ইলুমিনাটি নামটার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। ড্যান ব্রাউনের অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডেমনস কিংবা দি অ্যারাইভালসের কন্সপাইরেসি থিওরি। এক জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায় চার্চের কাছে নির্যাতিত বিজ্ঞানীদের একটা গোপন সঙ্ঘ গড়ে তোলার ইতিহাস। আবার আরেক কন্সপাইরেসি থিয়োরিস্ট গ্রুপের মোটে ইলুমিনাটি সাক্ষাত শয়তানের উপাসনাকারী সঙ্ঘ। তারাই নিয়ন্ত্রণ করে সারা পৃথিবীর অর্থনীতি আর রাজনীতি। কিন্তু আমরা কয়জন জানি যে ইলুমিনাটির একটা অধ্যায়ের সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের একটি অঞ্চলের নাম। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। নোয়াখালী। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই অজানা কাহিনী।
অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে কিছু ফ্রিমেসন আর বিদ্রোহী ইলুমিনাটি সদস্যের একটা দল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে হাতিয়া দ্বীপ হয়ে বসতির খোজে নোয়াখালী পৌঁছায়। তৎকালীন সেই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছিল ইংরেজ সাহেব লর্ড ব্যালডামরডের কাছে। উনার ডায়ারিতেই এই ইলুমিনাটি আর ফ্রিমেসন হাইব্রিড গ্রুপের বাংলাদেশে উপস্থিতির তথ্য পাওয়া যায়। বলা চলে এই ভারতিয় উপমহাদেশে সেটাই ছিল ইলুমিনাটিদের প্রথম আগমন। যদিও সেটা ছিল একটা বিদ্রোহী গ্রুপ যারা মারা খাওয়ার ভয়ে লুকানোর জন্য এসেছিল। কিন্তু তারা আক্ষরিক অর্থেই ছিল স্যাটানিস্ট ও ইলুমিনাটির দিক্ষায় দীক্ষিত। সে জন্য ইতিহাসবিদরা মনে করেন এটা ভালোই হয়েছিল ইলুমিনাটির জন্য। তারা এখানে এসেই প্রথমে নজরে পরেন কিছু পাদ্রির। নোয়াখালীর জনগণ ইলুমিনাটি সম্পর্কে অবগত না থাকলেও পাদ্রিরা ঠিকই জানতো ইলুমিনাটি সম্পর্কে। কিন্তু খ্রিস্টান পাদ্রি ও তাদের অনুসারীর সংখ্যা অনেক কম ছিল। আর পাদ্রিদের কচি ছেলেদের প্রতি কু-নজর থাকার কারণে অত্র এলাকার সবাই কিছুটা এড়িয়ে চলত তাদের। তাই পাদ্রিরা যখন ইলুমিনাটি আর ফ্রিমেসন দের হাইব্রিড গ্রুপটার সম্পর্কে অবহিত করতে গেলো তখন কেউ তাদের বিশ্বাস করল না । সেই সুযোগে ইলুমিনাটি গ্রুপটি তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করে দিল। তারা নোয়াখালীর মানুষজনকে ব্যাবসা ও জীবনের অন্যান্য ফিল্ডে সফল হবার উপায় শেখাতে থাকে। এই জন্যই আজকের বাংলাদেশে ব্যাবসা সহ বিভিন্ন চাকুরীর ক্ষেত্রে নোয়াখালীর মানুষদের বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। সেই ইলুমিনাটি আর ফ্রিমেসনদের হাইব্রিড গ্রুপটি ছড়িয়ে পরেছিল কুমিল্লা আর চিটাগং এও। তাই নোয়াখালীর পাশাপাশি কুমিল্লা আর চাটগাএর মানুষরাও বাংলাদেশের বাকি অঞ্চলের লোকদের চেয়ে সর্ব ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে। কিন্তু জীবনে উন্নতির জন্য নিজের আত্মাকে শয়তানের চ্যালাদের কাছে শপে দেয়া কতখানি যুক্তিযুক্ত এটা নিয়ে তর্ক থেকেই যায়। যাই হোক লর্ড ব্যালডামরডের ডায়েরি থেকে এর চেয়ে বেশি তথ্য পাওয়া যায় না।