প্রিয় বন্ধু – অঞ্জন দত্ত এবং নিমা খান ( ফুল স্ক্রিপ্ট – Full Script) পার্ট ওয়ান [Part-1]

Spread the love

প্রিয় বন্ধু – অঞ্জন দত্ত এবং নিমা খান ( ফুল স্ক্রিপ্ট)

ভালবাসা মানে ধোয়া ছাড়ার প্রতিশ্রুতি
ভালবাসা মানে এলো চুল মাতোয়ারা
ভালাবাসা সময় থামার আগে
ভালবাসা তোমার শুরু আমার সারা ……

Dear Asma Chowdhury Joyeeta,
I had taken a bet with the other boys in the class that you are not hot headed as you you look like. So I said I will them by eating tiffin from your box. If you don’t I will lose rupees 10. Please just one time only! I will let you copy from my mathematics homework also.
– Arnob Chaterjee

Arnob Chaterjee,
You big fat fool. Don’t ever put anymore letters in my bag. don’t ever touch my bag. Or I will report to the principal and break your hand. I don’t want your homework. I don’t copy from others. An d I don’t eat other people’s এঁটো। Go to hell.

Asma Chowdhury Joyeeta,
What has happened ? why you crying? I don’t like you to cry. Please tell.

Arnob Chaterjee,
I don’t care what others think about me. don’t come to school for others. I come for myself. Anyway, my দাদী has died. I loved her very much. Joyeeta

Dear Asma Chowdhury Joyeeta,
I am very sorry to hear of paasing away of your দাদী. I know how much you are feeling inside your heart only to see someone in front of your eyes only (না). But everybody has to die someday (না). So try and look at the better side of life.
.
Arnob Chaterjee,
Thanks for your letter. anyway my দাদী didn’t die in front of my eyes. She had gone to Dhaka to visit my ফুপু . আব্বা had to go over and do all the funeral work. And one more thing you are very bad at spellings. বাংলায় লিখো না কেন বাবা !

♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ………
ভালো লাগে স্বপ্নের মায়া জাল বুনতে
ভালো লাগে ওই আকাশের তারা গুনতে
ভালো লাগে মেঘলা দিনে নিষ্পলকে রামধনু খুঁজতে
বন্ধু … বন্ধু …

ভালো লাগে স্বপ্নের মায়া জাল বুনতে
ভালো লাগে ওই আকাশের তারা গুনতে
ভালো লাগে মেঘলা দিনে নিষ্পলকে রামধনু খুঁজতে
বন্ধু … বন্ধু …

তক্কো করে লিখতে বসা কষ্টে শিষ্টে গান লিখা আনকোরা
লাগামহীন সপ্তসুরে ছুটে ফিরে যেন সাতটা ঘোড়া
তক্কো করে লিখতে বসা কষ্টে শিষ্টে গান লিখা আনকোরা
লাগামহীন সপ্তসুরে ছুটে ফিরে যেন সাতটা ঘোড়া
বুঝি তাও তবু মন উধাও
বুঝি তাও তবু মন উধাও …
তার কথা ভাবি শুধু গিটারের কল্পনাতে

ভালো লাগে স্বপ্নের মায়া জাল বুনতে
ভালো লাগে ওই আকাশের তারা গুনতে
ভালো লাগে মেঘলা দিনে নিষ্পলকে রামধনু খুঁজতে
বন্ধু … বন্ধু …

মুখোমুখি বসে বসে থাকা টিক টিক সময়টা বয়ে যায়
চুম্বন সিগারেট বাস্তবেতে আসলেতা পুরে যায়
মুখোমুখি বসে বসে থাকা টিক টিক সময়টা বয়ে যায়
চুম্বন সিগারেট বাস্তবেতে আসলেতা পুরে যায়
বুঝি তাও তবু মন উধাও
বুঝি তাও তবু মন উধাও …
তার কথা ভাবি শুধু গিটারের কল্পনাতে

