বরফ-আর-কষ্ট

বরফ

আজ বরফ পড়বে আমার শহরে
কি বিশ্বাস হয় না আমার কথা ?
সত্যি সত্যি বরফ পড়বে আজকে
ধুলোর উপরে থাকবে কয়েকইঞ্চি বরফের আস্তর
পরিচ্ছন্নকর্মীরা ব্যস্ত থাকবে তুষার পরিষ্কারে
হেসে উড়িয়ে দিলে আমার কথা ?
নাকি গুগোলে জলবায়ুর খবর নিচ্ছো ?
কিছুই পাবেনা, কেউ জানে না কিছুই
শুধু আমি জানি , আজকে যে বরফ পড়বেই এ শহরে
বুকের ভেতর জমে থাকা নীল কষ্টেরা আর কষ্ট নেই
পরিণত হয়েছে সাদা শুভ্র তুষারে
কষ্ট কি শুধু আমার একার ?
না একার না, তোমার কষ্ট, তার কষ্ট , সবার কষ্ট
এখন আর কষ্ট নেই , কোথাও কোন কষ্ট নেই Read More

-দত্ত-আমার-শোনা

আমার শোনা অঞ্জন দত্ত

তখন ইন্টারনেটের যুগ ছিলোনা। একটাই মাত্র চ্যানেল আসতো টিভিতে।  সময় কাটতো খুব ধীরে। স্কুলের পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বই পড়ার তীব্র নেশা। দুবাই প্রবাসী কোন এক ভাই একটা ক্যাসেট প্লেয়ার গিফট করলো। টাকা জমায় জমায় ক্যাসেট কেনা। রেডিও শোনা। এইতো চলছিল। বলছি নব্বই দশকের কথা। একদিন কারো কাছে থেকে ধার করে আনলাম অঞ্জন দত্তের একটা ক্যাসেট। নাম শুনতে কি চাও! মুগ্ধ হয়ে শুনতে লাগলাম গানগুলো। আমার জীবনে কোন রঞ্জনা ছিলোনা। কিন্তু বার বার শুনতে শুনতে কল্পানায় একজন রঞ্জনাকে ঠিকই পয়দা করে ফেলেছিলাম। ইশটিশনে বসে লজেন্স বিক্রি করা ছেলেটার দুঃখ ও ছুয়ে যেত কখনো কখনো। ক্যালসিয়াম গানটায় যেন এক প্রকার নিজেকেই খুজে পেলাম। ধন্যবাদ অঞ্জনদাকে , ছাদে গিয়ে কান্না ভুলে থাকার আইডিয়াটা দেয়ার জন্য। এখনো মাঝে মাঝে কাজে দেয়! বেলাবোসের কথা আর কি বলবো। জীবনের ফার্স্ট ক্রাশ ছিলো বেলা। যখন আলিবাবা নামের মুরগির দোকানে কাজ করা ছোট্ট সেই ছেলেটার কথা শুনতাম  কেমন যেন মন খারাপ হয়ে যেত। দার্জিলিং বেড়াতে যাওয়ার অনেক কিন্তু আমি দেখে ফেলেছিলাম। পুরো ‘শুনতে কি চাও’ অ্যালবামে একটা গানের আগা মাথা কিছুই বুঝিনি তখন। শুনতে কি চাও গানটার মানে। বুঝতাম না গানটার আসল মানে। বুঝেছি অনেক পরে। আসছি সে কথায়।

এর পর আস্তে আস্তে অনেকগুলো গান শোনা হয়ে গেলো অঞ্জনদার। সেই কেরানীর অফিসের লাভস্টোরি , প্রেমিকাকে বস ববি রায়ের সাথে চলে না যাওয়ার জন্য যে করুন মিনতি! কাঞ্চনজঙ্ঘা গানটায় এক থানার দারোয়ানের কি সুন্দর ভালোবাসার গল্প, যে কিনা তার পাহাড়ের ফেলে আসা বস্তিতে প্রেমিকাকে জানতে দিতে চায় না সে দারোয়ানের চাকুরী করে। জানি না কাঞ্চনজঙ্ঘায় শঙ্কর হোটেল নামে কোন হোটেল আছে কিনা। সেখানে কি সন্ধ্যায় হোটেল রুমে এখনো সেই মেয়ে চুল্লীটা জ্বালিয়ে দিতে আসে? খুব জানতে ইচ্ছে করে। চ্যাপ্টা গোলাপ গানটা এক্কেবারে জীবন থেকে যেন নেয়া। স্মার্টফোনের এই যুগে কোন কিশোরীর খাতার ভিতর কি আর গোলাপফুল কিংবা গোলাপের পাপড়ি থাকে? পনেরো তে আটকে থাকা সেই যে ছেলেটা, যে কিনা অপেক্ষায় বসে থাকে কবে তার বয়েসটা একটু বাড়বে যেন সে তার পছন্দের মানুষটাকে মনের কথা জানাবে বলে। জানি না সে আর পেরেছিলো কিনা। Read More

