মধ্যবিত্তদের জীবনের সব চেয়ে কঠিন আর নির্মম বিষয়টি হোল তাদের প্রতিনিয়ত কোন না কোন ইচ্ছেকে কুরবানি দিতে হয়। আর তারা খুব ভাল ভাবেই হাসি মুখে কাজ টা করে থাকে। কাউকে বুঝতে না দিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাসে কষ্টটা লুকিয়ে ফেলার শিল্পটা একজন মধ্যবিত্তের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। কেউ না। এদের স্বপ্ন গুলাও অনেক ছোট ছোট হয়। তাই হয়তো তারা কখনো বিল গেটস কিংবা স্টিভ জবস হয় না। চাওয়া গুলো ছোট থাকা কি দোষের ? মনে হয় দোষের। বড় কিছু প্রত্যাশা করে না পাওয়ার চেয়ে ছোট কিছু প্রত্যাশা করে না পাওয়া বেশি কষ্টের। কিন্তু ব্লাডি মিডলক্লাসের জীবনে কষ্টের কোন কমতি নাই। তাই গায়ে লাগে না। কখনো কখনো কিছু ইচ্ছেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেই, কখনো পাঠাই নির্বাসনে। কখনো বা নিকোটিনে কালো হয়ে যাওয়া ফুস্ফুসে লুকায় রাখি। ইচ্ছা গুলোও মরে যায় নিকোটিনের বিষে। নিকোটিনের অনেক গুন। আলো সহ্য হয় না এখন একবারেই। অন্ধকার আমাকে ডাকে। সব সময়। মানুষ মরে গেলে তারা হয়ে যায় শুনছিলাম। তবে মধ্যবিত্তেরা মনে হয় মরে যাওয়ার পর ব্লাকহোল হয়। যে মানুষ এক বার শুন্যতার হাত ধরে অনেকটা পথ হেটেছে সে অন্য কারো হাত ধরে বেশি দূর যেতে পারে না। শুন্যতাও একটা উপভোগের বিষয়। বুকের ভিতর চেপে থাকা হাহাকার গুলা নিরবতার মাঝেই শোনা যায়। রাতের তীব্র আলোকসজ্জার পার্টতে না। নিঃশব্দের সুর যার এক বার ভালো লাগে তাকে কি গজলের জলসায় ফেরানো যায়? নিজেকে নিজের ভিতরে নির্বাসনে পাঠায় দিয়ে মুখে একটা কার্টুন মার্কা স্মাইলি দিয়ে রাখার অভ্যাস টা জন্মগত। কিন্তু কতক্ষন চেপে রাখা যায় ? ঠিকই মাঝরাতে ফিরে ফিরে আসে নির্বাসনে পাঠানো কষ্ট গুলো। না এসে যাবেই বা কোথায় ? সারাটা দিন কাটে ব্যার্থতার গ্লানি নিয়ে। আর রাতের বেলায় পুরনো যন্ত্রনার মধুর অত্যাচার। এই ভালো। ঝাপসা চোখে দেখা নিজের পরজিত জীবনটা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা।