সোনার জিলাপি

আমি সচারাচর ফুড রিভিউ করি না। সেসব খাবার সবাই খাচ্ছে খেতে পাচ্ছে সেগুলা রিভিউ কইরা কি লাভ। এবার ইন্টারকন্টিনেন্টালের সোনা দিয়ে মুড়ানো জিলাপি খেয়ে ভাবলাম এটার রিভিউ করা উচিত। কারণ সবার অওকাত হয় না সোনার জিলাপি খাওয়ার। অওকাত বলতে শুধু পকেটে মাল থাকাটাই বোঝায় না , কলিজা বড় হইতে হয়। সোনার জিলাপি খাওয়ার কলিজা সবার থাকে না নিজের পকেটের পয়সায় কিনে। যাই হোক ইন্টারকন্টিনেন্টালের সোনা দিয়ে মুড়ানো জিলাপির বিজ্ঞাপন দেখে আমার ভিতরে থাকা জমিদারের পূর্বপূরুষের আত্মা মাথাচড়া দিয়ে উঠলো। কোন চিন্তা না করেই সোনার জিলাপি অর্ডার করে দিলাম ৩ কেজি। ১০ কেজি অর্ডার করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু পকেটের অবস্থা ভালো না থাকায় ৩ কেজি অর্ডার করে সন্তুষ্ট থাকতে হলো। হাতে পাওয়ার পর খুলেই সোনা দিয়ে মুড়ানো জিলাপি দেখে মন টা ভরে গেলো। যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, সোনা খাওয়া যায়। মানে Gold is Edible. যাই হোক টেস্ট ভালোই ছিলো। সোনার স্বাদ আহামরি কিছুনা। কিন্তু আভিজাত্য আছে বিষয়টার মধ্যে। জিলাপির স্বাদ ভালোই ছিলো । সোনা থাকায় স্বাদ বেড়ে গিয়েছিলো। রিভিউ টা একটু লেটে দিলাম। কে জানে সাথে সাথে দিলে হয়তো আমার গু ছেকে সোনা বের করার জন্য বাসার নিচে লাইন লেগে যেত।

মধ্যবিত্তের সাইন্স

বিজ্ঞান বলে সব চেয়ে ভারি নাকি নিউট্রন স্টার
ওরা কখনো আমার মধ্যবিত্ত বাবার দীর্ঘশ্বাস মাপেনি
যদি মাপতো তবে জানতো সেই দীর্ঘশ্বাসের ভর
হাজারটা নিউট্রন স্টারের চেয়েও ভারী ছিলো সেই দীর্ঘশ্বাস

হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতিটা নিয়ে কত কিছু হয়ে গেলো
বিজ্ঞান বললো এটা নাকি গেম চেঞ্জিং একটা থিওরি
হাইজেনবার্গ সাহেব হয়তো কখনো একটা নিম্ন মধ্যবিত্তের অনিশ্চয়তা দেখনেনি
দেখলে হয়তো আনসার্টেনিটি প্রিন্সিপ্যাল টাও তুচ্ছ লাগতো Read More

IMG_8756

দুঃখ

টাকা দিয়ে সুখ কেনা যায়। যারা বলেন “Money can’t buy happiness” তারা অবশ্যই ভুল বলেন। কিন্তু টাকা দিয়ে সব কেনা যায় না। টাকা দিয়ে দুঃখ কেনা যায় না। দুঃখ এতটা সস্তা না যে সামান্য টাকা দিয়ে কেনা যাবে।

যে দুঃখ মাইকেল মধুসূদন কে দিয়ে মেঘনাদ বধ কাব্য লিখায়, যে দুঃখ নজরুল কে দেয় খ্রিষ্টের সম্মান সেই দুঃখ কোথা থেকে তুমি কিনবে? যে দুঃখে মান্নাদে দুঃখী না হয়ে হন রাজার রাজা সেই দুঃখ কিছু কাগজ দিয়ে কেনা সম্ভব না ।

প্রেমিক হতে ইচ্ছা করে না

সেইসব রাত্রির কথা মনে পড়ে
হিমাঙ্কের নিচে থাকতো তাপমাত্রা
প্রেমিক হতে গিয়ে খরচ করে ফেলা আমার সব উষ্ণতা
এই দরজা সেই দরজায় কড়া নেড়ে
শেষে কাচুমাচু হয়ে বরফের উপর শুয়ে
নর্দান লাইটস দেখতে দেখতে সব ভুলে থাকা
আমার সত্যি আর প্রেমিক হতে ইচ্ছা করে না … Read More

IMG_8772-1

প্রেম, কবিতা ও যুদ্ধ

আমি তো চেয়েছিলাম প্রেমিক হতে
যে কিনা প্রেমিকার জন্য অনায়সে
বাজি রাখতে পারে তার পুরো দুনিয়া
নিঃস্ব হয়ে যেতে পারে পরের মুহূর্তেই
কিন্তু তোমরা বললে
বাস্তবতার সামনে নাকি প্রেম টিকে না ?
শুধু গল্প কবিতাতেই
এমন প্রেম খুঁজে পাওয়া যায়, বাস্তবে না
এমন প্রেমিকরা বাস করে বোকার স্বর্গে
তাই আর প্রেমিক হতে গিয়েও হলাম না

তারপর হতে চেয়েছিলাম কবি
কিন্তু তোমরা বললে আমার কল্পনায় জোর নেই
অন্তঃশব্দে মিল নেই , আর
কবিদের নাকি দুই বেলা ভাত জুটে না?
তাই কবিও হওয়া হলো না আমার

এর পর বেজে উঠলো যুদ্ধের দামামা
ভাবলাম তবে যোদ্ধা হই
যে হাতে কিনা প্রেমিকার জন্য ফুল থাকার কথা
নয়তো কথা ছিলো আটোগ্রাফ দেবার জন্য
নীল রঙের কলম থাকার
সেই হাতে তুলে নিয়েছিলাম কোলাসনিকভ
গুলিতে ঝাজড়া করে দিয়েছিলাম
শত শত্রুসেনার বুক
তারপর ফিরে এসেছিলাম তোমাদের মাঝে
ভেবেছিলাম আমাকে বরণ করে নিবে
ঠাই দেবে তোমাদের মাঝে
(অসমাপ্ত)

অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেকিং

অন্নপূর্ণা চূড়ার নাম শুনেছিলাম অনেক ছোট বেলাতেই। সেভাবে কখনো পাহাড়ে ট্রেকিং করা হয়নি। বলতে গেলে আমার পাহাড় নিয়ে অভিজ্ঞতা প্রায় শুন্য ছিলো। ইদে যখন নয়দিন বন্ধ পেলাম আর ফেসবুকে লো কস্ট ট্রাভেল বিডি গ্রুপে ১৩ দিনের অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকিং এর ইভেন্ট দেখলাম তখন আর নিজেকে বেধে রাখতে পারলাম না। তাৎক্ষনিক এয়ার টিকেট করে ফেললাম হিমালায়া এয়ারলাইন্সে। আমার মতন ভুল কেউ করবেন না। যতই এক্সসাইটেড থাকেন না কেনো একটু সময় নিয়ে এয়ার টিকেট করবেন। প্রফেশনাল ট্রেকিং যারা করে থাকেন তারা অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকিং কে ইন্টারমিডিয়েট লেভেল এর বলে থাকেন। মানে এটা খুব বেশি কঠিন ও না আবার খুব বেশি সহজ ও না। যদি আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে বলবো Back off!!! অনেক বেশি মনের জোর দরকার হবে আপনার এই যাত্রায়। Read More

হার

পান্ডুলিপি

তোমার জন্য সবে মাত্র স্বপ্ন সাজানো শুরু করেছিলাম
কিন্তু তোমার স্বপ্নেরা এতো এলো মেলো
সাজানোই গেলোনা স্বপ্নদের
তারপর একটা বিরতি নিয়ে শুরু করেছিলাম শব্দচয়ন
তীব্র প্রেমের মহাকাব্য লিখবো বলে Read More

ইচ্ছে

বৃষ্টি পড়ছিলো অসময়ে মুষলধারে
ক্যাটস অ্যান্ড ডগস বলো যাকে তোমরা
আগে এক দৌড়ে চলে যেতাম ছাদে কিংবা রাস্তায়
ভিজতে ভিজতে জ্বর এসে পরতো কোন কোন দিন
এখন আর ভিজি না, ইচ্ছে করেনা।
ইচ্ছে করেনা বোগেনভিলিয়ার রঙিন পাতা ছিড়তে
ইচ্ছে করেনা সূর্যাস্তের আগে মাঠে খরগোশের মতন দৌড়াতে
ইচ্ছে করেনা বন্ধুর কাধে হাত রেখে বেঞ্চিতে বসে থাকতে
আর ইচ্ছে করেনা বেলা বোসের সাথে লালনীল সংসার পাততে
ইচ্ছে করেনা নীলাঞ্জনার জন্য দাম দিয়ে যন্ত্রনা কিনতে
ইচ্ছেই করেনা হারানো শৈশবে ফিরে যেতে
ইচ্ছে করেনা বৈশাখী মেলা থেকে বাতাসা কিনতে
ইচ্ছে করেনা নৌকায় শুয়ে রাতের বেলা জ্যোৎস্না দেখতে
ইচ্ছে করেনা চুরি করে লুডো খেলায় জিততে Read More

IMG_8771

তুমি ডাকলে না

ফিরে আসতাম পাহাড়ের পাদদেশ থেকেই
অত বড় পাহাড়টায় চড়তে ভয় লাগছিলো
বার বার ফিরে তাকাতে ইচ্ছা করছিলো
খুব করে চাইছিলাম তুমি একবার ডাকো
বারণ করো পাহাড়টায় চড়তে
তুমি ডাকলে না …… Read More

কবি

বিসর্জনের দুঃখ

শহরে সেদিন ছিলো আনন্দের জোয়ার
সারি সারি ট্রাক দাঁড়ানো ছিল সব অলিতে গলিতে
মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীরা আজকে কোন আবর্জনা সংগ্রহ করবে না
আজকে তারা সবার দুঃখ সংগ্রহ করবে
সবার দুঃখ বোঝাই ট্রাকগুলো চলে যাবে বিকালের আগেই
আজকের পর শহরে কারোও কোন পুরনো দুঃখ থাকবেনা
ঠিক এমনটাই ওয়াদা করেছিলো সরকার শেষ নির্বাচনে
আজ সরকার সে নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করতে চলেছে
ট্রাকগুলো দুঃখ নিয়ে অনেক দূরে নদীতে ফেলে দিয়ে আসবে
অবশেষে একটা গতি হবে কষ্ট গুলোর
বুকের ভিতর তীব্র যন্ত্রনায় আর পচতে হবে না।
আস্তে আস্তে সবার দুঃখগুলো দিয়ে বোঝাই করা হলো ট্রাকগুলো
সব ট্রাক চলে যাবার পরেই নিস্তব্ধ হয়ে পরলো পুরো শহর
দুঃখগুলো ছাড়া জীবন কেমন হবে কেউ কখনোই ভাবেনি
জীবনের এতো বড় অংশ জুড়ে ছিল কষ্টেরা জানতোই না কেউ।
একটু পরেই সূর্যাস্ত
বিষণ্ণ শেষ বিকালের আলোয় দুখই তো অক্সিজেন
তাই নদীতে বিসর্জনের আগেই থামতে হয় ট্রাকগুলোকে
ফিরিয়ে দিতে হয়েছিলো সবার কষ্ট
সব শেষে নদীর তীরে পরে থাকে অসংখ্য শূন্য ট্রাক
শহরবাসীরা পরম যত্নে আগলে নেয় দুঃখ গুলোকে
সূর্যটাও অস্ত যায় কি করুন বিষণ্ণতায়।