একা একা

ক্রমাগত প্রত্যাখ্যাত হয়ে যাওয়ার যে যন্ত্রনা সেটা  শুধু যে হয় সেই বুঝে। যন্ত্রনায় দাতে দাত চেপে চেষ্টা করে যেতে হয়। আমি তো চাইনি এমন জীবন। আমি চাইনি প্রত্যাখ্যাত হতে। একা বেঁচে থাকতে  শিখে গিয়েছিলাম। শিখে গিয়েছিলাম নিজেকে ভালবাসতে। তোমার স্মৃতি গুলোও আর কাদাতো না আমাকে। একা শপিং করতে যাই, একা একা রাস্তায় ঘুরে বেড়াই। প্রিয় সিনেমাটি একা একাই হলে গিয়ে দেখি। একাই চলে গিয়েছিলাম ভারতবর্ষে। একা একা ঘুরে এসেছি কোলকাতা থেকে চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ থেকে গোয়া, কার্নাটক থেকে দিল্লী। কখনোই একাকী মনে হয়নি নিজেকে। আমার সব সময়েই একটা অনুভূতি কাজ করতো আমাকে সারা জীবন একাই থাকতে হবে।  অবচেতন মনে মেনেও নিয়েছিলাম। তেমন কোন কষ্ট কাজ করত না আমার এটা নিয়ে। কিন্তু জীবনে বিয়ে করা নাকি অবশ্যক। পরিবারের চাপে পাত্রী দেখা শুরুর পর থেকেই রিজেকশন এর কষ্টটা পেতে থাকলাম। আমি না হ্যান্ডসাম না আমার অগাধ টাকা-পয়সা আছে। কোন দুঃখও ছিলো না এসব নিয়ে। ছন্নছাড়া ভবঘুরে একটা জীবন সবসময়েই আমাকে ডেকে ফিরে। কিন্তু আমি সাড়া দিতে পারিনা। খুব ইচ্ছা করে পরিযায়ী পাখীদের মতন হয়ে যেতে। এক একটা ঋতু একেক জায়গায় কাটাতে। সিগারেটটাই শুধু সঙ্গী হবে আমার আমি জানি। নিজেকে এখন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত কোন আসামির মতন মনে হয়। Read More

ছেঁড়া চিঠি

প্রিয় **** , এই প্রথম কোথাও তোমার আসল নাম লিখলাম। কেউ জানবে না কোনদিন এর কথা, চিন্তা করিও না। তুমিও নিজেও জানবা না। খুব ইচ্ছা আমার এই লিখাটা তুমি পড়ো। তোমাকে আমার এই লিখার লিংক পাঠাতে পারি। কিন্তু কখনো পাঠাবো না। তুমি আজ বিবাহিত। স্বামীর আদরে আমাকে তোমার মনে নেই খুব ভালো করেই জানি। আমার এই ছোট্ট লিখাটা যা হয়তো অজস্র অপরিচিত অনুভুতি ভরা লিখার মাঝে ঢাকা পরে যাবে। তা আজকে তোমায় কি বলা যায় ভাবছি। অভিমান দেখাবো নাকি অভিযোগ? কোনটাই না হয়তো। তোমার উপর কোন অভিমান ও নেই আর কোন অভিযোগ ও নেই আমার। কেন থাকবে? তোমার সাময়িক টিনেজ আকর্ষণের ভার আমাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে কখনো ভাবিনি। আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই বাক্য কখনোই পরিবর্তন হবে না। বাকি সব কিছু আজ পরিবর্তিত। স্মৃতিটুকুই আসলে সম্বল তাই যত্নে তুলে রাখা। তুমি চলে যাওয়ার পর জিন্দা লাশ হিসাবে বেচেছিলাম অনেক দিন। এতটা কষ্ট পাবো ভাবিনি। অনেক পরে বুঝেছিলাম চুম্বন গুলো না, কষ্টটাই ছিলো তোমার দেয়া সব চেয়ে পারফেক্ট উপহার।

আমাদের প্রমিস আর রাখা হলো না, আর কাটবে না একসাথে সেই যত্নে ভরা শীতকাল l কি সুন্দর ছিলো তাইনা প্রিয়? তোমার সেই আদরে মাখা কথা গুলো হারিয়ে গেলো, আর তুমি সেই এক অজানা দেশে, বহুদূরে l জানি আমি তোমার কিছু টা হলেও মায়ায় আটকা পড়েছি,, তুমি তো অনেক আগেই এই মায়া কাটিয়ে অনেক ভালো আছো , অন্য কোনো বন্ধনে l

যমুনা নদীতে সূর্যাস্ত

দুঃখী মানুষ

আমি একজন দুঃখী মানুষের সাথে কথা বলতে চাই
ক্রমাগত হেরে যাওয়ার কষ্টে পুড়তে থাকা
মুখে সর্বদা একটা মলিন হাসি লেপটে থাকে
কান্না অনায়সে গিলে যে বলতে পারে ভালোই আছি
তার কথাগুলো আমি শুনতে চাই
যদিও দুঃখগুলো তার একান্তই ব্যাক্তিগত Read More

FB_IMG_1568451671522

অপরাধী শব্দদল – প্রেমিক

ম্যাচুরিটি দিয়ে প্রেম হয় না। যা হয় তার নাম ব্যাবসা। প্রেমিক হলে হতে হয় ইম্যাচিউর। জীবনের সব চেয়ে প্রিয় জিনিস টা অনায়সে প্রেমিকার জন্য বাজি ধরতে পারতে হয়। রাতে ঘুম কে  বিদায় জানাতে কোন ফেয়ারওয়েল ছাড়াই।  নাবিক সিন্দাবাদ যেমন জীবনের মায়া উপেক্ষা করে বার বার ছুটে যেত সমুদ্রে ঠিক সেভাবেই ছুটে চলতে হয়। প্রবল বর্ষায় যেভাবে আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে ঠিক সেভাবে ঝড়তে জানতে হয়। জানতে হয় বার বার উপেক্ষিত হবার পরও কিভাবে নিজেকে বেধে রাখা যায়। চোখের জলে একটা সাগর না হলেও একটা নদীর জন্মই যদি না হয় তবে কিসের প্রেমিক তুমি ? পোস্ট না করা চিঠির একটা ছোট খাটো পাহাড়ই যদি না হলো তবে সেই ভালবাসা মূল্যহীন। বার বার মরে আবার বেচে ফিরতে হয়। খুব সহজ না নিজের হৃদয় কে ফিনিক্স পাখি বানানো। অন্তবিহীন কুঁড়ির মতন ফোটার আগেই ঝরে পড়া। কষ্ট গিলে নিয়ে মুখে হাসি তুলে রাখার অভিনয় টা শিখতে হয় খুব যত্ন করে। সাজানো জীবনের আহবান কে উপেক্ষা করে  ভবঘুরের জীবন গ্রহণ করা সহজ নয়।

ঋত্বিক-চক্রবর্তী

ধন্যবাদ স্যার ,ধন্যবাদ ঋত্বিক চক্রবর্তী

আপনাকে অনেক দিন ধরেই একটা চিঠি লিখবো বলে ভাবছিলাম। ঠিক লিখতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম আরেকটু অপেক্ষা করে নেই। যদি আরেকটু বেশি কিছু অভিনয় দেখতে পাই।

“আমি আর কি করতে পারি এ ছাড়া ?
আরে তুই তো শিল্পী
নাচ, গান, আঁকা, লেখা, অভিনয় কোনটা পারি?
আরে তুই তো না খেয়ে থাকতে পারিস !!! ” Read More

পেলিক্যান

খ্রিস্টধর্মের অন্যতম পবিত্র প্রতীক হচ্ছে পেলিক্যানের ছবি। এর কারণ : খাওয়ার জন্য কোনো খাবার যখন একেবারেই থাকে না, তখন পেলিকান তার ঠোঁট দিয়ে কেটে নিজের গোশত তার শাবকদের খাওয়ায়। আমরা যেসব রহমত লাভ করি, সেগুলো প্রায়ই বুঝতে অক্ষম থাকি। আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে পরিপুষ্ট রাখার জন্য তিনি যা করেন, আমরা অনেক সময়ই তা বুঝতে পারি না।

পেলিক্যান সম্পর্কে একটি গল্প বলা যাক।

কঠিন শীতের সময় একটি পেলিক্যান তার নিজের গোশত তার সন্তানদের খাওয়াচ্ছিল। পাখিটি যখন শেষ পর্যন্ত দুর্বলতায় মারা গেল, তখন বাসার একটি
শাবক অন্যটিকে বলল: ‘যাক অবশেষ!! আমি প্রতিদিন একই জিনিস খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম।’ (Maktub – Paulo Coelho)

উবার

যদি আবার ফিরে আসার কোন সুযোগ থাকতো
জীবনানন্দের মতন বাংলায় ফিরে আসতে চাইতাম না
ধানসিঁড়ি নদী কিংবা কপোতাক্ষের জল তো ফুরিয়ে আসছে
আমি ফিরে আসতে আসতে হয়তো সেখানে
গজিয়ে যাবে ঘন কংক্রিটের জঙ্গল
লিভিংস্টোন পড়েছিলাম সেই ছোট বেলায়
এই জন্মে হয়তো আফ্রিকায় সুর্যাস্ত দেখা হবে না
আমাজন নদীর তীর ধরে খোজা হবে না
সেই সূর্য- কুমারীদের হারিয়ে যাওয়া দেশ
সোনার খোঁজে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে যাওয়া হবেনা জুলুরাজ্যে
কিংবা মরুভূমিতে হারিয়ে গিয়ে খোজা হবেনা
রানী বিলকিসের সেই রহস্যময় রাজ্য উবারে
শুনেছি মরুভূমির অশিরীরীরা পাহারা দেয় সেই রাজ্য
আমার কি প্রবেশের অনুমতি মিলবে সেথায় ?
চাদের পাহাড়ে যাওয়ার জন্য শঙ্কর আমাকে আজও ডাকে
সাড়া দিতে পারিনা সেই ডাকে
সাড়া দিয়তে হয় না সেসব ডাকে …

বিশ্বায়ন

বিশ্বায়নের যুগে স্বপ্নগুলোও ফ্রাঞ্চাইজি বেসড হতে হয়। চাওয়া গুলোও হতে হয় কর্পোরেট। যেমন ফ্লাইওভার গুলো আকাশ ভেদ করে ছুটে চলে, ঠিক তেমন। টাইয়ের শক্ত বাধন যখন গলায় চেপে মুখে ক্যালকুলেটেড হাসি নিয়ে দামী কাঁচের দেয়াল ঘেরা অফিসে সাক্সেসফুল মিটিং এ ব্যস্ততার মাঝে কতশত সুন্দর বিকেল হারায় তার কোন ইয়াত্তা নেই। স্টক মার্কেটে সুন্দর একটা সূর্যাস্তের কোন ইমপ্যাক্ট নাই। কর্পোরেট কালচারের সাথে কবিতা যায় না। তারপরেও গ্লোরিয়া জিন্সে দামী ক্যাপাচিনো হাতে হটাতই মনে পড়ে স্কুল গেটের মামার হাতের হজমি কিংবা দুই টাকার তেঁতুলের আচার। এক দৌড়ে পার হওয়া যেত তেপান্তরের মাঠ। ছাদের টাঙ্কির উপর শুয়ে তারা গুনার দিনগুলো কোথায় যে চলে গেছে খুব জানতে ইচ্ছে করে।

এই ঢাকা আজ একটা মেগা সিটি হবে
পণ করেছে সরকার
বড় বড় হয়ে যাবে রাস্তাঘাট
বড় সব হওয়া দরকার
শুধু ছোটখাটোদের জায়গা কমে যাবে
এটা বিশ্বায়নের বাজার
ছোট ছোট মানুষের ছোট ছোট আশা
কে রাখে খবর বলো তার ?

ডি- মোটিভেশনাল স্পিচ

যত সফল মানুষদের গল্প শুনি, তত অবাক হই। তাদের গল্প গুলো আমার কাছে কোন ফাইভ স্টার হোটেলে সাজায় রাখা বুফে ডিনারের মতন মনে হয়। সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পাঁচশো টাকা পকেটে নিয়ে ঢাকা এসে কে অনেক বড় ব্যাবসায়ী হোল আথবা কোথায় কোন ভ্যান গাড়িওয়ালার মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হইছে শুধু তাদের গল্পই বিক্রি হয়। যে রিকশাওয়ালার মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হয় না তাকে নিয়ে কোন স্টোরি হয় না। যে বাবা সারা দিন রিকশা কিংবা ভ্যান ঠেলে পাঁচ জনের সংসার চালায় সে কি সফল না? যে নারী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসিমুখে ঘরের কাজে জীবন পার করে কিংবা যে মা বাচ্চাটাকে স্কুল থেকে বাসায় এনে আবার তাকে নিয়ে কোচিং এ দৌড়ায় তারা কি সফল না? তাদের গল্প কোথাও নাই। ছাপোষা মধ্যবিত্ত যে বাবা পাই পাই করে টাকা জমায় তার মেয়েটার ভালো একটা বিয়ে দেয়ার জন্য তার গল্পটা শুধু তার কাছেই থাকে। যে প্রবাসী শ্রমিক পুরো যৌবন টাই পার করে দেয় মধ্যপ্রাচ্যে, এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন থেকে শুরু গার্ড যাকে তুই ছাড়া সম্বধোন করেনা তার গল্পটাও কোথাও পাওয়া যায় না। এই গল্পে কোন সাসপেন্স নাই, হ্যাপি এন্ডিং নাই কিন্তু অনেক হতাশা আছে। হতাশার গল্প বিকোয় না। বিকোয় শুধু মোটিভেশনাল স্পিচ।

নদী

ইচ্ছে ছিলো নদী হবো
সাগর থেকে সব চেয়ে দূরের নদীটা
সাগরে যেতে হাজার মাইল পাড়ি দেয়
কখনো পাহারের ভিতর দিয়ে বয়ে যায়
ঝিরি ঝিরি শব্দে
কখনো বা তীব্র স্রোত নিয়ে ভাঙে
গ্রামের পর গ্রাম
ঘরহারা মানুষের কান্নার লোনা জল নিয়ে
ছুটে যায় সমুদ্রের পানে
তারপর পৌছায় মোহনায়
এতটা পথ পাড়ি দেয়ার পরেও
সমুদ্র তাকে গ্রহণ করে না , ফিরিয়ে দেয় …

স্বরচিত ধূলোবালি – ইমরুল
১৩/০৫/২০২১