বিশ্ব মধ্যবিত্ত দিবস

মধ্যবিত্তের সন্তানেরা সাধারনত পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে না। ছেঁকা খায়া দুই চার দিন হয়তো মদ গাজা খেয়ে পড়ে থাকে কিন্তু বিবেকহীন হওয়া এদের পক্ষে সম্ভব হয় না। পরিবারের অনেক চাওয়ার নিচে চাপা পড়ে থাকে বলেই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এরা ফিরে আসে। শত কষ্ট হলেও ফিরে আসতে হয়। জীবনে অনেক না পাওয়া থাকে আমাদের। তাই কখনো পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলাতে যাই না আমরা। মধ্যবিত্তের উন্নতির জন্য নেয়া হয় না কোন সরকারি পদক্ষেপ। এক দিক থেকে বলতে গেলে এরা রাস্তার মানুষ গুলার চেয়েও বেশি অসহায়। বস্তি কিংবা ফুটপাথের মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন NGO আর সংস্থা কাজ করে। কিন্তু মধ্যবিত্তদের জন্য কেউ নেই। আমার মনে হয় বছরে একটা দিন থাকা উচিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য। বিশ্ব মধ্যবিত্ত দিবস। এই দিনে একটা টিভি চ্যানেল একজন মধ্যবিত্তের দুঃখ গুলো শুনাক সবাইকে। গাধার মতন ঘানি টানার জন্য আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছা করে না। বাচার জন্য এখন দরকার নতুন কোন নিয়ামক। 
বাবা বলে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেই এক দিন টা কবে সেটা আর বলতে পারে না। একদিন হয়তো আমিও আমার সন্তান কে বলব একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে … সত্যি ঠিক হয়ে যাবে …

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হাওয়ার সুবাদে আমি এখন অনেক ভাল অভিনেতা। শুধু আমি না , সত্যিকারের মধ্যবিত্ত সমাজের সবাই খুব পাকা অভিনেতা। হাজারটা কষ্টের মাঝে এরা জানে কিভাবে হাসিমুখে বলতে হয় ভাল আছি। এদের থাকে অল্প টাকায় সব কিছু সামলানোর অসাধারণ প্রতিভা। ছোটবেলা থেকে শুরু হয় আমাদের না পাওয়ার গল্প। বন্ধুদের দেখেছি দামি খেলনা নিয়ে খেলতে আর আমি শুধু খেলনার স্বপ্নই দেখে যেতাম। আমার ভীষণ মধ্যবিত্ত বাবার সামর্থ্য ছিলোনা আমাকে একটা খেলনা রোবট কিংবা একটা ভাল রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি কিনে দেয়। বুকে কষ্ট থাকলেও মুখে কিন্তু হাসি ঠিকই ছিল। একটা কম্পিউটারের সখ ছিল কিন্তু বাবার সামর্থ্য ছিলোনা। শুধু বই পড়েই দিন কাটতো। মনে হত বড় হয়ে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাই চাইতাম তাড়াতাড়ি বড় হতে। বড় হাওয়ার পর বুঝলাম মধ্যবিত্তের অভিশাপ থেকে বের হওয়া সম্ভব না। কারাগারে থাকার মতন একটা বন্দি জীবন পার করতে হয় আমাদের। সব কিছুতেই চিন্তা করতে হয় লোকে কি বলবে। বছরের পর বছর বেকার থাকলেও একটা চা সিগারেটের দোকান খুলে দুই পয়সা আয় করতে পারে না এরা। প্রেম ভালবাসায় ও থাকে অনেক হিসাব নিকাশ। খুব কম মধ্যবিত্ত ছেলেই ভালবাসায় সফল হতে পারে। আমার সাবেক প্রেমিকার মা তো মুখের উপরেই বলে দিয়ে ছিল তোমার বাবার ঢাকায় একটা বাড়ি থাকলে আমার মেয়েকে আজকেই তোমার সাথে বিয়ে দিতাম! অসংখ্য স্বপ্ন ভেঙ্গেছে কিন্তু আমার মুখের সেই হাসি টা কিন্তু এখনো টিকে আছে Read More

