frederick forsyth

ফ্রেডরিক ফোরসাইথ

Spread the love

সময়টা ২০০৭ সাল, নিউমার্কেটে বইয়ের দোকানে হটাত একটা বইয়ের চোখ আটকে যায়। ডগস অফ ওয়ার, লেখক ফ্রেডরিক ফোরসাইথ। সামারিতে লিখা ছিলো লেখক নাকি বইটা লেখার জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ করে একদল মার্সেনারি (ভাড়াটে সৈন্য) ভাড়া করে আফ্রিকান একটা ছোট দেশে ক্যু করান। তার উদ্দেশ্য ছিল কিভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় সেটা বুঝা এবং সেটাই তার উপন্যাসের প্লট। বইটা কিনে এনে এক বসায় পড়া শেষ করলাম। কিভাবে এক দল ভাড়াটে সৈন্য আরেকটা দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে সেখানকার সেনাবাহিনীর সাথে গোপন আঁতাত করে একজন একনায়কের পতন ঘটায় তার একটা রুদ্ধশ্বাস উপাখ্যান। লেখক পরিচিতিতে তার আরও কিছু বেস্টসেলার বইয়ের নাম পেলাম। উনার সব চেয়ে বেশি বিক্রিত বই দ্য ডে অফ দ্য জ্যাকল । কয়েকদিন পর The Day of the jackal পরে ফেললাম। একজন ভাড়াটে খুনি একটা কাস্টম মেইড স্নাইপার হাতে কিভাবে ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেয়ার চেষ্টা করে তারই গল্প The Day of the jackal। খুনির সবচেয়ে বড় গুন তার ছদ্মবেশ ধারণ করার ক্ষমতা। জ্যাকেলের অ্যাস্থেটিক মেকআপ আর ভেস বদলের দক্ষতাই ছিল উপন্যাসটির মূল উপজীব্য। গুগলে সার্চ করলে The Day of the jackal এর ৪/৫ টি মুভি আর আর সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া একটা টিভি সিরিজ দেখাবে সবার আগে। বইটার নাম আসবে দ্বিতীয় পেইজে। ভেনিজুয়েলার কুখ্যাত সন্ত্রাসী কার্লোস The Day of the jackal এর মেইন চরিত্র জ্যাকল এর মত ভেস বদল করতে দক্ষ ছিলো। শেষবার ইন্টারপোল যখন কার্লোসের আস্তানায় হানা দিয়েছিলো তখন কার্লোসের ঘর থেকে The Day of the jackal বইটা উদ্ধার করে। তখন থেকে কার্লোস কে ডাকা হত কার্লোস – দ্য জ্যাকাল নামে। ফ্রেডরিক ফোরসাইথ কে চেনার জন্য এই দুইটা উপন্যাস আর সাথে গল্প দুটিই যথেষ্ট। তারপর পড়েছিলাম দ্য আফগান ( এক আন্ডারকভার CIA এজেন্ট যাকে তালেবান রা একটা সুইসাইড হামলার জন্য প্রস্তুত করে), অ্যাভেঞ্জার ( এক আমেরিকান বিলিয়নিয়ার নানা ইরাকে তার নাতি হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভাড়া করে এক মার্সেনারিকে)। ফ্রেডরিক ফোরসাইথ এর লেখা গুলার প্লট এতই বিস্তৃত থাকে যে পড়ার সময় চোখের সামনে জেমস বন্ড কিংবা মিশন ইম্পসিবল সিরিজের কোন সিনেমা চলছে।
এই জুনের ৯ তারিখ ফ্রেডরিক ফোরসাইথ মারা যান। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার কোথাও তার মৃত্যুর খবর সেভাবে চোখে পরলো না। আমার পড়া সব চেয়ে কুল থ্রিলার লেখক ফ্রেডরিক ফোরসাইথ। আফগানিস্থান থেকে শুরু করে লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, রোম তারপর আফ্রিকা, কোথাও তার লেখা একটুও বোরিং লাগবে না। বিদায়, ফ্রেডরিক !

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *