশ্য থেকেই পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফারকে কুর্ণিশ, শাশ্বতর চাঁচাছোলা মুখ সামনের চেয়েও বেশি সাইড অ্যাঙ্গল থেকে দুর্দান্তভাবে শুট করার জন্যে। ফায়ারপ্লেসের পটভূমিকায় কালো চশমা পরে কানে ফোন ধরা শাশ্বতর শট অসাধারণ। গল্পের শুরুতেই জানিয়ে দেওয়া হয় তিনি শিক্ষক জয়ব্রত রে, রায় নন। পাহাড়ের বয়েজ স্কুল, তার মধ্যে দারুণ সুন্দর এক কটেজ, ঝকঝকে দৃশ্যাবলী আপনাকে ছবিটা দেখতে বেশ আগ্রহী করে তুলবে।
ছবিতে একবারের জন্যেও মনে হয়নি তিনি অভিনয় করছেন, একবারের জন্যেও মনে হয়নি তিনি অন্ধ নন। হাঁটাচলা থেকে তাকানো এবং ডায়লগ ডেলিভারি অসামান্য। রাইমা সেন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ অভিনয় এবং ইউনিক উচ্চারণ নিয়ে চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে গেছেন।
The Telegraph এর সমালোচনায় দেখলাম বরুণ চন্দ লিখেছেন, ‘He has stopped acting. He is Jayabroto Ray.’
অসাধারণ কয়েকটি ট্র্যাক রয়েছে। নীল স্লিপিং পীলের রাত গানটা হয়তো মনে গেথে থাকবে অনেকদিন। কিন্তু যারা স্লো মোশনের সিনেমা পছন্দ করেননা তাদের জন্য এটা স্কিপ করে যাওয়াই ভালো।
যদি ঠাণ্ডা রঙমশাল জ্বলে যায়
যদি মুঠোয় ধরা হাত চলে যায়।
যদি ঠাণ্ডা রঙমশাল জ্বলে যায়
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
রোজ সন্ধে হলে পাখি গুলো যায়
তুমি বৃষ্টি দেখে ফিরছ কোন ঝাপসা তারিখে
এই কুয়াশাতে কে কাকে বোঝায়
যদি মুঠোয় ধরা হাত চলে যায়
এই পাহাড়িয়া বাতাস তাদের টানে কোনদিকে
রোজ সন্ধে হলে পাখি গুলো যায়
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
তুমি গুছিয়ে কোন কথা বলতে পারনা
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
কত কথা মনে পরছে কতবার
সব ছেড়ে যাবার রাস্তা ঘিরে হাল্কা তুষারপাত
শুধু ঘরে ফেরা হলনা তোমার
যদি মুঠোয় ধরা হাত চলে যায়
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
তুমি গুছিয়ে কোন কথা বলতে পারনা
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
তুমি গুছিয়ে কোন কথা বলতে পারনা
তুমি গুছিয়ে ঠিক কথা বলতে পারনা
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়
শুধু সময় নিজের গল্প বলে যায়…