প্রেম

আমি একটা মিক্সড জেনারেশনের মানুষ। ৯০ এর দিকে জীবনটা পুরাই অন্যরকম ছিলো। ক্যাসেট প্লেয়ার আর বিটিভি ছিল প্রধান মনোরঞ্জনের উৎস। বড় ভাইবোন দের প্রেমের কাহিনী গুলাও অনেক জোস ছিল। মোবাইল, ফেসবুক ইত্যাদি না থাকার জন্য তাদের প্রেম অনেক গভীর আর শক্ত ছিল । কথায় কথায় ব্রেকআপ আর হুকআপ হইত না। বাসায় মুরুব্বীদের নজর এড়িয়ে ল্যান্ডফোনে বেশিক্ষণ কথাও বলা যেত না।ল্যান্ডফোনে ফোন করাও ছিল আরেকটা Read More

চোর

চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুনে অর্ধেক গোসল সেরেই ভেজা লুঙ্গি পড়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলেন মতিন সাহেব। চোর ধরা পরেছে তার বাড়িতে। সিকিউরিটি গার্ডের ক্রমাগত লাঠির বাড়ি পরছে চোরের পিঠে আর পায়ে। মতিন সাহেবের নতুন কিনা প্রিমিয়ো গাড়ীর লুকিং গ্লাস চুরি করার চেষ্টা করছিল। নিচে নেমে মুহূর্তেই তিনি রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। লুকিং গ্লাস খুলতে গিয়ে একটা দাগ ও ফেলে দিয়েছে হারামজাদা তার নতুন গাড়িতে। রাগকে আর নিয়ন্ত্রন করতে পারলেন না। লাথি দিয়ে ফেলে দিলেন অভুক্ত শরীরটাকে। মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এলো কিন্তু লাথি মারা থামালেন না। পিছন থেকে সিকিউরিটি গার্ডের মন্তব্য “মারেন স্যার, মারেন। হালায় ইচ্ছা কইরা রক্ত বাইর করছে মুখ দিয়া।”

Read More

আমি ভাল আছি

একটা আধভাঙ্গা ক্যাসেট প্লেয়ার, সাথে অঞ্জন দত্ত, মান্না দে, হেমন্ত, নচিকেতা, জেমস, বাচ্চু এর কয়েকটা ক্যাসেট। আর রাতের বেলা কিছু বাংলায় ডাব করা টিভি শো। কিন্তু এত কম বিনোদনের মাঝে থেকেও দিন গুলো আমার অস্বাভাবিক সুন্দর ছিলো। কোথায় হারায় গেলো দিনগুলা। আমি জানি না। এখন সকালে ঘুম থেকে উঠি এক গাদা যন্ত্রণা আর টেনশন নিয়ে। যন্ত্রণাগুলো ব্লক করার কোন সফটওয়ার যদি ইন্সটল করতে পারতাম মাথায়। আর কিচ্ছু ভালো লাগে না এখন। লোডশেডিং ও উপভোগ করতাম। পুরো পাড়া অন্ধকার হয়ে যেত। আকাশ দেখা যেত সুন্দর করে। এখন জেনারেটরের জালায় লোডশেডিং তাও বুঝি না। মাথায় কোন টেনশন ছিল না। মোটা একটা চশমা পরতাম। খুলে গেলে কিছুই দেখতাম না। তাও কতো রঙিন ছিলো সময়গুলো। প্রথম প্রথম সিগারেট খাওয়া শিখার পর কতো কাহিনী। মনে হতো অনেক বড় হয়ে গেছি। বুঝিনি বড় হওয়ার সাথে সাথে কমে যেতে থাকে চোখের জল। পাহাড় সমান যন্ত্রণা আর কষ্ট নিয়ে হাসি মুখে বলতে হয় ভালো আছি। আমি ভাল আছি।

আকাশগঙ্গা

প্রায় প্রতি রাতে ছাইপাশ লিখি ফেসবুকে। কেউ পড়ে বলেও মনে হয় না। কিন্তু ভাল্লাগে লিখতে। আজকেও লিখবো । যা ইচ্ছা লিখবো। আমার মনে হয় তুই আমার লিখা পড়িস মাঝে মাঝে। খুব জানতে ইচ্ছা করে কেমন আছিস। ভয় লাগে ফোন দিতে। নিজের উপর কন্ট্রোল হারায় ফেলি। পাগলের মতন মনে হয়। প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। কোনমতে একটা সিগারেট ধরাই। আস্তে আস্তে সব শান্ত হয়ে আসে। তখন হাসি পায়। আমি আসলেই একটা অপদার্থ। সামান্য কষ্ট থেকে বের হতে পারিনা। জীবনটা কোন দিকে যাচ্ছে কে জানে। চিন্তা করতেও ইচ্ছা করেনা। তোর মত হতে ইচ্ছা করে। পারিনা হতে। জানিনা কবে মুক্তি পাবো। আদৌ পাবো কিনা কে জানে। শহুরে জীবন থেকে মুক্তি পেতে ইচ্ছা করে। সেন্ট মারটিনে বসে সারারাত যদি আকাশগঙ্গা দেখতে পারতাম … কোন চাওয়াই পুরন হোল না। বসে বসে তাই সিগারেট টানাই বেটার। সিগারেট এর ধোয়া দিয়ে ঘর ভর্তি করার একটা অমানুষিক আনন্দ আছে

কেমিক্যাল লোচা

মাঝে মাঝে মাথায় কেমিক্যাল লোচা হয়। মনে হয় তুই সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আমার কাছে চলে এসেছিস। শহরের কোন একটা চিপায় ছোট্ট একটা বাসায় আমরা আগোছালো একটা সংসার শুরু করেছি। আরও কত কি! রাতের বেলা দুজন হাত ধরে ছাদে হাঁটছি। কিন্তু চোখ খুললেই ঘোর কেটে যায়। নিজেকে ঠিকই ছাদে পাই তবে একা। হাতে জলন্ত সিগারেট। চারপাশে সাজানো বাগান, শুধু আমি একাই ক্লান্ত। ঘুম ঘুম ভাব কিন্তু ঘুম আসেনা। কতো সহস্র বার তোর মোবাইলে কল দিয়ে যে কেটে দেই। মাঝে মাঝে তাও কল ঢুকে যায়, তখন তুই কেটে দিস। আস্তে আস্তে লাইফ ও কেটে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে ভাবি কষ্টের রঙ নীল কেন? আকাশের রঙও তো নীল। আকাশের কি অনেক কষ্ট ? আজাইরা চিন্তায় মাথাটা ভারি হয়ে থাকে। এই পিছুটান আমার আর ভাল্লাগেনা। আমি জানি একদিন তুই আমারে খুজবি। বাজেভাবে আমারে চাইবি। সত্যি আসবে সেই দিন, সত্যি আসবে ……

কক্ষনো না

তিন গোয়েন্দা, ফেলুদা, জুল্ভারন, শার্লক হোমস, কাকা বাবুর সাথে ভালই কাটছিল আমার দিনগুলো। কখনো ফেলুদার সাথে তোপসে হয়ে কেস সল্ভ করতে ইচ্ছা করতো, কখনো বা ওয়াটসন হয়ে শার্লক হোমসের সাথে। বাসায় বন্দি থাকতাম কিন্তু আমার দুনিয়াটা অনেক বড় ছিল। নষ্ট ছিলাম না আমি। ফ্যান্টাসিতে চলে যেতাম নর্থ পোল কিনবা হিমালয়ের চূড়ায়। কল্পনায় আমার বাসা ছিল মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ডে। কখনো অলিভার টুইস্ট কিংবা লা-মিজারেবল পড়ে দু ফোটা পানি পরতো চোখ দিয়ে। কোন একটা বই পড়া শেষ হয়ে গেলে আজব অনুভূতি হত। দুঃখ আর সুখ মেশানো অনুভূতি। আস্তে আস্তে আরেকটু বড় হলাম। আমার দুনিয়া দখল করা শুরু করলো হিন্দি মুভি। আর চুরি করে একটা দুটা সিগারেট খাওয়া। তারপরও সুখি ছিলাম অনেক। যশ রাজের মুভি দেখে প্রেমে পরতে ইচ্ছা হত। কিন্তু বয়েজ স্কুল আর কলেজের আশীর্বাদে ছোট বয়েসে ওইরকম কোন অভিজ্ঞতা আমার হয়নি। প্রেমে পরলাম ভার্সিটি লাইফের তৃতীয় বর্ষে। খুবই ক্ষণস্থায়ী ছিল প্রেমের আনন্দটা আমার জন্য। জীবনটা এখন একটা দোজখে পরিনত হইসে। যদি একবার টাইম ট্রাভেল করে ছোট বেলায় ফিরে যেতে পারি তাহলে আমি কক্ষনো আর বড় হতাম না। কক্ষনো না

ভূমিকম্পের পর কি হয়

ভূমিকম্পের পর কি হয় খুব জানতে ইচ্ছা করতেসে। বেচে থাকা মানুষ গুলা কিভাবে সারভাইভ করে? কত দিন সময় লাগে নতুন করে বাসা বানায় সেই বাসায় যেতে? আমাদের মধ্যে থেকে কোন আত্মীয় কিংবা বন্ধু মারা গেলে কতো খারাপ লাগে। আর একসাথে কত বন্ধু আর আত্মীয় হারা হবো কয়েক মিনিটের মধ্যে। মোবাইলের নেটওয়ার্ক কি কাজ করবে? লাশ পচতে কত সময় নিবে কংক্রিটের নিচে? আর যদি আধ্মরা হয়ে বেঁচে থাকি তাহলে সাহায্য নিয়ে কে আসবে ঢাকায় ? কয় জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী জীবিত থাকবে সাহায্য করার জন্য ? তারা কি নিজেদের বন্ধু বান্ধব আর আত্মীয়দের কাছে আগে যাবে? গুন্ডা মাস্তান আর ডাকাত গুলা কি করবে? সোনা আর টাকা পয়সার কি সত্যি কোন মূল্য থাকবে তখন? কত দিনের জন্য বন্ধ হবে ঢাকা ভার্সিটি ? চাকুরেরা কি বেতন পাবে? too much questions

পিছুটান

রাত ১২ টা। নতুন বছরের তৃতীয় দিন শুরু। জীবনটা আগের মতই। শুধু বয়সটা বাড়ছে। নিজের সিগারেট খাওয়ার স্টামিনা দেখে নিজেই হতবাক হই। ঘর ভর্তি ধোঁয়া। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তোমার জন্য আর অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। তুই ভালো থাক। অনেক ভাল।আমিও একদিন ভালো থাকব। সত্যি ভালো হয়ে যাব। স্বপ্ন দেখি ভালো থাকার। জীবনটা আবার নতুন করে শুরু করার। কিন্তু ঘুমটা ভাঙলেই স্বপ্ন গুলও ভেঙ্গে যায় ঘুমের সাথে। শুরু হয় যন্ত্রণার জিবন।আমি ক্লান্ত। ফাইটব্যাক করার কোন শক্তি অবশিষ্ট নাই। এই পিছুটান আমার আর ভালো লাগে না। এত বেশি ভুল করে ফেলেছি আর সংশোধন সম্ভব না। জয়তু সিগারেট …… জয়তু কষ্টেরা ………