প্রায় তিন রাত্রি কোন ঘুম নেই। আজকে দুপুরে কোন মতে দুই ঘণ্টার একটা ঘুমের মতন কিছু একটা ছিলো। মানুষ খুব বিষাদ প্রিয় একটা প্রাণী। হাজারটা সুখের উপলক্ষ ছেড়ে ছেড়ে সে সুদূর অতীতে ফেলে আসা দুঃখ গুলোকে কে খুজে ফিরে। পুরনো কোন ডাইরির ফাকে থেকে বের করে ভাজ একটা মলিন চিঠি। কে জানে হাজার বার পড়া চিঠি টা আবার কেন তাকে টানে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া কয়েক ফোটা অশ্রুর সাথে তাকে সঙ্গ দেয় দুই আঙ্গুলের ফাকে একটা সিগারেট। হাজারটা সুখের স্মৃতিকে দূরে ঠেলে আপন করে নিতে ইচ্ছে করে সেই দুঃখ টাকে। মাঝ রাতের সুনসান রাস্তায় হেটে বেড়ায় সে। সারা দিনে অসংখ্য যানবাহনের দ্বারা ধর্ষিত রাস্তাকে রাতের বেলা কি শান্তই না দেখায়। সেই রাস্তায় ডিভাইডারের উপর বসে কোন কুকুরকে রুটি খাইয়েছেন ? রুটি শেষ হয়ে গেলেও কিন্তু কুকুরটি আপনাকে ছেড়ে যাবেনা। বসে থাকবে। কুকুরও কি তাহলে কষ্ট কে বুঝতে পারে? কে জানে। সমুদ্রের পাড়ে থাকলে না হয় ঝিনুক কড়াতাম। কিন্তু আমার বাস কনক্রিটের জঙ্গলে। তাই মাঝ রাতে রাস্তায় জ্যোৎস্না কুড়াই। রাস্তার ও কি কষ্ট আছে? হয়তো আছে। এখন আর মাঝ রাতে বের হওয়া হয় না। মা টের পেয়ে গেছে। মেইন দরজা বন্ধ করে চাবি নিয়ে ঘুমাতে যায়। বসে থাকি বারান্দায় নির্বোধের মতন। তোর তো এখন ঠিকই স্বপ্নের মতন সাজানো সংসার। স্বামীর সাথে হানিমুন। সপ্তাহে রুটিন করে দুই দিন বাইরে ঘুরতে যাওয়া। আর আমার জন্য প্রতি সকালে অপেক্ষা করে ব্যার্থতার গ্লানি। আমিও তো চেয়েছিলাম এমন একটা জীবন। আমি পাইনি। কয়েক মুহুর্তের জন্যেও কি আমায় মনে পড়ে না? আচ্ছা এক মুহূর্ত ঠিক কতটা সময়? কে জানে। আমি জানি না। সময় চলে যাচ্ছে খুব দ্রুত। পুরাতন সব স্মৃতি গুলাও এখন ফিকে। বড় কোন চাওয়া নয়, খুব ছোট ছোট স্বপ্নেরা যখন অপূর্ণ থেকে যায় তখন কেমন একটা কষ্ট হয়। বড় বড় মনিষীরা সব সময়েই কষ্টকে অনেক মূল্যবান বলতেন। কখনও বুঝি নাই কেন। এখন বুঝি। সুখের সময়টা হয় ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড এর মতন। রাত শেষ মজাও শেষ। কিন্তু দুঃখ গুলা হয় রত্ন। নির্ঘুম রাতে খুব সুন্দর প্রেয়সীর মতন সঙ্গ দেয়। আবার সকালে চলে যায়। কিন্তু সময় মতন ঠিকই ফিরে আসে।
নির্ঘুম রাতের গল্প
আবার কোন রাতে যদি
বিষাদ ছুয়ে যায়
তখন খুজো না হয় আমায়
ভেজা জোসনায়