হ্যামলেট

হ্যামলেট

হ্যামলেট কতবার মরেছিলো ?
বিশ্বব্যাপী থিয়েটার গুলো কত বার মেরেছে হ্যামলেটকে ?
মঞ্চে বার বার মরেছে হ্যামলেট
আবার উঠে দাঁড়িয়েছে নতুন কোন শোতে
দেখেছে পিতার হত্যাকারী চাচার সাথে সাথে মায়ের প্রণয়
বার বার দেখেছে মৃত বাবার প্রেতাত্মাকে
হারিয়েছে ওফেলিয়াকে
শুধু হোরেশিওরা বেচে থাকে
হ্যামলেট, রোমিও আর ইডিপাসেরা কি তবে জাতিশ্বর
বার বার মঞ্চে ফিরে আসে
মুখের আদল টা বদলে যায়
ভাষাটাও বদলে যায়
চরিত্রটা একই থাকে
পরিণতি টাও একই।

স্বপ্ন

মরে যাওয়া শেষ স্বপ্নটার লাশ পড়েছিলো
কোন এক রেলস্টেশনের অন্ধকার কোনে
স্টেশনের আলো ওখানে কখনো পৌঁছায় না
অদ্ভুত লাশটার চোখে কোন পাতা নেই
ঠিক যেন মরা মাছের চোখ
মাঝরাতের নিঝুম স্টেশন
কেউ নেই সেই মৃত স্বপ্নের চোখে একবার চোখ রাখবে
তাতে অবশ্য কিছু আসে যায় না স্বপ্নটার
সেতো মৃত, যখন জীবিত ছিল তখনই কেউ দেখেনি তাকে
আচ্ছা, স্বপ্নটা যার ছিল , সে এখন কই
কি নিয়ে বেচে আছে সে এখন
শেষ স্বপ্নটাও যে মরে গেলো তার
দাফনের পয়সাটাও হয়তো ছিলোনা তার কাছে Read More

বিশ্ব পাহাড় দিবস

বিশ্ব পাহাড় দিবস

পাহাড়ের সাথে সব চেয়ে ঘনিষ্ট সম্পর্ক  সম্ভবত আকাশের হয়। আকাশকে সব চেয়ে কাছে থেকে দেখে পাহাড়। একটু হিংসেই হয়। আকাশের কান্না বৃষ্টি হলে পাহাড়ের কান্না কি ঝর্না? জন ডেনভারের কাছে থেকে রকি মাউন্টেনের গল্প কিংবা অঞ্জন দত্তের দার্জিলিং এর গল্প শুনে পাহাড় দেখার অনেক আগে যে পাহড়ের প্রেমে পড়ে যাওয়া আমার পাহাড় নিয়ে কম ফ্যান্টাসি ছিলো না। মরুর বুকে রুক্ষ কোন পাহাড় অথবা বরফে আচ্ছাদিত এভারেস্ট, আবার চা-বাগান দিয়ে ঢাকা ছোট ছোট অসংখ্য টিলা। কল্পনায় ভাবি আর মাথায় বেজে ওঠে “কবে যাবো পাহাড়ে, আহারে “। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন কবিতায় পড়েছিলাম পাহাড়ের চেয়ে নাকি নদির দাম বেশি। তবু কবি সুনীল পাহাড়টাই কিনতে চেয়েছিলেন। উনি জিততে না, ঠকতে চান।  পাহাড় থেকে আকাশগঙ্গা দেখতে দেখে পুরো জীবনটাই পার করে দেয়া যায়। এক দিন ঠিকই পাহারে ঘুরতে ঘুরতে  চিন্তা করে বের করবো মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কটা  অবৈধ কিনা !উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত বার বার চলে যাবো পাহাড়ে। Read More

Srimangal-chittagong-patenga-69

চিলেকোঠার ড্রিম

ড্রিম গুলো কে কেন বিগ হতে হয় সব সময়? ছোট ছোট স্বপ্ন গুলো কেন এমন মূল্যহীন ? ছাদের চিলেকোঠায় তোমায় নিয়ে সংসার পাততে কোন আপত্তি ছিল না আমার। গরমে না হয় একটু কষ্ট হতই। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তো ভিজতে পারতাম। অভ্যেস নেই তোমার জানি আমি। বেশি ভিজতে দিতাম না। আমি হয়তো আরেকটু বেশি ভিজতাম। তোমাকে আমি আমার শহর টা চিনাতাম। বিশ্বাস করো প্রিমিও গাড়িতে করে শহর চেনা যায় না। হাতের মুঠোয় তোমার আঙ্গুল টা ধরে এ-গলি সে-গলি করে চষে ফেলতাম শহরটাকে। ছেঁড়া জিন্স আর ফ্লাট চপ্পলের মাঝে কমফর্ট জোন খুঁজে পাওয়া আমার যে কখনও কোট-স্যুটের জেলে যাওয়া হবে না এটা বুঝে গিয়েছিলে তুমি। হলিডে ট্রিপে মালদ্বীপ কিংবা সিঙ্গাপুরে আমার সাথে থাকলে যে যাওয়া হবে না। বুঝে গিয়েছিলাম আমার আর চিলেকোঠায় সংসার পাতা হবেনা তোমার সাথে। কখন যে একাকীত্ব ও আমার পাসে এসে দাঁড়িয়েছিলো টেরই পাইনি। নতুন করে আর শুরু করার ইচ্ছা হয়নি। স্বপ্ন গুলো মরে যায়নি আজো। হয়তো বুড়িয়ে গেছে। যখন কেউ বলে আবার নতুন করে সব শুরু করতে খুব অবাক লাগে। খুব।

IMG_8253

ফিরে আসবো

কথা দিলাম ফিরে আসবো
যত ক্রোশ দূরেই যাই না কেনো
যত তেপান্তরের মাঠই পেরোই
যতই পাহাড় ডিঙিয়ে মৃত্যু উপত্যকা পাড়ি দেই
ঠিকিই ফিরে আসবো চেনা  মেঠো পথ ধরে
রাস্তা ভুলে গিয়েও আবার চিনে নিবো
ঝড়ের কোন রাত হয়তো দেরি করিয়ে দিবে
কিন্তু আমায় আটকাতে পারবেনা
হয়তো আমার মুখের আদল বদল হয়ে যাবে
রোদে পুড়ে গায়ের রঙটাও তখন অপরিচিত
চোখে চোখ রাখলেই চিনবে আমাকে
হয়তো তোমার অনেক অভিমান জমে আছে
হয়তো অনেক বেশি দেরি করে ফেলেছি
তাও ফিরে এসে সব শুনবো তোমার কোলে মাথা রেখে
জঙ্গলে ক্যাম্পফায়ারের ঝিরি ঝিরি শব্দে Read More

FB_IMG_1568451671522

একা একা

দুনিয়ার সব চেয়ে সুন্দর নেশা গুলোর মধ্যে একটা সম্ভবত একটা নেশা একা থাকতে চাওয়া। একা একা ঘুরা, একা একা কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া, একা শপিং করা আর নাইট শোতে একা একা একটা সিনেমা দেখা। রাতে বাড়ি ফিরে একা একা বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া। কানে হেডফোনে ডিলানের কোন একটা ট্র্যাক শুনতে শুনতে ফুটপাথে হাঁটা। হটাত করেই মনে হয় কেউ যদি একটা কল দিয়ে জিগ্যেস করতো লাঞ্চ টা করেছি কিনা। পরক্ষনেই ভুলে যাই। সিগারেট টানতে টানতে সামনে এগিয়ে যাই। একা থাকার সময়টা উপভোগ করাই শ্রেয়। আবার চিন্তা করি কখনো কি সিগারেটটা ছাড়তে পারবো? বাজে নেশা। কেউ যদি মুখ থেকে টান দিয়ে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলতো আজকে আর না। অনেক গুলো তো হলো। চিন্তাগুলো থেমে যায় তখনি। প্রশ্রয় দেই না। সব কিছুকে প্রশ্রয় দিতে হয় না। Read More

রবিনসন ক্রুসো, আমি ও বোহেমিয়ান স্বপ্নেরা

সাফল্যের চেয়েও হেরে যাওয়ারা বেশি চেনা হয়। সুখের চেয়েও বেশি কাছের হয় দুঃখেরা। হাসির শব্দের চেয়ে চেপে রাখা কান্নার শব্দের ডেসিবল অনেক বেশি। সওয়াবি শুনতে পায়না। সবার সব কিছু শোনা উচিত না। যার যা শোনা দরকার সে সেটা ঠিকই শুনে নেয়। স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝখানে ফারাক করাটা এক সময় খুব জটিল হয়ে দাড়ায়। হারতে হারতে এক সময় জিততে ভুলে যাওয়া। আজ আর চিঠি লিখা হয় না। পুরনো চিঠি গুলোও আর পড়া হয় না। গড়িয়ে পড়া কয়েক ফোটা চোখের জলেই চিঠি গুলো মলিন হওতে শুরু করে। তাই আর পড়া হয়না। ভালো থাকার অভিনয় করতে করতে কখন যে সত্যসত্যই ভালো থাকতে শুরু করে মানুষ গুলো। কষ্টের অনেক রঙ হয়। সাদাকালো না শুধু। ভ্যান গগের আকা সেই ছবিটার মতন। মানুষ তখনি তোমাকে দাম দিবে যখন তুমি বলবে তোমার বড় বড় স্বপ্নের কথা। বলবে কিভাবে তুমি সেগুলোকে বাস্তবে রূপান্তর করতে চাও। কেউ কেউ হয়তো পিঠপিছে মজা নিবে কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ এ তোমাকে কদর করবে। আর যখন তুমি সাফল্য পাবে তখন তোমার স্ট্রাগলের গল্প বেচেই তো দিন পার করে দিতে পারবে। বোহেমিয়ান স্বপ্ন গুলোর কথা কেউ শুনতে চায়না। ভবঘুরের স্বপ্নের কথা তো কোন টকশোতে বলা যায় না। বেচা যায় না। বুকে চেপে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়েই হাতের সিগারেটটা ছুড়ে ফেলে দেই। শূন্য চোখে আকাশের দিকে তাকায় শুধু উড়ে যাওয়ার কথা ভাবি। ভাবি জাহাজ ডুবিতে কোন নির্জন দ্বীপে নিঃসঙ্গ জীবন শুরু করবো। জানি হবে না অমন কিছু। ওইসব শুধু রবিনসন ক্রুসোর সাথে হয়। আমার সাথে না। আমাদের মতন মানুষের সাথে না। Read More

sunset-gulshan

গুলশান অফিস পাড়া

অফিস অঞ্চলে ঘুরছি। বিনা কারণে রাস্তায় হাঁটতে খুব ভালো লাগে। যদি কোন বন্ধুর সাথে দেখা হয়। ঠিক এই আশায় না। জাস্ট মনে হলো আর কি। হাতিরঝিল পাড়ি দিয়ে সোজা গুলশান অফিস পাড়ায়। পড়ন্ত বিকেলে কিছু খুঁজে আমার চোখ। আমি জানি না কি খুঁজে। খুব ছবি তুলতে ইচ্ছা করে। তুলই অনেক ছবি। ছবি তোলার হাত একবারেই ভালো না। খুব ভালো ফটোগ্রাফার যদি হতে পারতাম। জানি কোনদিন পারবোনা। তাও ছবি তুলবো। ট্রেন্ডিং কিছু হ্যাশট্যাগ দিয়ে ঠিকই ইন্সটাগ্রামে পোষ্ট করবো। আমি কখনো হাততালি চাই না। শব্দ ভালো লাগেনা। আজকেও ঘুরলাম। কিছু ছবির আশায়। একটা ভাঙ্গাচুরা DSLR আছে। ওটা দিয়ে ছবি তোলার চেয়ে মনে হলো মোবাইলেই ভালো আসে। পড়ন্ত বিকেলের ছবি তুলতে ভালো লাগে। Read More

211নিঝুমদ্বীপ

ছোট গল্প

উপন্যাস আমার পছন্দের জিনিস না। ছোট গল্পের সন্ধানে কুকুরের মতন এদিক সেদিক ছোক ছোক করি। কখনো পাই, কখনো পাইনা। কখনো কখনো আধ-খাওয়া সিগারেটের মতন পাই। তাও ছোট গল্প খুজে বেড়াই বৃষ্টিতে ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে কোন কানা গলিতে। কিংবা কাদায় মাখানো গ্রাম্য রাস্তায় চলে যাওয়া। তাও তোমাদের হাইওয়ে তে উঠবোনা। ওখানে চালানোর মতন দ্রুতগতির বাহন নেই আমার। ও রাস্তায় শুধু টোলের হিসেব, অকটেনের লিটারের হিসেব, সময়ের হিসেব। অতশত হিসেব আমার মাথায় থাকেনা। হাঁটা রাস্তাই আমার পছন্দ। অথবা সাইকেলের রাস্তা। ক্রিং ক্রিং বেল বাজবে। কোন যানজট থাকবেনা। কর্কশ হর্নের শব্দ পাগল করবেনা। কখনো কখনো কোন নেড়ি কুকুর সঙ্গী হবে। কিছুদূর হয়তো আসবে আমার সাথে। তারপর আবার একা একা হাঁটা। নিজের অজান্তেই প্যাকেটের শেষ সিগারেটটা ধরিয়ে ফেলবো। হয়তো ততক্ষণে বেশ কিছু ছোটগল্প পেয়ে গেছি। ছোট গল্প কুড়াতে হয়। ঠিক যেন সকালের ঝিনুক। কুড়িয়ে নিয়ে মালা গাঁথতে জানতে হয়। সরাসরি তাকানো যায় না। আড়চোখে দেখে বুঝে নিতে হয়। বাস্তবতা আর কল্পনার মিশেল টাও জমাতে হয়। কোন শিশির বিন্দুর কিংবা একটা জোনাকি পোকারও হয়তো না-বলা গল্প আছে। সেটাও কি অনুভব করা সম্ভব? হয়তো সম্ভব। কতবার মরার পরে একবার বাঁচা যায়?

Read More

820নিঝুমদ্বীপ

নীরবতা

একটা বিশাল শান্ত সমুদ্র সৈকতের তীরে আমি বসে কোন কাউচে। একটাই মাত্র কাউচ। আর সৈকতটাকেও কোন সাধারণ মনে হচ্ছেনা। তেপান্তরের মাঠর সাথে কোথায় যেন মিল আছে সৈকতটার। ও, হা পেয়েছি কোন অন্ত নেই এই সৈকতের। ঢেউ গুনে যাচ্ছি বসে বসে। কিন্তু এই ঢেউয়ের কোন শেষ নেই, কোন শুরু নেই। হটাত নিজেকে অনুভব করলাম। না, আর তরুণ নেই আমি। পরিণত হয়েছি এক বৃদ্ধে। খুব বেশি বৃদ্ধ না কিন্তু বুড়ো বলার জন্য যথেষ্ট। চিরাচরিত অভ্যাসে পকেটে হাত চলে গেলো স্মার্টফোন টার জন্য। না ওটাও নেই। থাকলেও খুব বেশি লাভ হত বলে মনে হয়না। এতক্ষণে আমি বুঝে গেলাম আমি আর পৃথিবীতে নেই। এতটা শান্তই পৃথিবীর কোথাও থাকতে পারেনা। নিজেকে এখন সময়ের চেয়েও অনেক বেশি বয়স্ক মনে হচ্ছে। বুক ভরে নিশ্বাস নেয়ার পর এখন আর সিগারেট ও টানতে ইচ্ছা করলোনা। জানতেও ইচ্ছা করছে না, আমি কই আছি। একটা নীরবতা আমাকে গ্রাস করতে চাইলেও ঢেউয়ের গর্জন বার বার তাকে বাধা দিচ্ছে। কৃতজ্ঞতাবোধ করলাম সমুদ্রের কাছে। এখন আমার কাছে টাকার কোন দাম নেই, ভালোবাসার কোন মূল্য নেই। খুঁড়িয়ে চলা স্বপ্ন আর মরে যাওয়া আশাদের ও কোথাও আর দেখিনা।