ভালো লাগে স্বপ্নের মায়া জাল বুনতে
ভালো লাগে ওই আকাশের তারা গুনতে
ভালো লাগে মেঘলা দিনে নিষ্পলকে রামধনু খুঁজতে
বন্ধু … বন্ধু …
♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……

Dear Joyeeta,
একটা খুব বাজে খবর আছে। এবার নিউ ইয়ারে আমি থাকতে পারছিনা। মার হটাত খেয়াল হয়েছে পুরির জগন্নাথের মন্দিরে গিয়ে পুজো দেবে। বাড়ির সবাই ব্যাস্ত তাই আমার উপর ভার পড়েছে মাকে সামলাবার। পুরো পাঁচদিন। ২৮,২৯,৩০,৩১,১। তোমার বাড়ির নিউ ইয়ারের পার্টিতে আর যাওয়া হোল না । আমার খুব ইচ্ছে ছিল এই সুযোগে তোমার অত বড় বাড়িটায় ঢোকার। যাই হক গিটারটা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। একটা পুরো গান লিখে নিয়ে আসবো। আর শোন যদি পার্টিতে নিহার কে ইনভাইট করে থাক তাহলে খুব সাবধান। ও তোমার পিছনে তোমার নামে রিউমরস ছড়ায়।

অর্ণব,
মেরি ক্রিসমাস অ্যান্ড হ্যাপি নিউ ইয়ার। P.S. নিহার মোটেই আমার নামে রিউমরস স্প্রেড করে না। ও বলেছে স্কুল খুল্লেই তোমার দাঁত ভেঙ্গে দেবে। মিথ্যে কথা বলার জন্য। এনি অয়ে, আমারও একটা খারাপ খবর আছে। বাবা দিল্লি তে বদলি হয়ে যাচ্ছে। Which means we are all going to Delhi. কি আর করা যাবে বল? I write to you from delhi. – জয়ী

তোমার বাবা একটা ইডিয়ট। আর তোমার আব্বা যাবে যাক , তোমাকে যেতে হবে কেন? প্লিজ জয়ীতা যেভাবে হোক দিল্লি যেওনা। তোমার কে এক ফুপু না নানা যেন কোলকাতা থাকে না? তার কাছে গিয়ে থাকও। দিল্লি খুব খাজা জায়গা।

Dear Arnob,
Delhi is super. আমরা গ্রেটার কৈলাসে থাকছি। কোম্পানি থেকে বাবাকে একটা পুরো পেন্ট হাউজ দিয়েছে। দোতালার উপর। ফ্যান্টাস্টিক ভিউ। এখানে চারিদিকে প্রচুর সবুজ। প্রচুর স্পেস। আর সব কিছু ভীষণ ওয়েল প্লান্ড। কোলকাতার মতন নোংরা নেই, পলুসন নেই। আর সব চেয়ে ইম্পরট্যান্ট ফকির নেই। একচুয়ালি আব্বার কোন অল্টারনেটিভ ছিল না। কোলকাতার যে অবস্থা। খালি খুনোখুনি, মারামারি, কারফিউ , নো ফিউচার। রোজ তো কাগজে পড়ি। বরানগর, দমদম এসব জায়গায় ছেলেরা নাকি অপেনলি রিভলবার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। Is it true? বাবা বলে ওখানে থাকলে আমার পড়াশোনার বারোটা বেজে যেত। যাই হোক। আমি জহউরলাল নেহেরু ইউনিভারসিটিতে ভর্তি হয়েছি। ইংলিশে অনার্স। দারুণ ক্যাম্পাস। সবাই ভীষণ ফ্রেন্ডলি। সুধাকার নামে একটা ছেলের সাথে আমার আলাপ হয়েছে। তামিলিয়ান। তোমার মতই গিটার বাজায়। তবে ক্লাসিক্যাল গিটার। একদম হিন্দি জানে না।ভীষণ কিউট। ভীষণ অ্যাডভেঞ্চারাস আর ভীষণ ডেয়ারিন। একদিন না ও আমাকে সিগারেট খাইয়েছে। যন্তরমন্তরের ভিতর। It was crazy! না পুজোতে কলকাতা যেতে পারছিনা। আমরা কলেজের কয়েকজন মিলে আগ্রা যাচ্ছি। আগ্রা থেকে লিখবো। বাই