.jpg

যন্ত্রণা, ব্যর্থতা ও মৃত্যু

যন্ত্রণা মাপার কোন যন্ত্র নাই। মাথার মধ্যে ঘিলুর ভিতরে যন্ত্রণা মাপা যায় না। বলেও বোঝানো যায় না। ক্রমাগত হেরে যাওয়ার যন্ত্রণারা কুড়ে কুড়ে খায়। নিজের মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা ছাড়া আর তেমন কিছুই করার থাকেনা। ওটাও যে করতে মানা। মৃত্যু কে এখন আর ভয় লাগে না। খুব কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছা করে। স্পর্শ করতে ইচ্ছা করে। মনে হয় সব শান্তি ওখানেই লুকানো আছে। যা খাই সব বিস্বাদ, তেতো। শুধু সিগেরটটা ছাড়া। ওটাই যে শুধু জানান দেয় বুকের ভেতর ধক ধক করতে থাকা হৃদয়টার অস্তিত্ব। ক্যাফেইনের মতন কাজ করে এখন নিকোটিন। পুরো ফুসফুসটাই হয়তো টারে মাখানো। ভয় লাগে না। তবে এভাবে আরও বেচে থাকার কথা চিন্তা করলে শিউরে ওঠতে হয়। ভয়ঙ্কর রকমের ক্লান্ত যে আমি। উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটাও এখন আর নেই। জীবনে প্রথমবার ভালোবাসা হারানোর পর মনে হয়েছিলো এটার চেয়ে বেশি যন্ত্রণাদায়ক আর কিছু হতে পারেনা। বিধি বাম! ওটা যে ছিল কেবল টিজার ট্রেইলার। সম্ভবত ফুল মুভি এখনো শুরুই হয়নি। কতশত ছোট ছোট জমা স্বপ্ন যত্ন করে তোলা রাখা আছে। মাঝে মাঝে ফিরে তাকাই। আবার যন্ত্রণারা ঘিরে ধরে। ছোট হয়ে আসে নিঃশ্বাস। নিজেকে একটা মানব বোমার মতন মনে হয়। ভয় হয় যেকোন সময় ফেটে পড়বো। পড়লেও মন্দ হয় না। আগাছার মতন একটা জীবনের কই আসলেও কোন মানে আছে? এভাবে বেচে থাকার সত্যিকারের অর্থটা কি ?? কে জানে। আমি জানি না।

সময় ভেসে যায় | Somoy Vese Jay | Sweater | Keka Ghoshal | Ranajoy Bhattacharjee

একটা নদী
হঠাৎ যদি
হারিয়ে ফেলে
সাগরের নাও

কোন পাড়ে জল
ছুয়েছে অতল
কেন ছলছল
চোখ বোজা খাম।

মনের মহনা ছেয়ে
যে নদী গেছে বয়ে
হঠাৎ সে ডুবে যায় মনে। Read More

imrul-net

চোখের জলের রঙ

“চোখের জলের হয়না কোন রঙ !” কিশোর কুমার সাহেবের বিখ্যাত একটা গানের লাইন ছিলো এটা। পুরোপুরি সত্য না। তীব্র কষ্টের কান্নার রঙ লাল হয়। রিস্ট কেটে  আত্মহত্যা করা মানুষটার রক্তটা কিন্তু রক্ত না। তা অশ্রু। লাল রঙের অশ্রু। ঘন্টখানেক ছাদের রেলিঙে বসে যখন আর কোন উপায় না দেখে লাফিয়ে পড়া  ছেলেটির চারপাশে ছড়িয়ে পড়া লাল রঙের জিনিসটা কিন্তু অশ্রু। সাদা অশ্রু কেউ খেয়াল করে না, লাল টা করে। আগে মনে হতো শুধু রূপকথাতেই ভালো থাকা সম্ভব।  কিন্তু আমরা শুধু একটা সাইড ই পড়ি রূপকথার।  প্রতিটা গল্পেরই অন্ধকার পাশ থাকে একটা । আমরা জানি না। সব জায়গায় মোটিভেশন এর  ব্যাবসা। অন্ধকারের গল্পে মোটিভেশন থাকে না। থাকে কষ্টের আর্তনাদ।