আমি তোমার সুধাকরের দাঁত ভেঙ্গে দেবো। এত বড় সাহস তোমায় সিগারেট খাওয়ায়। জয়ী, আসলে দিল্লি গিয়ে তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তুমি আগ্রা যাবে না। সুধাকরের সাথে আর কি কি করেছো এক্ষণই জানাও। তোমার আব্বাটাই যত নষ্টের গোরা। দুম করে দিল্লিতে ট্রান্সফার নেবার কি ছিল? তোমার নিজেরও একটা মান সম্মান নেই ? দুম করে যার তার সাথে প্রেম কর ? শোন, প্রেম অত সস্তা জিনিশ নয় যে দুম কওরে করা যাবে। প্লিজ জয়িতা ছেলেমানুষি করো না। এবার পুজোয় না এলে আমি তোমায় কোন দিন চিঠি লিখবোনা।

ডিয়ার অর্ণব,
আগ্রা থেকে লিখছি। খুব রাগ করবে জানি , But let me tell you this এই জায়গাটা ফ্যাভ। না তাজমহলের জন্য নয়, ফাতেহপুর সিক্রু , আমি শ্রুতি, ফাসোয়া, আর ৪ বন্ধু, লিখে বা বলে বোঝানো যায় না। বাই দ্যা ওয়ে তোমার অত জ্ঞান দেবার কোন প্রয়োজন নেই। I am quite capable of choosing my friends and looking after myself. আর কে বলেছে প্রেমে পরতে গেলে সময় লাগে? যে যার নিজের মত করে প্রেম করে। For your kind information সুধীর সাথে প্রেম করেছি একবার। ওর হোস্টেলের ঘরে। Thts all. এর চেয়ে বেশি কিছু হয়নি। আর প্রেম করেছি বলেই যে তাকে বিয়ে করতে হবে এমন তো কোন কথা নেই ! সব সম্পর্ক এক রকম হয় না অর্ণব। যেমন তোমার সাথে আমার সম্পর্ক। তুমি আমার বন্ধু। My best friend. তোমার কাছে আমি সব খুলে বলতে পারি। তার মানে তোমার মতন একটা ক্যাবলাকে আমি বিয়ে করবো? যাই হোক রাগ কমলে চিঠি দিয়ো।

ডিয়ার ডিয়ার ন্যাবা,
এবার থেকে আমি তোমাকে ন্যাবা বলেই ডাকবো। কি রাগ রে। এখনো রেগে আছ? I am going crazy. সিগারেট আরও বেড়ে গেছে। গাজাও ধরেছি। কিচ্ছু ভালো লাগে না। কলেজে যাই না। প্লিজ রাইট ন্যাবা। চিঠি না লিখো, একটা গান লিখে পাঠাও। তাই পড়ি। আচ্ছা তুমি কি সত্যি সত্যি রেগে আছো ? নাকি অন্য কারো সাথে প্রেম করছ ? যদি করে থাকো উইশ ইউ ওল দ্যা লাক। তুমি চিঠি না লিখলে আমি দুম করে কলকাতা গিয়ে তোমার প্রেমিকার নাক ভেঙ্গে দিবো ? বুঝলে ?

আসমা চৌধুরী জঈতা,
তোমার প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে না। না আমি কারো সাথে প্রেম করছিনা। দ্বিতীয়ত তোমাকে কলকাতায় আসতে হবে না। প্রেমের মতন কোন দুম করে গান আমি লিখতে পারিনা। একটা অনেক দিনের পুরনো গান লিখে পাঠালাম। মনে হয় তোমার ভালো লাগবে।

♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……
আজও আছে সেই সূর্য্যি ডোবানো দিন
আজো আছে সেই নকশি কাঁথার মাঠ
আছে চাড়ায় চোখ রেখে মিছে স্বপ্ন দেখা
আছে চিলে কোঠার ঘরে কিছু ইচ্ছে রাখা
দুরে চলে গেছে বহু দুরে
বুঝতে পারিনি কত দুরে
অ্যালবামের মাঝে দিন গুলো হারিয়ে গেছে
সেই বর্ষায় হাঁটুজলে রাস্তাটা আজ কোথায় আছে
জানি না আমি জানি না
আজো যেতে চাই ঘুম পরীর দেশে
আজো যেতে চাই সেই চাদের পাহাড়
আছে চাদের মাঝে চরকা পরীর চাকা
আছে তেপান্তরের মাঠে কিছু স্বপ্ন রাখা
দুরে চলে গেছে বহু দুরে
বুঝতে পারিনি কত দুরে
অ্যালবামের মাঝে দিন গুলো হারিয়ে গেছে
সেই গ্রীষ্মের দুপুর গুলো কেন বদলে গেছে
জানি না আমি জানি না
♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……

শুনলে হয়তো খুশি হবে। আমি একটা চাকরি পেয়েছি। খুব ছোট সংস্থা । কমলা এজেন্সি। আমি একমাত্র কপি রাইটার। মাসে দুই হাজার টাকা। এটাই আমার কাছে অনেক। দাদার একার ইনকামে তো এত বড় সংসার টা চলতে পারেনা। দুম করে চাকরিটা নিয়ে ফেললাম। সাবান, তেল, শ্যাম্পু এসব নিয়ে ছড়া লিখছি। ভালো লাগছে। তোমার কথাই ঠিক। আমার দ্বারা গান-ফান আর হবে না। আসলে ব্যাসিকালি মধ্যবিত্ত তো। তাই সংসার, ঘর এসব থেকে আর মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারলাম না। যাই হোক, নিহারের সাথে হটাত দেখা হোল। ক্লাস সিক্সের সেই দুষ্টু ছেলেটা এখন ডানলোপের অ্যাসিস্ট্যান্ট পিআর. হয়ে গেছে। ওর কাছেই শুনলাম তোমার নাকি বিয়ে? ছেলেটা কে? শুনলাম তোমার আব্বাই জোগাড় করে এনেছে ? নিশ্চয়ই দারুণ দেখতে? দারুণ স্মার্ট ? খুব ভালো ইংরেজি বলে? কবে বিয়ে জানিয়ো। আমার তো যাওয়া , খাওয়া কোনটাই হবে না। তাই একটা দারুণ ভালো গান লিখে পাঠাবো।

ন্যাবা,
তুমি একটা ছাগল আর তোমার নিহার একটা গরু। তোমরা কি করে ভাবলে আমি আমার আব্বার ইচ্ছায় বিয়ে করব ? আব্বা is doing this just is an act of vengence. কেন জানো ? আমি পড়াশোনা করতে টেক্সাসে যাইনি বলে। তাই অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসের একটা অফিসারকে ধরে এনে আমার বিয়ে দেবার চেষ্টা করছিলো। I met him. ভীষণ ভদ্র আর ভীষণ বোরিং। আমাকে বিয়ে করার থেকে He is more keen to getting transfer in Hong-Kong. আমাকে একদিন ইনভাইট করেছিল। ডিনারে। দিল্লি জিমখানায়। আমি গিয়ে কি বলেছি জানো ? বলেছি আমি গাজা ছাড়া বাচতেই পারিনা। ব্যাস বিয়ে ভেস্তে গেলো। গাজা খাওয়াটা এত দিন পর কাজে লাগলো। যাই হক, বাড়িটা is becoming a nightmare. ভাবছি ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে ফুপুর কাছে থাকবো। একদিন ডেস্পারেট হয়ে গিয়ে ফুপুকে একটা চিঠিও লিখে ফেলেছিলাম। ন্যাবা, শুনলাম ওখানকার সিচুয়াশন নাকি আরও খারাপ। একবারে সরাসরি ওয়ার ? মুক্তিযুদ্ধ ? ওরা নাকি স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে? এখান থেকে কাউকে যেতে দিচ্ছে না ? কি হচ্ছে বল চারিদিকে ? Do you understand? I don’t want to understand. I know বাড়িটা is becoming insufferable আর আমার গাজা খাওয়া আর ঘুমের ওষুধ খাওয়া বেড়ে যাচ্ছে। The world doesn’t matter to me.

জঈতা,
গতকাল তোমার চিঠি পেয়েছি। প্রথমত তোমায় বিশাল বড় একটা কংগ্রাচুলেশনস। নিজের বিয়ে একা তোমায় ভেঙ্গে দেবার সাহস আছে জেনে অনেক এক্সসাইটেড লাগছে। আমিও গত কাল একা সাহস করে কি করেছি জান ? ধর্মতলার একটা বারে গিয়ে জিন খেয়েছি। চার পেগ। বড় পেগ। জীবনে প্রথম। একা একা। তার পর ভিক্টরিয়াল মেমোরিয়ালএ গিয়ে একটা ঘোড়ার গাড়িতে উঠে পরলাম। বৃষ্টিতে ভিজলাম। সে এক দারুণ অনুভূতি।

ন্যাবা,
এবার একটা বিয়ে কর। আচ্ছা তোমার মা তোমার জন্য মেয়ে দেখছেনা কেন? মা রা অবশ্য ছেলেদের বিয়েই দিতে চায় না। পাছে হাত ছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু তুমি নিজে তো দেখতে পার। এবার একটা ভালো ভদ্র মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেল। আমার মতন বেয়াড়া ধিঙ্গি নয়! মিষ্টি সংসারী টাইপ। আচ্ছা তোমার গানের কি খবর ? একদম ক্লসড চ্যাপ্টার ? আমিও শুরু করেছি। তবে গান নয়। কবিতা। ইংলিশে। কিছুতো একটা করতে হবে। কিছুদিন না ছবি আকার ট্রাই করলাম। হলোনা। এখন কবিতা জাস্ট সময় কাটানোর জন্য। বিশ্বাস কর ন্যাবা আমার একদম সময় কাটে না। নিজের ঘরে বন্দি হয়ে বসে বসে খালি গাজা খাই আর ঘুমের ওষুধ খাই। রাইট নাউ , আই অ্যাম আউট। তাই কি লিখছি নিজেই জানি না। তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। ন্যাবা যদি পার তো আমাকে এখান থেকে নিয়ে জাও। না হলে কে জানে কি হয়ে যাবে। পারবে? আমাকে নিয়ে যেতে ? আমাকে বিয়ে করবে? ন্যাবা

জঈতা,
তোমার চিঠি পেয়েছি গতকাল। একবার নয়। বহু বহুবার পরেছি। যদি নেশার ঘোরে লিখে থাকো তাহলে নেশা কেটে গেলে আফসোস করবে। কারণ আমি মন ঠিক করে ফেলেছি। হ্যাঁ , আমি তোমাকে বিয়ে করব। বাড়িতে কিচ্ছু বলিনি। তোমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
পুনশ্চঃ পারলে তোমার একটা ছবি পাঠিয়ো। পোস্ট কার্ড সাইজ।

ন্যাবা,
কয়েক ঘণ্টা আগেই তোমার চিঠি পেয়েছি। কি লিখবো, কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। কান্না পাচ্ছে। এখন কাঁদছি। এত দিন ধরে ভিতরে ভিতরে ভীষণ চেয়েছিলাম তুমি আমাকে প্রপোস করবে। করলে, তাও এত দেরি করে করলে কেন? তাও আবার আমি বলার পর করলে। যাই হোক যখন করেই ফেলেছ, আর কিন্তু পালাতে পারবেনা। Please come to Delhi as soon as possible. I will settle everything. সব কিছু ঠিক করে ফেলবো। ইন ফ্যাক্ট আব্বাকেও সব খুলে বলবো। আব্বা বাধা দিলে থোড়াই কেয়ার করি। কাকু is very sweet. he will help me. তুমি যেভাবেই হোক সাত দিনের মধ্যে দিল্লিতে চলে এসো। সব পাকা হয়ে যাবে। রাজধানী ধরে চলে এসো। অই কমলা এজেন্সিতে রেজিগ্নেশন জমা দিয়ে চলে এসো কিন্তু। আমি সাউথ এক্সটেনশনে একটা ছট্ট-খাট্ট এপার্টমেন্টের ব্যাবস্থা করছি। কাকুর একটা ফ্লাট আছে। জাস্ট পরে আছে। প্লিজ হারি … প্লিজ প্লিজ প্লিজ। কবে আসছো জানাও। চিঠি নয় টেলিফোন করে। ফাস্ট। তোমার ক্লাসের সেই বিগ ফ্যাট স্নব জয়ী।