যেন সারারাত ধরে কাল জমেছে শিশির | Ekai Bhalo | Shantilal O Projapoti Rohoshyo | Ritwick | Paoli | Pratim D. Gupta | Durnibar | Arko

যেন সারারাত ধরে কাল জমেছে শিশির,
দু’এক কণা কাশ পাতা চোখের কোলে স্থির,
তুমি এখন আলোয় আলো।

এলোমেলো পালকের ঘুম ভাঙা ডানা
উড়ে গেছে আদোরের মিথ্যে বাহানা,
বোধহয় আমি একাই ভালো,
আমি বোধহয় একাই ভালো। Read More

-কথা

নিঃসঙ্গতার কথা

অনেককেই অনেক কিছু বলা হয়নি। সব কিছু সবাইকে কে বলার মানে হয় না। তবু মনে হয় সময়মতো অনেকেই অনেক কিছু বলা হয়তো বলা উচিত ছিলো। একটা সময় বাচালের মতন অনর্গল কথা বলে যেতাম।  সম্বভত মনে অনেক সুখ থাকলে মানুষ অনেক কথা বলতে পারে। সুখ আর দুঃখের মধ্যে সব চেয়ে বড় তফাৎ হোল আমরা বুঝিনা যখন সুখে থাকি। কিন্তু দুঃখ গুলোকে খুব সহজেই আলাদা করে ফেলা যায়। যতই বড় হোক না কেন তোমার বন্ধু মহল , যতই তোমার স্ত্রী তোমাকে ভালবাসুক তুমি একা। সূর্যাস্তের সময় তুমি এটা অবশ্যই অনুভব করবে যদি কখনো মনযোগ দিয়ে সূর্যাস্ত দেখে থাকো। নদী তীরে কিংবা সৈকতে অথবা কোন উঁচু বাড়ির ছাদে। তুমি বুঝবে তুমি একা। মহান সৃষ্টিকর্তার মতই তুমি একা। তুমি একা মহাসড়কের মত। তুমি নিঃসঙ্গ সেই মাঠটার মতন , যেই মাঠটা পড়ে থাকে সন্ধ্যায় ছেলেরা খেলে চলে যাওয়ার পর। কিন্তু নিঃসঙ্গতাকে ভালোবাসতে হয়না। কিন্তু যদি ভালোবেসে ফেলো  তোমার আর কোন ফেরার পথ থাকবেনা। তোমাকে ফিরতে দিবেনা নিঃসঙ্গতা। রেখে দিবে তার সাথে। ট্রয় যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ওডিসিয়াস কে যেভাবে ক্যালিপ্সো রেখে দিয়েছিলো নির্জন দ্বীপে । সেভাবেই তোমাকে বেঁধে ফেলবে নিঃসঙ্গতা। ক্যান্সারের মতন ছড়িয়ে পড়বে পুরো মনে। কোন কেমোথেরাপি কাজ দিবে না তখন আর। শুধু তাকেই ভালোবাসতে হবে তখন। নিঃসঙ্গতা ঈর্ষাকাতর স্ত্রীর মতন। অন্য কারো সাথে তোমাকে সে পছন্দ করে না। তোমার পাখা থাকবে তখন কিন্তু তুমি হবে ঈগলের মতন। দলবেধে উড়ে বেড়ানো গাঙচিল না। অনেক উপর দিয়ে উড়বে তুমি। সবার থেকে দূরে। অন্য কাউকে ভালবাসতে চাইলেও পারবেনা। নিজেকেও না। ভালবাসতে হবে শুধু নিঃসঙ্গতাকে। নিঃসঙ্গতাও তোমাকে ভালোবাসবে। জীবনে হয়তো প্রথমবার সত্যিকারের ভালোবাসার স্বাদ পাবে তুমি। হেলা করো না তাকে। তাকে হেলা করা যায় না।

IMG_20181221_063211

নাবিক, প্রেম ও সমুদ্র

নাবিককে কখনো কোন নারীর প্রেমে পড়তে হয়না। নাবিক প্রেমে পড়বে সমুদ্রের। প্রিয়তমার খোলা চুলে নয়, সে ভালোবাসা খুঁজবে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ে। সংসারে বাধা পড়ার জন্য যে জন্ম হয়নি তার। জানিনা নাবিক সিন্দাবাদ কোনদিন প্রেমে পড়েছিল কিনা। কিন্তু তার প্রথম প্রেম যে ছিলো সমুদ্র সেটা যে বলার অপেক্ষা রাখে না। সমুদ্রের প্রেমে যে পড়বে তাকে অন্য কেউ ফেরাতে পারবে না। কোন নারীর চোখের ভাষা পড়তে না পারলেও রাতের তারা গুলো কিন্তু পড়তে কোন ভুল করেনা সে। কখনো কখনো সমুদ্রতাকে দু’হাত ভরে দেয়। কখনো বা কেড়েও নেয়। ঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙ্গে ডুবে যাওয়া জাহাজের একটা তক্তা ধরে জনমানবহীন কোন দ্বীপে হয়তো আশ্রয় হয় তার। কিন্তু সত্যিকারের নাবিক কখনো হাল ছেড়ে দেয় না। হয়তো সামান্য ভেলা বানিয়েই আবারো অনিশ্চত সমুদ্রে ঝাপ দেয় সে। নিজের চেয়েও ভালো চিনে সে সমুদ্রকে। নোনা জলের মাঝেই তার বসতবাড়ি। নোনা জলের মাঝেই তার জীবন।  জুল্ভার্নের অমর চরিত্র ক্যাপ্টেন নিমো সমুদ্রের প্রেমে বিভোর ছিল।  সাবমেরিন নটিলাসে চড়ে চষে বেড়িয়েছিলো পুরো পৃথিবী। সমুদ্র থেকে সবটুকু নিতে পেরেছিলো ক্যাপ্টেন নিমো। পেরেছিলো নাবিক সিন্দাবাদ ও। প্রায় প্রতিবার কোনমতে জীবন নিয়ে ফিরে আসা সিন্দাবাদ বার বার ফিরে গেছে সমুদ্রের কাছে। Read More

imrul-net

মূল্য

একটা ছোট্ট সুন্দর জীবনের জন্য ঠিক কতটা মূল্য দিতে হয় ? না ব্র্যান্ডের কোন জীবন না। শুরুটা তো ভালই ছিলো। জীবনে আমার কোন বিষয়েই তেমন একটা বিলাসিতা ছিলো না। না ছিলো তেমন আহামরি কোন চাহিদা। কিন্তু যন্ত্রনার পরিমান ক্রমাগত বেড়ে চলে। ভাঙতে ভাঙতে মনে হয় না জোড়া লাগার আর কোন পর্যায়ে আছি। ট্রেন যেন ষ্টেশনে পৌছানোর আগেই থেমে গেছে। চরম কোন সিদ্ধান্ত নিতেও ভয় লাগে। আচ্ছা তুই কেন আমার সাথে থাকিলিনা? তুই তো বুঝতিস আমাকে। জানিস আমার খুব ইচ্ছে করে আবার কারো প্রেমে পড়তে। কিন্তু ভয় ও লাগে অনেক। ইচ্ছে করেনা তখন। আমি তো চাইনি এই জীবন। পালাতেও পারিনা। বাস্তবতা আমাকে পালাতে দেয় না। গুনে গুনে অনেক গুলা বছর পার করে দিলাম জীবনের। বার্ধক্য হাতছানি দিচ্ছে। যে পরিমান নিকোটিন এই ফুসফুসে জমেছে তাতে আর কত দিন টিকবো সেটা বলা কষ্ট। কিন্তু বুঝতে পারি খুব বেশি বাকি নেই। মাঝে মাঝেই তোকে স্বপ্নে দেখতাম আগে। খুব কষ্ট হত তখন। এখন আর দেখিনা। সেই কষ্টের অনুভূতি টাকেও যেন খুব মিস করি। অনুভূতি গুলো খুব অদ্ভুত। কষ্টকেও কেন এত ভালো লাগে। অনেক গল্প বলার আছে তোকে। তোর অনেক গল্পও শুনতে ইচ্ছা করে। থেমে থাকা এই জীবনটা আর টানা যাচ্ছে না। Read More

imrul_net

ধোয়া, নিকোটিন ও অন্যান্য

ধোঁয়া হতে ইচ্ছা করে খুব। গাড়ির ধোঁয়া না, পবিত্র আগর বাতির ধোঁয়াও না। সিগারেটের ধোঁয়া হব আমি। কোন ব্যর্থ প্রেমিকের দুআঙুলের ফাকে জ্বলন্ত গোল্ডলিফের ধোঁয়া। তার ভিজে ওঠা ঝাপসা চোখে ধোঁয়া গিয়ে কিছুটা জ্বালা-পোড়া করবো। হয়তো কোন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে দিতে ক্লান্ত আত্থহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া বেকার যুবকের হাতের শেষ সিগারেটের ধোঁয়াটা হব। সিগারেটের ধোঁয়া মিলিয়ে যাওয়ার আগেই হয়তো গলায় ফাঁসটা পরে নিবে সে। পরকীয়ায় ভেঙ্গে যাওয়া কোন সংসারের সেই Read More