প্রিয় জয়িতা,
গতকাল সকালে তোমার চিঠি পেয়েছি। এখন রাত বারোটা। দুদিন অফিস যাইনি। সারাদিন ধরে ভেবেছি। একবার ভেবেছিলাম তোমার চিঠির উত্তর দেবোনা। কিন্তু তারপর মনে হল একদিন সময় মত প্রপোস করতে পারিনি। এখন অন্তত ঠিক সময় সত্যি কথাটা বলে ফেলা উচিত। না জয়ীতা আমি কলকাতা ছেড়ে গিয়ে দিল্লিতে থাকতে পারবনা। এ কারণেই তোমার কাকুর দেয়া হিন্দুস্তান থমসনের চাকরিটা আমি নিতে পারছিনা। জানি তুমি রাগ করবে। রাগের ঘোরে একটু বেশি গাজা, সিগারেট, মদ খেয়ে ফেলবে। কিন্তু এও জানি সে নেশা কেটে যাবে। তখন বুঝতে পারবে কেন আমি পিছিয়ে পরছি। আসলে আমি ব্যাসিক্যালি ছাপোষা , ভীষণভাবে মধ্যবিত্ত জানো। তাই আমার এই ছাপোষা মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট আমি ছাড়তে পারলাম না। আমার যা কিছু পাওয়ার, সবই তো এই ছাপোষা পরিবেশ থেকে পাওয়া। আমার মানিকতলার নোনা ধরা বাড়ির দেয়াল, স্যাঁতস্যাঁতে কলতলা, আমার মায়ের ছেড়া আচলে হলুদের গন্ধ – এসব আমি ছাড়তে পারবোনা।

♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……
আমার রাস্তা আমার বাড়ি আমার ফাটা দেয়াল আমার পোড়া মনের অজস্র জঞ্জাল
ভাংছে কেবল ভাংছে আর যাচ্ছে ক্ষয়ে ক্ষয়ে আমার রাত্রি আমারই সকাল
একই ভাবে ঘামতে ঘামতে মনের ভিতর নামতে নামতে কোন মতে করছি দিনটা পার
চলছে চলবে, চলছে চলবে এই ভাঙ্গাচোরা গল্পটা আমার
নাকে আমার পোড়া পিচের গন্ধ বুকে কালো ধোয়া হাতে পায়ে শুধুই অবক্ষয়
তবুও যে কাশতে কাশতে এখনো যে হাসতে পারি ভালবাসতে নিজের কাছে নিজেরই বিস্ময়
করবো যে আর কত ঘেন্না নিজেই নিজের ছায়াটাকে করবো যে আর কত অপমান
আবার তো সেই আস্ত্রে-পিস্ত্রে জড়িয়ে নিজের নরকটাকে গাইবো আমি ভালবাসার গান
এসো আমার ঘরে একবার, তুমি এসো আমার ঘরে একবার
পার যদি দেখে যেও বেচে থাকে কারে বলে, তুমি এসো আমার শহরে একবার
♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……

আমি এও জানি যে আমার এই ভীষণভাবে আস্ত্রে-পিস্ত্রে জড়িয়ে থাকা পরিবেশের সাথে তুমি পাল্লা দিয়ে চলতে পারবেনা। আমাদের ধর্মটা আলাদা বলে নয়, বিশ্বাস কর , না। আমাদের বড় হয়ে ওঠার মধ্যে একটা বিশাল বড় পার্থক্য আছে। তোমার স্বাধীন থাকার জেহাদ, তোমার উম্মাদনা, উচ্ছলতা, তোমার এক কথায় সব কিছুকে নস্যাৎ করে দেবার ক্ষমতা, আমি শ্রদ্ধা করি জয়িতা। আর করি বলেই তোমার মতন ভীষণ জ্যান্ত একটা মানুষকে আমার এই ছাপোষা গণ্ডির মধ্যে বেধে ফেলতে চাইনা। এতদিন বলা হয়নি, বলার প্রয়োজন পড়েনি। আমার একটা দাদা ছিল জানো , পিসতুতো দাদা। একাত্তর সালে পুলিশরা তাকে তার তালতলা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। ওর কলেজের বন্ধুরা ওকে নাকি কিছু রাজনৈতিক লিফলেট ওর বাড়িতে রাখতে দিয়েছিলো। নিরীহ নিপাট ভালো মানুষ দাদাটা কিচ্ছু না বুঝে লিফলেট গুলো বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশরা ওকে প্রচণ্ড মারে, সপ্তাখানেক আটকে রাখে। তারপর ভুল বুঝলে ছেড়ে দেয়। বাড়ি ফিরে আমার দাদা আর কখনো সোজা হয়ে হাটতে পারেনি। একমাস কোনমতে কুঁজো হয়ে বেচে ছিল, তারপর কিডনি ফেইলার হয়ে মারা যায়। যাই হোক মোদ্দা কথাটা হোল যেটার জন্য এত কিছু বলছি সেটা আমার সেই নিরীহ নিপাট ভালো মানুষ দাদাটা তালতলা থানায় কিন্তু তার বন্ধুদের নাম বলে দেয়নি। আমার সেই দাদাটার কথা আজ খুব মনে পড়ছে, জানো ? আমার ভাবতে ভালো লাগছে সেই মানুষটা আমার দাদা। আর তার সাথে এটাও ভাবতে ভালো লাগছে আমার মতন একটা ক্যাবলা ছাপোষা ছেলে দিল্লির অত বড় চাকরি, সাউথ স্টেশনের ফ্লাট সব কিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার সাহস এখনো রাখে।

♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ ……
পথের ধারে কাচের জারে সোনালি মাছ খেলা করে, বেচে থাকে জীবন্ত কঙ্কাল
পাড়ার মোড়ের সাদাকালো উলঙ্গ সেই শিশুর হাতের পচা ফোলের রঙটা কিন্তু লাল
আমার নাড়ি, আমার বাড়ি, আমার ছাদের হলদে শাড়ি, রঙ চটা সেই ভাতের হাড়িটা
আমার ভালো, আমার খারাপ, আমার পুণ্য, আমার পাপ, আমারই নাম কলকাতা
ভিক্টোরিয়া শহিদ মিনার কোন ইতিহাসের পাটায় চাইলে আমায় খুঁজে পাবেনা
ক্ষুদার্ত মানুষের ভীড়ে কুষ্ঠ রোগীর আস্তাকুরেও চাইলে আমার নেই যে ঠিকানা
পথের ধারে কাচের জারে সোনালি মাছ খেলা করে, উলঙ্গ সেই শিশুর হাতের ফল
বেচে থাকার জন্য যাবতীয় স্বপ্নও লাগে আমার বেচে থাকার সম্বল
এসো আমার ঘরে একবার, এসো আমার ঘরে একবার
পার যদি দেখে যেও বেচে থাকে কারে বলে, এসো আমার শহরে একবার
♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫♫ …

 

 

 

 

 

 

 


Spread the love

4 thoughts to “প্রিয় বন্ধু – অঞ্জন দত্ত এবং নিমা খান ( ফুল স্ক্রিপ্ট – Full Script) পার্ট ওয়ান [Part-1]”

  1. ভাইয়া দ্বিতীয় অংশ টা আমার খুব দরকার আছে কি আপনার কাছে?

    1. দুঃখিত ভাইয়া। দ্বিতীয় অংশটা নিয়ে আর কাজ করা হয়নি। সময় পাইনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *